রোববার (১ডিসেম্বর) সকালে কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর নুনিয়াছটা জেটিঘাট থেকে অনলাইন নিবন্ধনের মাধ্যমে সকল নিয়ম মেনে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে ৬৫৩ পর্যটক রওনা দিয়েছেন। এমভি বার আউলিয়া নামক জাহাজে করে পর্যটকরা বঙ্গোপসাগরের অন্তত ১২৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে বিকেল চারটায় পৌঁছাবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।
নানা জটিলতায় এতদিন পর্যটকেরা সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ভ্রমণে যেতে পারেননি। কিন্তু বিগত ১ নভেম্বর থেকে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ও কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন দ্বীপে নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারি সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছিল। তবে দীর্ঘ জল্পনা কল্পনার পর আজ সকাল ৯টার দিকে শহরের নুনিয়াছটা এলাকার বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) জেটিঘাটে জড়ো হন কয়েক শ পর্যটক। সেখানে পর্যটকেরা জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, ট্যুরিজম বোর্ড ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে অনলাইন নিবন্ধনের মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণের ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করেন। এর পর সকাল ১০টায় ৬৫৩ জন পর্যটক নিয়ে এমভি বার আউলিয়া জাহাজটি সেন্ট মার্টিন দ্বীপের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
এসময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন বলেন, পর্যটকেরা আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন কিন্তু পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি পর্যটক নেওয়া হলে প্রশাসন থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসময় নুনিয়াছটা জেটিঘাটে ঢাকার বনানী এলাকার আমিনুর রহমানের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান সে তার পরিবারের চার সদস্য নিয়ে এসছেন সেন্টমার্টিন যাবেন বলে তিনি আরো বলেন সেন্ট মার্টিন দ্বীপ দেখার ইচ্ছা দীর্ঘদিনের। কক্সবাজার ভ্রমণে এসে সুযোগটি হাতছাড়া করিনি। দুই দিন থাকার পরিকল্পনা নিয়ে সেন্টমার্টিন যাচ্ছি।
২৩০টির বেশি হোটেল, রিসোর্ট ও কটেজ পর্যটকদের রাত যাপনের জন্য সেন্ট মার্টিনে রয়েছে। এসব পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে নির্মাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে বলে জানা যায়।
জেটিতে জাহাজে ওঠার সময় পর্যটকদের হাতে পলিথিন প্লাস্টিক জাতীয় দ্রব্য আছে কি না, তা ব্যাপক ভাবে তদারকি করা হয় পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে।
এসময় পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মীরা সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারি বিধিনিষেধ সম্পর্কে ধারণা দেন পর্যটকদের।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জমির উদ্দিন জানান, যাতে জাহাজে পলিথিন ও প্লাস্টিকের পণ্য ব্যবহার করতে না পারেন পর্যটকেরা সে বিষয়ে কঠোর তদারকী চলছে। পলিথিন ব্যাগের পরিবর্তে পর্যটকদের বিনা মূল্যে পাটের ব্যাগ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ২৮ অক্টোবর পরিবেশ এক স্মারকে,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আসমা শাহীন জানান, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাঁচটি সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি এই দুই মাস প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার পর্যটক সেন্ট মার্টিনে রাত যাপনের সুযোগ পাবেন এবং সৈকতে রাতের বেলায় আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি ও বারবিকিউ পার্টি করা যাবে না বলেও নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়।
আরো পড়ুন >>>এক টাকার খবরের সম্পাদক সাংবাদিক মুন্নী সাহা আটক