রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার গাইন্দ্যা ইউনিয়নের তুলাছড়ি পাড়ায় বন্যহাতির তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গত রবিবার ভোর রাতে (২ জুন) প্রায় ১০ থেকে ১২টি বন্যহাতির একটি দল খাবারের সন্ধানে গ্রামে ঢুকে ঘরবাড়ি ভেঙে ধান-চাল খেয়ে সাবাড় করে ফেলে। এছাড়া গাছের কাঁঠাল, কলাগাছ এবং ঘরের আসবাবপত্রও তছনছ করে দেয়। এতে মিয়াদন তনচংগ্যা ও পিন্টু তনচংগ্যার মতো অন্তত ২ থেকে ৪টি পরিবারের প্রায় ২০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
বোরো ধানের আবাদ শেষ হওয়ায় এবং বৃষ্টির কারণে হাতি তাড়ানো কঠিন হওয়ায় হাতিগুলো এখন ফসলের খেত ছেড়ে গ্রামে ঢুকে পড়ছে। স্থানীয়রা জানান, আগে শুধু পাহাড়ঘেঁষা বাড়িঘরে হামলা করলেও এখন হাতি গ্রামের অভ্যন্তরেও প্রবেশ করছে। জানমাল রক্ষার্থে পাহাড়ঘেঁষা গ্রামের মানুষ বসতবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন।
বন্যহাতির হামলা ঠেকাতে উপজেলার বিমাছড়া, তুলাছড়ি, আমছড়া পাড়ার বাসিন্দারা বাড়ির আঙিনার গাছপালা কেটে ফেলেছেন এবং দলবেঁধে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন। গাইন্দ্যা ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার লামুচিং মারমা জানান, তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) বিষয়টি জানিয়েছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তুলাছড়ি পাড়ার বাসিন্দা কিনামন জানান, হাতি তাড়ানোর জন্য তাদের পর্যাপ্ত ডিজেল ও সার্চলাইট নেই এবং তারা চরম আতঙ্কে আছেন। বৃষ্টি ও অন্ধকারের কারণে রাত পার করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগের রাজস্থলী ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা তুহিনুল হক বলেন, বন্যহাতির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে সরকার নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে এবং হাতি ও মানুষের উভয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন।
রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব কান্তি রুদ্র ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম পরিদর্শন করেছেন এবং জেলা প্রশাসকের কাছে ক্ষতিপূরণের আবেদন পাঠানোর কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তরা সাহায্য সহযোগিতা পাবেন এবং বন বিভাগের মাধ্যমে আবেদন করলে সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
আরো পড়ুন→নাইক্ষ্যংছড়িতে চোরাকারবারিদের হামলায় ৩ বিজিবি সদস্য আহত,আত্মরক্ষার্থে ফাঁকা গুলি বিজিবি’র