Logo
বাংলাদেশ[bangla_day] , [english_date]
  1. অনিয়ম
  2. অপরাধ
  3. অপহরণ
  4. অর্থনীতি
  5. আইন শৃঙ্খলা
  6. আইন-আদালত
  7. আওয়ামীলীগ
  8. আন্তর্জাতিক
  9. আলীকদম
  10. ইতিহাস ও গল্প

সীমান্তে মানবিকতার দৃষ্টান্ত: মাইন বিস্ফোরণে আহতদের পাশে কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন (৩৪ বিজিবি)

Link Copied!

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সীমান্তবর্তী এলাকাজুড়ে যখন আরাকান আর্মির পুঁতে রাখা মাইন সাধারণ মানুষের জন্য মৃত্যুফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি মানবিক সহায়তায়ও প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সীমান্তে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিজিবির এই সহানুভূতিশীল ও মানবিক ভূমিকাই সাধারণ মানুষের কাছে নিরাপত্তা বাহিনী হিসেবে তাদের গ্রহণযোগ্যতা আরও দৃঢ় করেছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নাইক্ষ্যংছড়ি ও উখিয়া উপজেলায় মাইন বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হওয়া চারজন বাংলাদেশি নাগরিককে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন (৩৪ বিজিবি)। বিজিবি মহাপরিচালকের দিকনির্দেশনায় এবং ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম খায়রুল আলম, পিএসসি-এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই সহায়তা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়।

মিয়ানমার সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি ও উখিয়ার বিভিন্ন এলাকাজুড়ে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির পুঁতে রাখা মাইন এখন সীমান্তবর্তী মানুষের জন্য স্থায়ী আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। সীমান্তের শূন্যরেখা ও কাছাকাছি এলাকাগুলোতে কৃষিকাজ, গবাদি পশু চরানো কিংবা বাঁশ-লাকড়ি সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মুখে পড়ছেন সাধারণ গ্রামবাসীরা।

এইসব বিস্ফোরণে কেউ পঙ্গুত্ব বরণ করছেন, কেউ আবার প্রাণ হারাচ্ছেন। অথচ এ সমস্যার কোনো কার্যকর আন্তর্জাতিক সমাধান দৃশ্যমান নয়। এমন বাস্তবতায় সীমান্ত রক্ষার পাশাপাশি বিজিবির মানবিক সহায়তা কার্যক্রম নিঃসন্দেহে একটি সময়োপযোগী ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

৩৪ বিজিবির উদ্যোগে যে চারজন আহত নাগরিককে আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান পুত্র মোঃ সোনা মিয়া (১৮)

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাসিন্দা মৃত্যু আবুল হোসেনের পুত্র মোঃ আবু তাহের (২৮)

কক্সবাজার জেলা উখিয়া উপজেলা তুলাতলি গ্রামের সিরাজ মিয়ার পুত্র মোঃ মনছুর আলম (৩০) একিই এলাকার বাসিন্দা

মোঃ এস আলমের পুত্র মোঃ করিম হোসেন (২০)

এই চারজনই সীমান্ত এলাকায় মাইন বিস্ফোরণে আহত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক ও মানসিক কষ্টে দিন পার করছিলেন। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে বিজিবি যে সহায়তা করেছে, তা যেন শুধু আর্থিক সাহায্য নয়—একটি সাহস ও সহমর্মিতার বার্তা।

৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম খায়রুল আলম, পিএসসি বলেন—“বিজিবি সবসময় দেশের সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি জনগণের পাশে থেকেও কাজ করছে। মাইন বিস্ফোরণে আহত, দুর্ঘটনাগ্রস্ত এবং দরিদ্র মানুষের পাশে আমরা আছি এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের মানবিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে।”

এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, বিজিবি শুধু সীমান্তের অভ্যন্তরে সীমাবদ্ধ নয়, বরং সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি একটি দায়িত্বশীল বাহিনীর প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজ এবং সাধারণ গ্রামবাসীদের কাছ থেকেও বিজিবির এ সহায়তা কার্যক্রমের জন্য ভূয়সী প্রশংসা এসেছে। তাদের মতে, সীমান্ত সুরক্ষা ও মানবিক সহায়তা একসঙ্গে চালানো যে কতটা কষ্টসাধ্য তা সবাই বুঝতে পারে না। কিন্তু বিজিবি তা নীরবে করে যাচ্ছে। এই সহানুভূতিশীল আচরণ মানুষের মন জয় করছে।

বাংলাদেশের সীমান্ত অঞ্চলগুলোতে বর্তমানে সবচেয়ে বড় হুমকি হলো মাইন বিস্ফোরণ। সীমান্তবর্তী জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিজিবি যেভাবে আহতদের পাশে দাঁড়াচ্ছে, তা দেশের অন্যান্য সুরক্ষা বাহিনীর জন্যও অনুকরণীয় হয়ে উঠেছে।

৩৪ বিজিবির মানবিক সহায়তা কার্যক্রম প্রমাণ করেছে—”বিজিবি মানেই শুধু সীমান্ত পাহারাদার নয়, বরং বিপদের দিনে মানুষের পাশে থাকা এক বিশ্বস্ত বন্ধুও।

আরো পড়ুন→বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে অভিযান চালিয়ে ৫৬০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে বিজিবি