থানচি প্রতিনিধি: বান্দরবানের থানচিতে সাঙ্গু নদী থেকে অবৈধভাবে মেশিন বসিয়ে হাজার হাজার ঘনফুট বালি উত্তোলন করছে প্রভাবশালী একটি চক্র। বালি খেকোদের দখলে সাঙ্গু নদীচর, কোনোরকম সরকারি ইজারা ছাড়াই বালিখেকোরা প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতি করে চলছে অবৈধ বালি উত্তোলনের মহোৎসব।
সাঙ্গু নদী থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার ঘনফুট বালি ট্রাক যোগে বিক্রির উদ্দেশ্যে পাচার করা হচ্ছে। এতে করে লাভবান হচ্ছেন বালি খেকোরা আর ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদী তীরের ফসলি জমিগুলো। থানচি উপজেলায় বলিপাড়া ইউনিয়নের কনজৈ পাড়া এলাকায় অক-থাইক্ষ্যং নামক স্থানে সাঙ্গু নদী তীরে অবৈধভাবে মেশিন দিয়ে বালি উত্তোলন করছে। অবৈধভাবে বালি উত্তোলনে প্রভাবশালী চক্র হওয়ায় অসহায় এলাকাবাসী। ফলে কোনোভাবেই সাঙ্গু নদী থেকে বালি উত্তোলন ও বিক্রি বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন- স্থানীয় বাসিন্দারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কনজৈ পাড়ার এক বাসিন্দা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার বালি উত্তোলনের সাথে জড়িত। তাদের অধীনে ৪ জন শ্রমিক মেশিনে সাহায্যে বালি উত্তোলনের কাজ করছে। দিনভর বিরতিহীনভাবে বালি উত্তোলন করেন শ্রমিকরা। সন্ধ্যায় কিংবা রাতে আন্ধারে উত্তোলিত শত শত ঘন ফুট বালি ট্রাকের ভর্তি করে বিক্রির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন স্থানের নিয়ে যাওয়ার হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বলিপাড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড কনজৈ পাড়া পার্শ্ববর্তী থাইংক্ষ্যং মুখ এলাকায় সাঙ্গু নদী থেকে ২৪হর্স ক্ষমতা সম্পন্ন মেশিনে ১০ ইঞ্চি পাইপ এর মাধ্যমে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। হাজার হাজার ঘন ফুটের ২টি বালির স্তুপ করা হয়েছে। কনজৈ পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানা ঘেঁষে গাড়ীর রাস্তা করে বালি আনা নেয়া করা হচ্ছে । যার কারণে বর্ষার মৌসুমে স্কুলের অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই বালি কে বা কারা উত্তোলন করেছেন জানতে চাইলে জমির মালিক আপ্রুসে মারমা “পাহাড় কণ্ঠ ডটকম” কে বলেন, সাঙ্গু নদী হতে এই বালি উত্তোলনকারীদের নাম ও পরিচয় বলা যাবেনা, কারন তারা এই এলাকার জনপ্রতিনিধি চেয়ারম্যান ও মেম্বার। তারা সাঙ্গু নদী হতে বালি উত্তোলনের আগে আমার জমি ব্যবহার করার অনুমতি চাইতে আসে। আমি তাদের আমার জমি ব্যবহার করার অনুমতি দিতে অস্বীকার করলে, বিনিময়ের কিছু টাকা পয়সা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এক প্রকার জোর করে আমার জমির উপর তারা বালির স্তূপ বসিয়ে দেয়। এখন তারা টাকা পয়সা ও দিচ্ছে না, আমার জমি ও খালি করে দিচ্ছে না। আমি চাষাবাদ করতেও পারছিনা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন জানান, বালু উত্তোলন করা নিষিদ্ধ। যদি কেউ বিক্রির উদ্দেশ্যে বালি উত্তোলণ করে থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।