বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন এবং চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনকে ঘিরে গ্রেপ্তার আতঙ্কে কাটছে দিন চট্টগ্রাম বিএনপির নেতাকর্মী।
দলীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, জানুয়ারি উজ্জীবিত হওয়ার চেষ্টারত নগর বিএনপির হঠাৎ (০২- নভেম্বর) মধ্যরাতে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী সিরাজুল্লাহকে কোতোয়ালী থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর কিংকর্তব্যবিমূঢ় পরিস্থিতি পার করছেন দলটির নগরের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। এমন অবস্থার প্রেক্ষিতে দলটির তৃণমূলের নেতা কর্মীরা মনে করছেন জানুয়ারিকে ঘিরেই ফের শুরু হতে পারে গ্রেপ্তার।
তবে দলটির শীর্ষ নেতারা বলছেন, চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনে একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী থাকলেও কেন্দ্র থেকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা না থাকায় এখনো সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। তবে দলটির ভেতরে বাইরে ইতিমধ্যে গুঞ্জন ছড়িয়েছে এই আসনে থেকে টিকেট পেতে যাচ্ছেন চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান।
এদিকে আগামী ১৩ জানুয়ারি ইভিএমে ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন।ফলে একদিকে উপ-নির্বাচন আর অন্যদিকে দলীয় চেয়্যারপার্সনের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনের বিষয়কে ঘিরে স্নায়ুচাপ বেড়েই চলেছে বিএনপি তৃণমূলে।
আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা আবু-সুফিয়ান বলেন, ‘জনসম্পৃক্ত দল হিসেবেই নির্বাচনের প্রস্তুতি আমাদের সব সময় থাকে। তবে পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকেই শঙ্কায় আছি। জনগণ তাদের রায় জানানোর সুযোগ পায় কী না এ বিষয় নিয়ে!তাই বিএনপি নির্বাচনের যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত থাকলেও তা নির্ভর করছে সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের কর্মকাণ্ডের উপর।
এ নেতা আরো জানান, নির্বাচন-আন্দোলন-সংগঠন আমরা একসাথেই পরিচালনা করছি। তাছাড়া এই আসনের নির্বাচন দিয়ে আমাদের দলীয় সক্ষমতার কোন পরিবর্তন আসবে না কাজেই বেগম জিয়ার মুক্তির আন্দোলনই মূখ্য বিষয়।
তবে জানুয়ারিতেই নির্বাচন এবং আন্দোলনের বিষয়কে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিএনপির রাজনীতির মাঠে শঙ্কার বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শঙ্কা তো আছেই তবে আমরা আশা করছি একটি সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি হবে।
তবে উপ-নির্বাচন এবং আন্দোলনকে ঘিরে জানুয়ারির সময়টাকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখছে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ড. শাহাদাত হোসেন। তার মতে দীর্ঘদিন ধরে আটক-ও গ্রেপ্তারের মধ্যে দিয়ে চলতে থাকা সংগঠনটির গ্রেপ্তার আতঙ্ক বলতে কিছু থাকার কথা নয়। তবে গতকাল মধ্যরাতে গাজী সিরাজউল্লাহর গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গ টানতেই তিনি বলেন, জন সমর্থন হারিয়ে এখন সরকার পুলিশ নির্ভর হয়ে পড়েছে। যে কারণে রাষ্ট্র এখন পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়ে গেছে, পুলিশ যা ইচ্ছে তাই করছে। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন সংগ্রামের ভয়ে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। অথচ আন্দোলন সংগ্রাম তো ঢাকায় হচ্ছে চট্টগ্রামে এই (গ্রেপ্তার) করার কোন যৌক্তিকতা নাই বলে মনে করেন এ নেতা।