রুমা প্রতিনিধিঃ বুধবার (৮ অক্টোবর) পার্বত্য জেলা বান্দরবানের রুমা উপজেলায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা। নানা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, সামাজিক আয়োজন ও আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপিত এ উৎসবের প্রধান আকর্ষণ ছিল ফানুস উড়ানো এবং মহারথ টানার অনুষ্ঠান।
উৎসবের শেষ দিনে আজ বিকেলে লুংঝিড়ি পাড়া থেকে শুরু হয় রথযাত্রা। রথটি উপজেলা প্রধান সড়ক হয়ে বাজার ও বড়ুয়া পাড়ার বিহার প্রদক্ষিণ শেষে সাংগু নদীর ঘাটে পৌঁছে। সেখানে বিসর্জনের মাধ্যমে প্রবারণা পূর্ণিমার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
রুমার মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী এই উৎসবটি স্থানীয়ভাবে ‘ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে’ নামে পরিচিত। তিন দিনব্যাপী এই উৎসবে ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধরা প্রার্থনা, ধর্মীয় উপদেশ শ্রবণ, দান-খয়রাতসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক কার্যক্রমে অংশ নেন। রথযাত্রার সময় রথের প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে জগতের সকল প্রাণীর সুখ-শান্তি কামনা এবং মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
এবারের উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সম্মানিত সদস্য কে এস মং। বিশেষ অতিথি ছিলেন রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবং ১নং পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রুমা অগ্রবংশ অনথালয় বিহারের অধ্যক্ষ উঃ নাইডিয়া ভান্তে এবং মাহা ওয়াগ্যোয়াই উদযাপন কমিটির সভাপতি উক্যসিং মারমা।
রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনাদ চৌধুরী আনুষ্ঠানিকভাবে রথযাত্রা শুভ উদ্বোধন করেন।
রাতে মারমা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় স্থানীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ‘পাংখুং’, যেখানে রাতভর চলে মারমা ঐতিহ্যের নাচ-গান ও উৎসর্গের অনুষ্ঠান। এই আয়োজনের মধ্য দিয়েই শেষ হয় প্রবারণা পূর্ণিমার তিন দিনব্যাপী উৎসব।
আরো পড়ুন→ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গমে আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য কে এস মং