নানান আয়োজনকে ঘিরে বান্দরবান রথ শোভযাত্রা ও রথ বিসর্জন মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটেছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্নিমা।
২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় সাড়ে ৬ ঘটিকায় সময় বান্দরবান পুরানো রাজার মাঠ সড়ক হতে রথ যাত্রা বের হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন মাধ্যমে সমিল এসে সমাপ্তি ঘটে। পরে সাংগু নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়।
এইসময় বৌদ্ধধর্মালম্বীরা শত শত দর্শক ও পূন্যকারীরা রথ শোভযাত্রা যোগ দেন। পাশাপাশি ঐতিহ্য গানে সাথে তাল মিলিয়ে শোভযাত্রাটি মুগ্ধকর করে তুলে পুরো বান্দরবান শহরে । রাজগুরু বিহার, উজানী বিহার ও রাজারসহ বিভিন্ন স্থানে হতে চুলামনি উদ্দ্যশে ভিন্ন রকমারী তৈরী ফানুস উড়ানো হয় আকাশে। ফানুসের পাশাপাশি আকাশে বিভিন বাজি ফুটানো হয়। শেষ দিনের রথ শোভযাত্রা পার্বত্য মন্ত্রী সহ পুরো শহরে পূন্যকারীরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন। তবে সেই শোভযাত্রা অত্যতম আকর্ষণ দিক ছিল কাল্পনিক ভুতূরের নাচ। যা আচমকা ভাবে ভয় দেখিয়ে ছুটে আসে মানুষ দিকে। সে ছুটে আসার ভিতরে একটি আনন্দময়বোধ বলে মনে করেন ভুতুরের ভিতরে থাকা মানুষটি।
এইদিনে শেষদিনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পালন করা হয়েছে রথ শোভযাত্রা। তবে পুরো স্থান জুড়ে তৎপরতা রয়েছে আইনশৃঙখলা বাহিনী ছিল কড়া নিরাপত্তা। পাশাপাশি উদযাপন কমিটি পক্ষ হতে ভলেন্টিয়া ছিল অনেকে যাতে শেষ দিনে কোন অপ্রতিকর ঘটনা না ঘটে।
বৌদ্ধধর্মালম্বী উচ মে মারমা জানান, আজ শেষ দিনের অনেক মজা করেছি। গত বছরে করোনা সংক্রামণ কারণে আমরা মজা করতে পারিনি। এই শেষ দিনে ভগবানের কাছে এটাই চাওয়া বাংলাদেশ থেকে করোণা মুক্তি হোক ও সুন্দর একটি দেশ গড়ে উঠুক।
রথযাত্রা দেখতে আসা সাথী দাশ জানান, আজকে রথ যাত্রা অনেক সুন্দর হয়েছে। আমরা পুরো পরিবার দেখতে এসেছি। এই শেষ দিনে দেখতে খুব ভালো লেগেছে।
আরেক পূন্যকারী হ্লাচিংমে মারমা জানান, পাহাড়ের আজ মাহাঃ ওয়াগ্যেয়ে পোয়েঃ শেষ দিনে অর্থ ফুল দান করেছি। ভগবানে কাছে প্রার্থনা করেছি এই শেষ দিনে সবার জীবন সুন্দর হোক। পাশাপাশি আমাদের দেশকে করোনামুক্তি হয়ে সুন্দর দেশ আসুক।
এইদিকে পার্বত্য এলাকায় বান্দরবানে পাহাড়ে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের ২০ অক্টোবর বুধবার সকাল থেকে শুরু হয় মারমা সম্পদ্রায়ের অন্যতম উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা বা ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে । প্রবারণাকে কেন্দ্র করে আদিবাসী পল্লীগুলোতে চলছিল উৎসবের মাতম । নানা রং এ সাজানো হয়েছিল পাহাড়ের বিহারগুলো । প্রবারণা উদযাপনে প্রথম দিনেই শুরু হয় মহামঙ্গলময় শুভ রথযাত্রা। সন্ধ্যায় ৭ ঘটিকায় সময় ময়ুর পঙ্খীতে রথে গৌতম বুদ্ধকে বসিয়ে রাজগুরু বৌদ্ধ বিহার হতে উজানী পাড়া বৌদ্ধ বিহারে প্রদক্ষিন করা হয় ।
পাশাপাশি প্রথম দিনে রাত্রীকালীন জাদী পাড়া প্রাঙ্গনে, ছোট রাজার মাঠে ও উজানী পাড়ায় পিঠা উৎসবের সকল যুবক-যুবতি, অভিভাবকরা রাত জেগে পিঠা বানিয়ে সকালে পাড়ার প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌচ্ছে দেওয়া হয়েছে। আর এ উৎসব উপলক্ষে রথ টানার পাশাপাশি,হাজার বাতি প্রজ্জলন, রংবে রংয়ের ফানুষ বাতি আকাশে উড়িয়েছে পূণ্যনার্থীরা। তবে গেল বছর করোনা সংক্রামণে হার বেশি কারণে ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালার সীমিত পরিসরে হয়েছে।
বুদ্ধধর্মালবীদের মতে,আষাঢ়ী পূর্নিমার দিন থেকে টানা তিনমাসের বর্ষাবাস শেষে বৌদ্ধ নর-নারীরা বিভিন্ন বৌদ্ধ মন্দিরে গিয়ে পঞ্চশীল,অষ্টশীল ও দশশীল গ্রহন করেন এবং প্রবারণা পূর্ণিমা (মাহা ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ) পালন করে থাকে। এসময় সকল অহিংসা ও পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার মন্ত্রে দীক্ষিত হন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মানুসারীরা।