নিজস্ব প্রতিবেদকঃবান্দরবানে সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউট এর ব্যবস্থাপনায় ম্রো সম্প্রদায়ের শস্যপূজা ও লোকসাংস্কৃতিক অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণত মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে জুমচাষের জন্য জঙ্গলকাটা শুরু হয়। জঙ্গলকাটার আগেই জুমিয়াদের বিশ্বাস অনুযায়ী জুমের দেবতার উদ্দেশ্যে সম্মান জানানো হয়।করা হয় পূজার মাধ্যমে প্রার্থনা। তবে পাহাড়ে ১১ ক্ষুদ্র – নৃগোষ্ঠীর লোকজন এ শস্যপূজা একেকভাবে পালন করে থাকে।
বৃহস্পতিবার (২৯ফেব্রুয়ারী) সকালে বান্দরবান জেলা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে চিম্বুক পাহাড়ে ম্রোলং পাড়ায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শুরুতে জুমচাষের শস্যপূজা প্রার্থনার করা হয়। প্রদর্শন করা হয় ঐতিহ্যবাহী কয়েকটি খেলাধুলা। এরপর লোকসঙ্গীত ও লোকনৃত্য পরিবেশন করে ম্রো শিল্পী গোষ্ঠীর সদস্যরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব মো.আতাউর রহমান বলেন, অনেক সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে। এখনও পাহাড়ে এ ধরণের সংস্কৃতি চর্চা রয়েছে এটা সবার জন্য আনন্দের বিষয়। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউ এ ধরণের সংস্কৃতি চর্চা করে যাচ্ছে।আমি নিজেই এ ধরণের অনুষ্ঠান এভাবে সরাসরি দেখার সুযোগ হয়নি। এদেশের বিভিন্ন জাতিসত্ত্বার বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি তুলে ধরার জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ও কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন,সমতলের পাশাপাশি পার্বত্য এলাকার ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের ভাষা,সংস্কৃতিক ও ঐতিহ্য রক্ষার জন্য বাংলাদেশ সরকার ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।এরই ধারাবাহিকতায় বান্দরবানের বিভিন্ন নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য ও ভাষা সংরক্ষণে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউট গবেষণার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে।এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি লাভ করবে এবং যেসব ভাষা বা সংস্কৃতি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে সেগুলো ধরে রাখা সম্ভব হবে।
জেলা পরিষদের সদস্য সিঅং খুমীর সভাপতিত্বে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটের সহকারী পরিচালক লীলা মুরুং এর উপস্থাপনায় অনুষ্টানে আরও উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মঙ্গল কুমার চাকমা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটের (কেএসআই) পরিচালক মংনুচিং মারমা, পাবর্ত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের গবেষণা কর্মকর্তা কাইংওয়াই ম্রো প্রমুখ। অনুষ্ঠানে চিম্বুক পাহাড়ের কয়েকটি পাড়ার ম্রো বাসিন্দা অংশ নেন।
মূলত, জুমের নতুন ফসল ও আগামী জুমের ফলন ভালো হওয়ার জন্য দেবদেবীর উদ্দেশ্যে ম্রো সম্প্রদায়ের লোকেরা এই চাময় অনুষ্ঠানটি করে থাকে।