রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫:০৩ অপরাহ্ন
প্রধান সংবাদ :
মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ধর্মঘটে ভোগান্তিতে যাত্রীরা -থানচি সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপত্তার বাহিনীর সাথে গোলাগুলিতে কেএনএফ দুই সদস্য নিহত থানচিতে কেএনএফ সতর্কতায় বিজিবি’র গণসংযোগ বান্দরবান ব্যাংক ডাকাতির মামলায় কেএনএফের আরও ৫ জন রিমান্ডে নাজুক পরিস্থিতিতে ভুগছে থানচির পর্যটন কেন্দ্র গুলো বান্দরবান থানচি ব্যাংক ডাকাতির মামলায় কেএনএফ সদস্য ও সহযোগী রিমান্ডে  নাইক্ষ্যংছড়ি-মিয়ানমার সীমান্ত পরিদর্শনে বিজিবির মহাপরিচালক দুর্গম ধুপানিছড়া যৌথ বাহিনী অভিযানে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সহ ৯জন আটক বান্দরবান কেএনএফের আরও ৪ সদস্য কারাগারে নাইক্ষ্যংছড়িতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ পালন

স্থানীয় দালাল ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় রোহিঙ্গাদের হাতে বাংলাদেশি পাসপোর্ট

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশিতঃ রবিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২০
  • ৩১৮ জন নিউজটি পড়েছেন

 ডেস্কনিউজ :মিয়ানমারের সহিংসতায় বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা ভুয়া পরিচয়ে পাসপোর্ট করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। স্থানীয় দালাল ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় তারা মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে যেতে কৌশলে বাংলাদেশি পরিচয়ে পাসপোর্ট পাওয়ার চেষ্টা করছে। শুধু স্থানীয় দালাল চক্র নয়, দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায়ও সক্রিয় রয়েছে দালালরা। ইতিপূর্বে বহুবার কক্সবাজার, নোয়াখালী, বরিশাল, নরসিংদীসহ বিভিন্ন জেলায় রোহিঙ্গা নারী ও পুরুষ বাংলাদেশি পরিচয়ে পাসপোর্ট করতে এসে ধরা পড়েছে কর্তৃপক্ষের হাতে। তাদের আটকের পর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজাও দেওয়া হয়েছে।

তবু থামছে না রোহিঙ্গাদের জাল-জালিয়াতি। টাকা খরচ করলেই বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাচ্ছে তারা। তাদের সহায়তা করছে বাংলাদেশেরই দালাল চক্র। ২০১৭ সালে কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে আড়াই শর বেশি রোহিঙ্গার আবেদন শনাক্ত হয়। এর অধিকাংশই নারী। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও আঞ্চলিক ইমিগ্রেশন এবং পাসপোর্ট অফিসেও রোহিঙ্গা আবেদনকারী ধরা পড়ে। রোহিঙ্গার হাতে বাংলাদেশি পাসপোর্ট প্রদান ঠেকাতে সফটওয়্যারের সঙ্গে ইন্টারভিউ মিলিয়ে রোহিঙ্গাদের শনাক্তের কাজ করছে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর। তার পরও দালালদের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ঠিকানা জাল করে পাসপোর্টের জন্য রোহিঙ্গাদের আবেদন বন্ধ হচ্ছে না।

মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনীর হাতে নৃশংসতার শিকার হয়ে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। তাদের অনেকের স্বজনরা অবস্থান করছে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে। তাদের কাছে যেতেই বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য চেষ্টা করছে রোহিঙ্গারা।

জানা গেছে, একটি দালাল চক্র ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় রোহিঙ্গারা পাসপোর্ট পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে সম্প্রতি বাংলাদেশি পরিচয়ে পাসপোর্ট করতে এসে ছয় রোহিঙ্গা নারী ধরা পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। ওই ছয়জনের মধ্যে একজন পালিয়ে যেতে পারলেও বাকি পাঁচজনকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়। সাজাপ্রাপ্ত পাঁচ রোহিঙ্গা নারীর দুজন তৈয়বা বেগম ও ছেনুয়ারা বেগম। পাসপোর্ট করতে গিয়ে তৈয়বা নিজের পরিচয় দেন উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের রুমখাপালং গ্রামের অলি আহমদের মেয়ে হিসেবে।

আর ছেনুয়ারা পরিচয় দেন একই গ্রামের লাইলা বেগমের মেয়ে হিসেবে। এ ছাড়া টেকনাফ শামলাপুর গ্রামের আজহার আলম ও মৃত নূরজাহানের মেয়ে পরিচয়ে রুজিনা আক্তার, রামু উপজেলার নাসিরপাড়া গ্রামের ছৈয়দ আকবর ও হোসনে আরা বেগমের মেয়ে পরিচয়ে পাসপোর্ট করার চেষ্টা করেন রাজিয়া বেগম।

কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক তাজ বিল্লাহ বলেন, ‘রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র নকল করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও একটি দালাল চক্রের মাধ্যমে বাংলাদেশি পরিচয়ে পাসপোর্ট পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আমরা এ নিয়ে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করছি। তাই এখানে ভুয়া আবেদন এলেই দ্রুত চিহ্নিত করছি। আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি।’

এদিকে গত বছর টেকনাফের হ্নীলা জাদিমুরা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত রোহিঙ্গা নূর মোহাম্মদের সঙ্গে থাকা বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) উদ্ধার করা হয়। ২০১৯ সালের আগস্টে চট্টগ্রামে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী তিন রোহিঙ্গা যুবক আটক হওয়ার পর রোহিঙ্গাদের হাতে কীভাবে বাংলাদেশি পাসপোর্ট যায় সেসব কাহিনি ও কৌশলের কথা জানা যায়।

ওই তিন যুবকের দুজন হলেন মিয়ানমারের মংডু জেলার অংচি গ্রামের আলী আহমদের ছেলে মো. ইউসুফ ও মো. মুসা, আরেকজন মিয়ানমারের একই এলাকার মো. আজিজ। তারা ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নোয়াখালীর সেনবাগের ঠিকানা ব্যবহার করে এনআইডি সংগ্রহ করেন,পরে নোয়াখালীর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে সংগ্রহ করেন পাসপোর্ট। সে সময় জিজ্ঞাসাবাদে তারা নগরের আকবর শাহ থানা পুলিশকে জানান, তাদের ন্যাশনাল আইডি কার্ড ও পাসপোর্ট করে দেওয়ার জন্য ওই সময় নোয়াখালী নিয়ে কয়েকদিন রেখেছিল দাদালরা। তারা তিন দালালকে তিনটি পাসপোর্টের জন্য যথাক্রমে ১ লাখ ৫ হাজার, ৯০ হাজার ও ৬০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এভাবে প্রায় সারা দেশেই রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট করিয়ে দেওয়ার জন্য অনেক দালাল আছে বলেও জানা গেছে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসেও কয়েক মাস আগে চারজন রোহিঙ্গা পাসপোর্ট করতে গিয়ে ধরা পড়েন। বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক আবু সাঈদ বলেন, ‘আমরা মূলত ইন্টারভিউ করে ওই চারজনকে শনাক্ত করে পুলিশে দিয়েছি। কিছু কৌশলগত প্রশ্ন করলেই তারা ধরা পড়ে যান। ভাষাগত কারণেও ধরা পড়েন। কিন্তু এনআইডি বা জন্মনিবন্ধনের কাগজ তারা কীভাবে জোগাড় করেন এটাই প্রশ্ন।’ এ দুর্নীতির সঙ্গে পাসপোর্ট অফিসের নিম্ন পর্যায়ের কিছু কর্মচারীও জড়িত থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিভাগীয় পরিচালক বলেন, ‘পাসপোর্ট অফিসে এলেই তো রোহিঙ্গা ধরা পড়ছে।

এ পর্যন্ত পাসপোর্টের আবেদন করতে আসা বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করে পুলিশে দিয়েছি। তবে তারা আবেদনের আগে এনআইডি, জন্মনিবন্ধন কীভাবে পান তা আমরা বলতে পারব না, তারা তো পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্টও পান! এখন আমরা সফটওয়্যার ব্যবহার করছি ভুয়া আবেদন ধরার জন্য। আর ইন্টারভিউর মাধ্যমেও শনাক্ত করছি। বিশেষ করে আমাদের কাছে দেওয়া ফিঙ্গারপ্রিন্ট, রোহিঙ্গাদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও এনআইডির ফিঙ্গারপ্রিন্ট মিলিয়ে দেখছি। আমরা রাষ্ট্রীয় স্বার্থ অক্ষুণ রাখতে জিরো টলারেন্সে রয়েছি রোহিঙ্গাদেও বিষয়ে। ইতিমধ্যে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, মামলা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠনও হয়েছে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আর নিউজ

আজকের নামাজের সময়সুচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৩:৫৫ পূর্বাহ্ণ
  • ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ
  • ১৬:৩২ অপরাহ্ণ
  • ১৮:৩৭ অপরাহ্ণ
  • ২০:০০ অপরাহ্ণ
  • ৫:১৬ পূর্বাহ্ণ
© All rights reserved ©paharkantho.com-২০১৭-২০২১
themesba-lates1749691102
error: Content is protected !!