নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলার পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ এর হামলায় ব্যাংক লুট,নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ ও আনসার সদস্যের অস্ত্র লুট এবং ব্যাংক ম্যানেজার অপহরণের পরবর্তীতে এই সংগঠনটির সাথে সকল শান্তি আলোচনা বন্ধ সহ অপতৎপরতা কার্যক্রম নির্মুলে কঠোর অভিযান পরিচালনার ঘোষণা আসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সামরিক বাহিনীর পক্ষ হতে।ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেনা প্রধানকে অভিযান পরিচালনার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ভাবে নির্দেশ প্রদানের বিষয়ে জানিয়েছেন সেনা প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
রবিবার (৭ এপ্রিল) সকাল ১১ টায় বান্দরবান আসেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ,এসবিপি(বার),ওএসপি,এনডিইউ,পিএসপি, পিএইচডি।এসময় সেনা সদরদপ্তরের উর্ধতন সেনা কর্মকর্তা সহ বান্দরবান রিজিয়নের বিভিন্ন বিভাগের উর্ধতন সেনা কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।সেনা জোনে,সেনাবাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে একটি জরুরি বৈঠকের,পর চলমান পরিস্থিতিতে পরবর্তী পদক্ষেপের সার্বিক বিষয়ে নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন,প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ নির্দেশনা অনুযায়ী বর্তমান পরিস্থিতিতে সেনা সদর দপ্তর থেকে যা যা করনিয় সে বিষয়ে বান্দরবানের উর্ধতন সেনা কর্মকর্তাদের সাথে সমন্বয় করার জন্য আমি এসেছি।
এখানের কমান্ডাররা কি করবেন,সে বিষয়েও তাদের সাথে সেনা সদর দপ্তরের সাথে সমন্বয় হয়েছে। পাশাপাশি সেনাবাহিনীর তরফ থেকে আমরা বিজিবি,র্যাব,পুলিশ, আনসার বিডিপির সাথে সহযোগিতার বিষয়েও সমন্বয় হয়েছে,এছাড়া আমাদের পক্ষ থেকে প্রশাসনের বেসামরিক প্রশাসনের সাথে আমরা সমন্বয় করে কাজ করছি। বর্তমানে অপারেশন চলছে এটা সম্মিলিতভাবে চলছে,অভিযানের সফলতার জন্য নিরাপত্তার প্রয়োজনে সকল বিষয়ে আমরা প্রকাশ না করলেও যে টুকু জনসাধারণের জানার প্রয়োজন আমরা তা গণমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করবো।
এসময় তিনি বলেন সংগঠনটির সাথে স্থানীয় প্রশাসনের শান্তি আলোচনা চলছিলো,আলোচনা চলাকালে তাদের বিরুদ্ধে আমরা কোন অভিযান করিনি,তারা দুইবার শান্তি আলোচনায় বসেছে,তৃতীয়বারো বসার কথা বলেছে,তাদের স্টার সানডে তে আমাদের সেনাবাহিনীর পক্ষ হতেও বিভিন্ন গীর্জায় উৎসবে উপহার দেওয়া হয়েছে, আমরা তাদের বিশ্বাস করেছি,তাদের ভিতরের ষড়যন্ত্র আমরা বুঝতে পারিনি।আমার কাছে প্রধানমন্ত্রীর পরিস্কার নির্দেশনা, তিনি বলেছেন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য,জনগনের শান্তির জন্য যা করা দরকার তাই করতে, এবং আমরা সফল হবো বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন যৌথঅভিযান শুরু হয়েছে, ইতিমধ্যে গতকাল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিছু সন্ত্রাসী কে আটক করেছে,অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে,এটা চলমান প্রক্রিয়া।এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সেনাবাহিনী সক্ষম,ইনশাআল্লাহ জনগণের মাঝে শান্তি ফিরে আসবে,জনগণ দেখবে কোন সন্ত্রাসীদের জায়গা বাংলাদেশের মাটিতে নেই।
প্রসঙ্গত পাহাড়ে কেএনএফ এর অপতৎপরতা বন্ধের লক্ষ্যে ২০২৩ সালের ১৮ই জুন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের উদ্যোগে গঠিত হয় শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি এরই প্রেক্ষিতে গত বছরের ৫ই নভেম্বর বান্দরবানের রুমায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টে (কেএনএফ) এর সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির প্রথম মুখোমুখি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং চলতি বছরের ৫ই মার্চ দ্বিতীয়বারের মতো শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সাথে সমঝোতা বৈঠকে বসে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
তবে শান্তিআলোচনা,সমঝোতা হওয়ার পরেও পাহাড়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে নিজেদের বিরত না রেখে একের পর এক হামলা,চাঁদাবাজি,গুম,খুনের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে এই সংগঠনটি।