নিজস্ব প্রতিবেদকঃবান্দরবান লামা বনবিভাগের একটি দল দুর্গম এলাকায় বনে অবৈধ কাঠ পাচার কারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে,গাছ টানা কাজে ব্যবহৃত একটি হাতিকে এলাকাবাসী আটক করে বনবিভাগে সোর্পদ করেছে।
শনিবার(২৩মার্চ)সকালে উপজেলা সরই ইউনিয়নের দুর্গম এলাকা লেমুপালং খাল ও শিলাঝিরি এলাকায় অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে কাঠ পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি পোষা হাতি আটক করেছে বন বিভাগ।এ সময় আটক হাতির মাহুত সহ বিভিন্ন প্রজাতির ৬০০ ঘনফুট কাঠও জব্দ করা হয়।এবিষয়ে গত ১৯মার্চ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে লামা বনবিভাগের ডলুছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা রেজাউল ইসলামের নেতৃত্বে বনবিভাগের এই অভিযান পরিচালনা করে।আটক হাতিটি সিলেট জেলার মোমিন কোম্পানীর বলে জানান বন কর্মকর্তারা।
জেলা শহর থেকে প্রায় ৭০কিলোমিটার দুরে সরই ইউনিয়ন ৯নম্বর ওয়ার্ড লেমু পালং মৌজার লাংগি পাড়া,বাক্কা পাড়া,পুরাতন দেওয়ান পাড়াও নতুন দেওয়ান পাড়া এলাকায় পাড়াগুলোর পাশ দিয়ে বয়ে চলা পালং খাল ও শিলাঝিড়ি এলাকার বনাঞ্চল থেকে তিনমাস ধরে হাতি দিয়ে অবাদে বনজ গাছ কেটে পাচার করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছিল প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে (জানুয়ারী থেকে মে মাস) পানি কমে গেলে এই খাল ও ঝিড়ির উপর দিয়ে হাতি দিয়ে বনের গাছ টানা হয়। সব বড় বড় গাছ স্টক করে রাখা হয় পালংখাল ও শিলা ঝিড়ির মূখে।
এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন মোরশেদ আলম চোধুরী এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন তিনি সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক তার ভয়ে এলাকার কোন মানুষ প্রতিবাদ করতে পারেনা।লেমু পালং খাল ও শিল ঝিড়ি এলাকার বিভিন্ন স্থানে দুইশতাধিক গাছ স্টক করা আছে। গাছগুলো একেকটির গোলাকার তিন থেকে পাঁচ ফুট আর দৈর্ঘ বিশ ফুট থেকে পঞ্চাশ ফুট।দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার সরই ও গজালিয়া -এ দুই ইউনিয়নের মঝামাঝি লেলুপালং এলাকার পাহাড়ে শ্রমিক লাগিয়ে বড় বড় আকারের গাছ কেটে হাতি দিয়ে পরিবহনের পর লোকালয়ে নিয়ে অবৈধভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করে আসছেন মোরশেদ আলম চৌধুরী ও তার ম্যানেজার মো. রফিক।
পাড়াবাসীর অভিযোগ পাঁচ ভাগের একভাগ স্টক আছে। পাড়াবাসীর হিসাব মতে তাহলে প্রতিবছর জানুয়ারী থেকে মে মাস পর্যন্ত (বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত) প্রায় প্রতি বছর প্রায় ১৩শগাছ কেটে পাঁচ হাজার ঘনফুটের অধিক গাছ পাচার করা হয়।বনের গাছগুলোর মধ্যে চাম্পাফুল,জারুল,কড়ই গাছ,গোদা গাছ,গুটগুটিয়া গাছ,জলপাই,চাপালিশ, হারগাছা,গর্জন,গামারী,সেগুন,রংগাছ সহ বনাঞ্চলের সব গাছ পাচার করা হচ্ছে লামা উপজেলা সরই ইউনিয়নের ক্যজু পাড়া হতে লোহাগাড়া আমিরাবাদ সড়ক হয়ে।
অভিযোগের বিষয়ে কাঠ ব্যবসায়ী আওয়ামী লীগ নেতা মোরশেদ আলম চৌধুরী বলেন, যে গাছগুলো আপনারা দেখেছেন, সেগুলো আমার না ও হাতিও না।হাতি দিয়ে বনের গাছ টানার কথা সরাসরি অস্বীকার করেছেন তিনি।
স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক বেলালের নির্দেশনায় লামা সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা একেএম আতা এলাহি ও ডলুছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা একেএম রেজাউল ইসলামের নেতৃত্বে সঙ্গীয় সদস্যরা শনিবার সকাল থেকে দুপুরে পর্যন্ত লেমুপালং এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় অবৈধভাবে কাঠ পরিবহন কাজে ব্যবহৃত মাহুত সহ একটি হাতি আটক ও গর্জন, শিউলী, লালীসহ বিভিন্ন প্রজাতির কাঠ জব্দ করেন বন বিভাগ কর্মকর্তারা।
এব্যাপারে লামা বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা(ডিএফও) মোঃ আরিফুল হক বেলাল বলেন,অবৈধভাবে কাঠ পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত পোষা হাতির মালিকের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন,২০১২ এর অধীনে ও কাঠ পাচার কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে ফরেস্ট ট্রানজিট রুল্স ১৯৭৩ এর অধীনে মামলার প্রস্তুতি চলছে।অবৈধভাবে কাঠ পাচার রোধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।