ঐতিহাসিক পার্বত্য শান্তিচুক্তির বাইশ বছর পূর্তি উপলক্ষে বান্দরবান জেলায় সকল রকম কর্মসূচির বর্জন করেছেন পার্বত্য শান্তি চুক্তির মূলপক্ষ পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস)।
২ ডিসেম্বর, সোমবার, প্রতিবছরই এই দিনে আঞ্চলিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি(জেএসএস) দিবসটি উপলক্ষে বান্দরবানে নানা কর্মসূচির আয়োজন করে থাকেন। জেলা ও উপজেলায় শোভাযাত্রা,আলোচনাসভা সহ নানা আয়োজন করা হলে ও এবছর নীরব প্রতিবাদ এবং বর্জন করবে সকল কর্মসুচি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস)বান্দরবান জেলার সাধারণ সম্পাদক ক্যবামং মার্মা মুটোফোনে পাহাড় কন্ঠ কে জানান,গত এক বছর ধরে মামলামোকদ্দমা সহ তাদের উপর রাজনৈতিক দমন পীড়ন চলছে,ইতিমধ্যে একাদিক মামলায় জেল খেটে জামিন রয়েছেন নেতাদের আনেকে। মামলা আতংকে আনেক নেতাকর্মী পালিয়ে বেড়াচ্ছে এই অবস্থায় নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে শান্তি চুক্তির কর্মসূচিতে জেএসএস অংশ নিচ্ছেনা এবং তাদের পক্ষ থেকে বান্দরবান জেলার কোথাও কোন অনুষ্ঠানের কর্মসূচি পালন করা হবে না বলে জানান তিনি।
এবিষয়ে পাহাড় কন্ঠকে বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসলাম বেবী জানান,ঐতিহাসিক পার্বত্য শান্তিচুক্তির বাইশ বছর পূর্তি উপলক্ষে আওয়ামীলীগ দলীয় ভাবে কোন কর্মসূচি পালন না করলেও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসন এবং সেনাবাহিনী দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচী আয়োজন করছেন আমরা যেহেতু সরকারে আছি সরকারি সকল কর্মসূচির সাথে একাত্মতা থাকবে। তিনি আরো জানান,পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি(জেএসএস) কেন সকল কর্মসূচি বর্জন করেছে তা আমার জানা নেই।
এদিকে বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো:শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান,ঐতিহাসিক পার্বত্য শান্তিচুক্তির বাইশ বছর পূর্তি উপলক্ষে বান্দরবানের আঞ্চলিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি(জেএসএস) প্রতিবছর অনুমতি নিয়ে নানা কর্মসুচি উদযাপন করলে ও এবছর কোন কর্মসূচি অনুমতির আবেদন করেনি। তিনি বলেন,নাগরিক সমাজের ব্যানারে একটি সংগঠন কর্মসূচীটি পালন করবেন শুনেছি তবে এখন এ বিষয়ে আমার কাছে অনুমতির আবেদন আসেনি।
প্রসঙ্গত:পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিনের সশস্ত্র সংগ্রাম,রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বন্ধে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সম্পাদিত হয় শান্তি চুক্তি। স্বায়ত্তশাসনের দাবীতে,সশস্ত্র সংগ্রাম লিপ্ত,তৎকালীন সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনী (জনসংহতি সমিতি) সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বরে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই চুক্তি স্বাক্ষর করে ।এতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং শান্তি বাহিনীর পক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নেতা সন্তু লারমা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)১৯৯৭ সনের পর এই প্রথমবারের মতো চুক্তির পক্ষে সকল কর্মসূচি পালন থেকে বিরত থাকছেন।