নিজস্ব প্রতিবেদকঃ তিন পার্বত্য জেলায় বৈষম্য,সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজমুক্ত এবং দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও গণ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ
শনিবার (৩১ আগস্ট) পৌরসভার সামনে থেকে শুরু হয়ে র্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বান্দরবান প্রেস ক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। বিকাল ৪ টায় প্রেসক্লাব চত্ত্বরে বৈষম্য বিরোধী বিভিন্ন পোষ্টার-ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ। র্যালিতে বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাব চত্ত্বর গিয়ে মহাসমাবেশে রূপ নেয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্রগাম নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান। এসময় তিনি বলেন, বাংলাদেশে কেউ আদিবাসী নয়,আমরা সকলে বাংলাদেশি যারা নিজেদের আদিবাসী দাবি করেন তারা এ দেশের শত্রু। এছাড়াও সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম হিলট্র্যাক্ট রেগুলেশন আইন-১৯০০ বাতিলের দাবি জানানো হয়।
তিনি আরও বলেন,বৈষম্য মূলক ও বিশেষ উদ্দেশ্য প্রনোদিত পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন সংশোধন এবং অসহায় ও ভূমিহীনদের মাঝে ভূমি বন্দোবস্তী চালু করতে হবে। ষড়যন্ত্রমূলক এবং একটি বিশেষ শ্রেণী গোষ্ঠীর মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের সরকারী ও খাস ভূমি দখল এবং বনজ সম্পদ ধ্বংসের পায়তারার অংশ হিসেবে চালু করা ভিলেজ কমন ফরেস্ট বা পাড়াবন প্রকল্প অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।পার্বত্য চট্টগ্রামে বিছিন্নবাদী সশস্ত্র সংগঠন কর্তৃক সশস্ত্র সংঘাত, হত্যা, গুম, অপহরণ, চাঁদাবাজি, নির্যাতন, নিপীড়ন বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং শান্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে। উপজাতিরা সমগ্র বাংলাদেশে জমি ক্রয়, বসবাস, চাকরি ও ব্যবসা করতে পারে। একই ভাবে তিন পার্বত্য জেলায় অন্য ৬১ জেলার নাগরিকদের সীমিত আকারে বিশেষ বিবেচনায় শিল্প কারখানা স্থাপন কিংবা ব্যবসায়ীক বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে জমি ক্রয় করে বসবাস করার সুযোগ দিতে হবে এবং পার্বত্য জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার ক্ষেত্রে রাজার সার্টিফিকেট বাতিল করার দাবী জানানো হয় সমাবেশ থেকে।
সমাবেশে বক্তারা পাহাড়ে চাঁদাবাজি ও অস্ত্রবাজি বন্ধের দাবি জানিয়ে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল প্রতিষ্ঠান ও সংস্থায় সর্বোচ্চ পদে পাহাড়িদের থেকে পদায়ন করা হচ্ছে। জাতীয় ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের সভাপতির পদসহ সকল সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীর পদসমূহ শুধুমাত্র পাহাড়িদের জন্য নির্ধারিত।
উন্নয়ন বোর্ডে চেয়ারম্যান পদে বাঙালি প্রতিনিধি সহ তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে সদস্য নিয়োগের ক্ষেত্রে জনসংখ্যা অনুপাতে সকল সম্প্রদায় হতে জেলা পরিষদে সদস্য মনোনয়নের দাবি জানান।
বান্দরবানে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ মুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম গঠন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, সরকারী চাকুরি, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড’সহ সকল ক্ষেত্রে পাহাড়ের বাঙালীদের সঙ্গে বৈষম্য দূর করে জনসংখ্যার অনুপাতিক পদ বন্টনের দাবি এবং পার্বত্যাঞ্চল নিয়ে রাষ্ট্র বিরোধী দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে কয়েক হাজার ছাত্র-জনতা।
ছাত্র জনতার মহা সমাবেশে পার্বত্য নাগরিক পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা আবুল কালাম আজাদ এর সভাপত্বিতে প্রধান অতিথি ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মোঃ মজিবর রহমান। এ সময় সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আলমগীর কবির, বান্দরবান জেলা কমিটির সহ-সভাপতি এম রহুল আমিন, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন সহ প্রমুখ ।