বান্দরবান জেলা থেকে ‘পার্বত্য বৌদ্ধ তীর্থ ভ্রমণ” নামক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পূর্ণ লাভের মানসে ৫৯ জন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পুরুষ ও নারী তীর্থ ভ্রমণে ভারত যাত্রা।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) প্রতি বছরে মতো এ বছরও ‘পার্বত্য বৌদ্ধ তীর্থ ভ্রমণ’ নামক প্রতিষ্টানের মাধ্যমে, তীর্থ ভ্রমণে বান্দরবান থেকে ভারতে যাত্রা করলেন, ৫৯ জন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পুরুষ ও নারী তীর্থ যাত্রী।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মতে,মহাকারুণিক তথাগত গৌতম বুদ্ধের আবির্ভাব ঘটে খৃষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে। ঐ সময় হতে আরম্ভ করে খৃষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত বৌদ্ধ দর্শনের ক্রমবিকাশ ঘটে। বৌদ্ধ কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য মানব সভ্যতার ইতিহাসে একটি বিরাট সম্পদ। বিশ্বের মধ্যে ভারতভূমি একটি বিচিত্র শিক্ষা, সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিক ধ্যান সাধনার দেশ।
মহাকারুণিক তথাগত গৌতম বুদ্ধ সুদীর্ঘ ৪৫ বছর ধর্ম প্রচারকালীন সময়ে ভারতের নানা স্থানে বর্ষাবাস যাপন, যাত্রা বিরতি এবং ধর্মোপদেশ প্রদান করেছিলেন। সেই সমস্ত পবিত্র বুদ্ধভূমিকে তীর্থস্থান হিসেবে বিবেচিত করে থাকে বান্দরবান থেকে ভারতে তীর্থ ভ্রমণ ৫৯ জন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী।
প্রতিবছর পৃথিবীর অন্যান্য দেশের বুদ্ধানুরাগী ভক্ত ছাড়াও বাংলাদেশী বৌদ্ধরাও কাতারে কাতারে পবিত্র বুদ্ধভূমি ভারতবর্ষে ঐকান্তিক শ্রদ্ধা সমর্পণের জন্য ভ্রমণ করে থাকেন। তীর্থভ্রমণে পুণ্যলাভের পাশাপাশি ভৌগলিক জ্ঞান ও আনন্দ লাভ হয় বলে মনে করেন ধর্মাবলম্বী’রা।
উল্লেখযোগ্য তীর্থস্থান সমূহের মধ্যে, লুম্বিনী, বুদ্ধগয়া, সারনাথ, কুশীনগর, রাজগীর, নালন্দা, শ্রাবস্তী, বৈশালী, কৌসম্বী, কপিলাবস্তু, সাংকাশ্য নগর প্রভৃতি । বৌদ্ধ তীর্থ স্থান ছাড়াও বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান সমূহের মধ্যে কুতুব মিনার, আগ্রা তাজমহল, যাদুঘর, পাতাল রেল, চিড়িয়াখানা, ভিক্টোরিয়া পার্ক ইত্যাদি রয়েছে।
‘পার্বত্য বৌদ্ধ তীর্থ ভ্রমণ’ প্রতিষ্ঠাতা,সার্জন্ট (অব:) মংহাইনু মারমা বলেন,আমি সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর থেকে প্রতিবছর অল্প খরছে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে বুদ্ধানুরাগীদের পবিত্র বুদ্ধভূমি ভারতবর্ষে ঐকান্তিক শ্রদ্ধা সমর্পণের জন্য ভ্রমণে নিয়ে যাই। এবার আমার দলে ৫৯ জন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পুরুষ ও নারী তীর্থ যাত্রী নিয়ে ভারত ভ্রমণে যাচ্ছি। বুদ্ধগয়া,কলকাতা,বারনসি শারনাথ,সাংকাইশ্যা নগর,শ্রাবস্তী,বৈশালী,লুম্বিনী, নেপাল, কপিলাবস্তু, রাজগীরি,আগ্রা,দিল্লী, দার্জিলিং ২৪ দিনের সফর।
সর্বোপরি বুদ্ধের ধর্ম ও দর্শন সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান না থাকলে তীর্থ দর্শনে পরিতৃপ্তি পাওয়া যায় না। কোথায় কি আছে? কোন স্থানের কি মাহাত্ম্য? এসব কিছুই উপলব্ধি করতে না পারলে অন্ধের হাতি দর্শনের মতো অতৃপ্ত বাসনা থেকে যাবে। তাই তীর্থ যাত্রীদের উচিত ভ্রমণের পূর্বে উক্ত তীর্থস্থান ও ঐতিহাসিক স্থান সমূহের গুরুত্ব অনুধাবন করে ভ্রমণ করা। আমাদের দেশ থেকে তীর্থ যাত্রীদের সুবিধার্থে বিভিন্ন তীর্থ ভ্রমণ,ট্রাভেলস পরিক্রমা নামে বিভিন্ন সেবামূলক সংগঠন কাজ করে থাকে। আমার প্রতিষ্ঠানও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান।