নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি: মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সে দেশের সেনাবাহিনীর সঙ্গে স্বাধীনতা কামী আরকান বিদ্রোহীদের তুমুল সংঘর্ষে ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ১৭৭ জন সদস্য ও ২জন দোভাষী
এসব সদস্যদের আশ্রয় দেওয়া হলো ১১, বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন সদরের (বিজিবি) ক্যাম্প সংলগ্ন বর্ডার গার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
সরজমিনে গিয়ে জানাযায়, গত সোমবার (১১ মার্চ) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মিয়ানমারের বিজিপির মোট ১৭৭জন সদস্যসহ ২ জন দোভাষী নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের আশারতলী গ্রামের জামছড়ি সীমান্ত দিয়ে এসে আশ্রয় নেয় । এসব বিজিপি সদস্যদেরকে নিরস্ত্র করে রাতে নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়।
তবে এসব আশ্রয় নেওয়া বিজিপির সদস্যদের পরবর্তীতে কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে এ বিষয়ে এখনো জানা যায়নি।
আশ্রয় নেওয়া বিজিপির সদস্যের মধ্যে একজন গুলিবিদ্ধ ও একজন আহত রয়েছে। তাদের বিজিবির তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দিচ্ছে। এছাড়া অন্যান্যদের খাদ্যসহ অন্যান্য সহায়তা দিচ্ছে বিজিবি স্থানীয়রা জানান, সীমান্তের ৪৬ নম্বর সীমান্ত পিলার এলাকার জামছড়ি দিয়ে সকালে ২৯ জন বিজিপি সদস্য প্রবেশ করে। তাদের নিরস্ত্র করে নিরাপদ জায়গায় রাখা হয়েছিলো । পরে রাতে নতুন করে আরো ১৫০ জন সদস্য প্রবেশ করে। এদের মধ্যে একজন গুলিবিদ্ধ ও একজন আহত রয়েছে।
অন্যদিকে, ১১ মার্চ সোমবার সকাল থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সেদেশের বিদ্রোহী গোষ্ঠী সাথে তুমুল যুদ্ধের গোলাগুলিতে একটি বুলেট ছুড়ে এসে পড়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরে।
সে সময় গুরুত্বর আঘাত হানে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার ছাবের আহামেদের কোমরে । তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত কক্সবাজার সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । সেখানে অস্ত্রপাচারের(অপারেশন) মাধ্যমে কোমরে আঘাত করা বুলেটটি বের করা হয়েছে বলে তার পরিবারের সদস্যরা নিশ্চিত করেছেন।
১১ মার্চ সোমবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সে সময় তিনি জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়নের (১১ বিজিবি) দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকা দিয়ে এখন পর্যন্ত মায়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির ১৭৭ জন সদস্যসহ ২জন দোভাষী বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন।
১২ মার্চ সকালে ২জন দোভাষী কে জামছড়ি সীমান্ত দিয়ে পুশ ব্যাক করা হয়েছে।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক মো. মুজাহিদ উদ্দিন বলেন, গত কাল সকালে ২৯ জন ও রাতে ১৫০ জন মিলে সর্বমোট ১৭৯ জনকে নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে’ রাখা হয়েছে। বর্তমানে পরিচয় সনাক্তকরণ কাজ চলছে। আন্ত মন্ত্রনালয়ের বৈঠকের পর পরবর্তী সিদ্বান্ত মোতাবেক কার্যক্রম চলবে।
এছাড়া ১৭৯ জনকে সংকুলান হওয়ায় একই স্থানে অস্থায়ী আশ্রয় হিসেবে রাখা হয়েছে । তবে শিক্ষার যেন ব্যাঘাত না ঘটে এমন কোনো স্থানে না রাখতে তিনি নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) নির্দেশ দিয়েছেন। যাবতীয় প্রক্রিয়ার পর আগের মতো তাঁদের ফেরত পাঠানো হবে।
উল্লেখ্য এর আগে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাতের জেরে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সেনাসহ ৩৩০ জনকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত পাঠানো হয়।