Logo
বাংলাদেশ[bangla_day] , [english_date]
  1. অনিয়ম
  2. অপরাধ
  3. অপহরণ
  4. অর্থনীতি
  5. আইন শৃঙ্খলা
  6. আইন-আদালত
  7. আওয়ামীলীগ
  8. আন্তর্জাতিক
  9. আলীকদম
  10. ইতিহাস ও গল্প

কাপ্তাই-রাঙ্গামাটি সংযোগ সড়কে আতঙ্কের আরেক নাম বন্য হাতি

প্রাইম তঞ্চঙ্গ্যা
আপডেট : December 23, 2025
Link Copied!

বান্দরবান প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশের নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি। এই পার্বত্য অঞ্চলে বনায়ন অঞ্চল সব থেকে বেশি । সেই সাথে এখানে আছে নানা রকমের বন্য প্রাণীর আবাসস্থল। তার মধ্যে বন্য হাতি অন্যতম ও বিলুপ্ত প্রায় প্রাণী। বিগত অনেক বছর ধরে চলমান বনভূমি উজাড়, বসতি স্থাপন ও বিভিন্ন সড়ক সম্প্রসারণের ফলে হাতিদের খাবার, আবাসস্থল সেই সাথে চলাচলের পথ সংকুচিত হয়ে পড়েছে। ফলে খাবার ও নিরাপদ আবাসস্থল সন্ধানে তারা বাধ্য হয়ে সড়কে নেমে আসছে।

বিশেষ করে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই সড়কে ভোর , সন্ধ্যা ও গভীর রাতে পাহাড়ি বনসংলগ্ন এই সড়ক গুলোতে মাঝেমধ্যেই বন্য হাতির দল আনাগোনা দেখা মেলে। এই সড়ক গুলোতে হঠাৎ করে হাতির উপস্থিতিতে যাতায়াতকারীদের সৃষ্টি হচ্ছে আতঙ্ক । চলাচলরত যানবাহন থেমে যাচ্ছে , পথচারীরা পড়ছেন বিপাকে। আর যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়ে ভয়ে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাপ্তাইয়ের বনাঞ্চলে ঘেঁষা কয়েকটি এলাকায় বেশির ভাগ দীর্ঘদিন ধরে বন্য হাতির স্বাভাবিক বিচরণক্ষেত্র রয়েছে ।

কাপ্তাই সড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী সিএনজি চালক মহিউদ্দিন বলেন, “ হঠাৎ সামনে হাতির দল চলে এলে গাড়ি থামানো ছাড়া উপায় থাকে না। আর সেই সাথে তাদের আক্রমণের ভয় তো আছেই। রাতে তো পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।”

অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দা নিরঞ্জন তঞ্চঙ্গ্যা জানান, হাতির দল লোকালয়ে ঢুকে পড়লে ফসলের ক্ষতি হয়, অনেক সময় জীবনহানির ঝুঁকিও তৈরি হয়।

বিগত বন বিভাগ ও স্থানীয় তথ্য অনুযায়ী, বন্য হাতির কবলে পরে গত দুই বছরে ৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হন কয়েকজন।

বন্য হাতি নিয়ে ভয়-আতঙ্ক থাকলেও অন্য দিকে বন্য হাতি রক্ষায় নানা উদ্যোগ নিয়ে কার্যক্রম চলমান রেখেছে বন বিভাগ।

বন বিভাগের রেঞ্জার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “বন্য হাতির মতোই এই রেঞ্জের বনে আরও নানান বিলুপ্ত প্রায় প্রাণী আছে। সজারু,ভাল্লুক,ধনেশ পাখি,অজগর,হরিণ,বানর ইত্যাদি,এগুলো আমাদের জাতীয় সম্পদ। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি মানুষের জানমালের সুরক্ষাও আমাদের দায়িত্ব।” তিনি আরও জানান, বর্তমানে হাতির সংখ্যা ৪১ টি যা আগের তুলনায় বেড়েছে। হাতির চলাচলের করিডর চিহ্নিত করা, সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড স্থাপন,স্থানীয়দের সচেতন করা যাতে লোকালয়ে হাতি আসলে হাতিদের আঘাত বা কোনো ক্ষতি না করে ভয় দেখিয়ে পালাতে দেয়া এবং রাতের বেলায় নজরদারি বাড়ানোর মতো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এবং বন্য হাতির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত দের সাহায্য এবং ক্ষতি পূরণ প্রদান করা থেকে সেই সব কার্যক্রম চলমান রেখেছে। একই সঙ্গে হাতির প্রাকৃতিক আবাস রক্ষা ও পুনরুদ্ধারে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের তাগিদ জোরদার দাবি জানিয়ে লড়ে যাচ্ছেন দেশের পরিবেশবিদরা।

বন বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষ ও বন্য প্রাণীর দ্বন্দ্ব কমাতে হলে উন্নয়ন পরিকল্পনার সঙ্গে পরিবেশ সংরক্ষণকে সমান গুরুত্ব দিতে হবে। না হলে কাপ্তাই সড়কের মতো এলাকায় বন্য হাতির আনাগোনা ও মানুষের আতঙ্ক—দুটোই আরও বাড়বে।

বিগত বছর গুলোতে কাপ্তাই সড়কে চলাচলকারীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছেন প্রশাসন। পাশাপাশি বন্য হাতি সংরক্ষণ ও মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমন্বিত উদ্যোগের দাবি উঠেছে পরিবেশ ও মানবাধিকার কর্মীদের সর্বমহলে।

আরো পড়ুন→শীতকাল মানেই পর্যটকদের স্বর্গ বান্দরবান