ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্য বিমোচনে একটি বিপ্লব সৃষ্টি করেছেন তাঁর মাইক্রোক্রেডিট ধারণার মাধ্যমে, ২০০৬ সালে এই কাজের জন্য তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন, পরবর্তীতে ২০১৭ সালে প্রকাশিত তাঁর বই A World of Three Zeros এ ড. ইউনূস একটি নতুন এবং সাহসী ধারণা উপস্থাপন করেছেন যা তিনি Three Zeros থিয়োরি নামে পরিচিত করেছেন। এই থিয়োরি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য নিয়ে গঠিত Zero Poverty Zero Unemployment এবং Zero Net Carbon Emissions এই ধারণা বাস্তবায়িত হলে এটি আবারও ড. ইউনুসকে নোবেল পুরস্কারের মঞ্চে নিয়ে আসতে পারে এবং কেননা এই থিয়োরি আমাদের বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলির সমাধান হিসাবে বিবেচিত হতে পারে।
ড. ইউনূসের Three Zeros থিয়োরির প্রথম লক্ষ্য হল Zero Poverty অর্থাৎ দারিদ্র্যের সম্পূর্ণ অবসান ঘটানো। তিনি বিশ্বাস করেন যে দারিদ্র্য কেবল অর্থনৈতিক সমস্যার ফল নয়! বরং এটি একটি সামাজিক সমস্যা যা সঠিকভাবে সমাধান করা সম্ভব। মাইক্রোক্রেডিট ধারণার মাধ্যমে তিনি দেখিয়েছেন যে কীভাবে ছোট ঋণ মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে পারে। এই মডেলটি দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য কার্যকর একটি উপায় হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং ড. ইউনূস এখন আরও বড় পরিসরে এই ধারণাকে প্রসারিত করতে চান যাতে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্যের সম্পূর্ণ অবসান সম্ভব হয়।
Three Zeros থিয়োরির দ্বিতীয় লক্ষ্য হল Zero Unemployment অর্থাৎ বেকারত্বের সম্পূর্ণ অবসান।ড. ইউনূস বিশ্বাস করেন যে প্রত্যেক মানুষের কর্মসংস্থান একটি মৌলিক অধিকার, এবং এই অধিকার নিশ্চিত করার জন্য তিনি সোশ্যাল বিজনেস মডেলগুলোর ওপর জোর দেন, এই মডেলগুলো লাভের পরিবর্তে মানুষের কল্যাণে নিবেদিত হয় যা কর্মসংস্থান তৈরি করতে সহায়ক। ড. ইউনুস মনে করেন যে এই মডেলগুলো যদি বৈশ্বিকভাবে গৃহীত হয়, তাহলে বিশ্বের সমস্ত মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে।
Three Zeros থিয়োরির তৃতীয় এবং সর্বশেষ লক্ষ্য হল Zero Net Carbon Emissions অর্থাৎ কার্বন নিঃসরণকে সম্পূর্ণভাবে শূন্যে নামিয়ে আনা।জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে আমাদের গ্রহকে রক্ষা করতে হলে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস একটি জরুরি পদক্ষেপ ড. ইউনুস বিশ্বাস করেন যে সোশ্যাল বিজনেস মডেলগুলোর মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব উদ্যোগগুলোর প্রসার ঘটানো সম্ভব, যা কার্বন নিঃসরণ কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।যদি এই মডেলগুলি বৈশ্বিকভাবে প্রয়োগ করা হয়, তাহলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমিয়ে পৃথিবীকে একটি সবুজ ও টেকসই ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
আরো পড়ুন >>>নাইক্ষ্যংছড়িতে বসত ঘরে আগুন, উদ্ধার করা যায়নি কিছুই