1. soccergames24@gmail.com : babul khan : babul khan
  2. 1234567889@gmail.com : Khaled Mahabub Khan Arafat : Khaled Mahabub Khan Arafat
  3. shebabslinfg@gmail.com : Babul Khan : Babul Khan
  4. mhkbkhan@gmail.com : Mahabub Hassan Khan : Mahabub Hassan Khan
ইতিহাসের প্রখ্যাত সুফি সাধক সুলতান উল আরেফিন বায়েজিদ বোস্তামি (রহ.) - paharkantho
সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৫:৩২ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
নাইক্ষ্যংছড়িতে সবজি ব্যাবসায়ীর লাশ মিললো খালে। নাইক্ষ্যংছড়িতে পুলিশের অভিযানে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ঘুমধুমে যুব সমাজের উদ্যোগে রাস্তা মেরামত ঘুমধুম খাল থেকে অজ্ঞাত যুবকের পঁচনধরা মরদেহ উদ্ধার বান্দরবানের থানচি-রুমা পর্যটক ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার রুমায় কৃষকের বসত বাড়িতে আগুন, সব পুড়ে ছাই বান্দরবানে পৃথক অভিযানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৬ নেতা আটক দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবকদল সদস্যসচিব আশরাফুল ফরহাদ-কে অব্যহতি সেনাবাহিনীর সহায়তায় ২ বছর পর ঘরে ফিরল বম পরিবার থানচিতে খেয়াং নারীর মৃত্যুকে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ
বিজ্ঞপ্তি
paharkantho.com আপনাকে স্বাগতম 🤗...

ইতিহাসের প্রখ্যাত সুফি সাধক সুলতান উল আরেফিন বায়েজিদ বোস্তামি (রহ.)

আমিন মুন্না,চট্টগ্রাম
  • প্রকাশিতঃ সোমবার, ১৩ জুলাই, ২০২০
  • ৩১৭৯৯ জন নিউজটি পড়েছেন

সুলতান উল আরেফিন বায়েজিদ বোস্তামি (রহ.) পৃথিবীর ইতিহাসে একজন প্রখ্যাত সুফি সাধক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। মায়ের দোয়ার বরকতে তিনি একদিন বিশ্ববিখ্যাত আউলিয়ায় পরিণত হন। বায়েজিদ বোস্তামি তার ঈশ্বরে বিলীন হওয়ার তত্ত্বের জন্য বিখ্যাত।

♦মহান এই সুফি সাধককে নিয়ে আজকের আয়োজন♦

বায়েজিদ বোস্তামি জন্মকাল ৮০৪ সালে ইরানের বোস্তাম শহরে। আগেকার দিনে জন্মস্থানের সাথে মিলিয়ে অঞ্চলের নাম জুড়ে দেওয়ার রীতি বেশ প্রচলিত ছিল। তাই বোস্তামি শব্দটি যুক্ত হলো নামের শেষে। বোস্তামি মানে বোস্তাম শহরের বাসিন্দা। পিতা-মাতার দেওয়া নাম ছিল আবু ইয়াজিদ বোস্তামি। তার পিতার নাম ছিল তয়ফুর। বাবার নামানুসারে আবার কেউ কেউ তাকে ডাকেন তায়ফুর আবু ইয়াজিদ আল বোস্তামি নামে। বায়েজিদ তিনি সুলতান-উল আরেফিন বলেও আখ্যায়িত করা হয়।

শৈশবে তিনি অন্য শিশুদের মতো খেলাধুলা না করে মহান আল্লাহর ইবাদত ও মায়ের খেদমতে লিপ্ত থাকতেন। এক রাতে তার ধার্মিক মা ঘুম ভেঙে গেলে পানি পান করতে চাইলেন। কিন্তু ঘরে পানি ছিল না। তখন বালক বায়েজিদ পানি আনতে বেরোলেন বাইরে। দূরের এক ঝরনা থেকে পানি নিয়ে তিনি যখন ঘরে ফিরলেন তখন তার মা আর জেগে নেই। আবারও ঘুমিয়ে পড়েছেন। কিন্তু বায়েজিদ মায়ের ঘুম না ভাঙিয়ে শিয়রের কাছে সারা রাত দাঁড়িয়ে রইলেন পানির গ্লাস হাতে করে এই ভেবে যে, যদি মা আবার উঠে পানি পান করতে চান। রাত পেরিয়ে সকাল হলে মায়ের ঘুম ভাঙল। তিনি দেখলেন বায়েজিদ দাঁড়িয়ে পানির গ্লাস হাতে নিয়ে। মায়ের প্রতি এই আবেগ দেখে মা উদ্বেলিত হয়ে পড়লেন।

জানা যায়, তিনি বলেছিলেন, বায়েজিদ একদিন অনেক বড় হবে। কঠোর তপস্যার মাধ্যমে আল্লাহতায়ালার সান্নিধ্য লাভের আশায় দুনিয়ার ভোগ-বিলাস ত্যাগ করে সুফিবাদের মতো কঠোর সাধনাই সৃষ্টিকর্তার নৈকট্যলাভ করেন।তিনি ১৩১ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন এবং বোস্তাম শহরে তাকে দাফন করা হয়।

♦চট্টগামে বোস্তামি♦
হযরত বায়েজিদ বোস্তামি চট্টগ্রামে এসেছিলেন বলে অনেকে দাবি করলেও ঐতিহাসিক ভাবে এটি প্রমাণিত নয়। তবে বার আউলিয়ার পূর্ণ ভূমি চট্টগ্রামে হাজার বছর ধরে ইসলাম প্রচারে সুফি সাধক ও আউলিয়াগণ গহীন পাহাড় জঙ্গলে আবাস স্থাপন করেন এবং এসব জায়গায় মাজার, দরগা, খানকাহ কিংবা এ ধরনের বিভিন্ন স্থাপনা প্রতিষ্ঠা করেন। বায়েজিদ বোস্তামির মাজারটাও মূলত তাকে উৎসর্গ করে প্রতিষ্ঠিত একটি প্রতিরূপ।

ঐতিহাসিক ভিত্তি না থাকলেও জনশ্রুতি আছে, বায়েজিদ বোস্তামি চট্টগ্রামে আগমন করেছিলেন। চট্টগ্রামে অবস্থানের পরে প্রস্থানকালে ভক্তকূল তাকে থেকে যাওয়ার অনুরোধ করলে তিনি তাদের ভালোবাসা ও ভক্তিতে মুগ্ধ হয়ে কনিষ্ঠ আঙ্গুল কেটে কয়েক ফোঁটা রক্ত মাটিতে পড়ে যেতে দেন। পরবর্তীতে ওই রক্ত ফোঁটা পড়ার জায়গায় বায়েজিদ বোস্তামির নামে মাজার গড়ে ওঠে। অনেকে বলেন, বোস্তামি নিজেই মাজার গড়ে তোলার কথা বলে গিয়েছিলেন। এই জনশ্রুতির পক্ষে অষ্টাদশ শতাব্দীর চট্টগ্রামের কিছু কবির কবিতার উল্লেখ করা হয় যেখানে শাহ সুলতান নামক একজন মনীষীর নাম বর্ণিত আছে। বায়েজিদ বোস্তামিকে যেহেতু সুলতান- উল আরেফিন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় যেই সূত্রে এই শাহ সুলতান আর সুলতান-উল আরেফিনকে একই ব্যক্তি হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

♦বোস্তামি মাজারের বিস্ময়কর কাছিম♦
বায়েজিদ বোস্তামীর মাজারের পাদদেশে রয়েছে একটি সুবিশাল দীঘি। দীঘিতে আছে বোস্তামীর কাছিম ও গজার মাছ। আঞ্চলিকভাবে এদের গজারী-মাজারী বলে আখ্যায়িত করা হয়।
স্থানীয় লোকজনের বিশ্বাস, হজরত সুলতান বায়েজিদ বোস্তামি (রহ.) ইরান থেকে চট্টগ্রামে আসার সময় এ কাছিমগুলো নিয়ে আসেন মাজারের ভক্তকূল ও আঞ্চলিক জনশ্রুতি অনুযায়ী মাজার প্রতিষ্ঠাকালে এই অঞ্চলে প্রচুর দুষ্ট জ্বীন এবং পাপীষ্ঠ আত্মার পদচারণা ছিলো। বায়েজিদ বোস্তামী তার এই অঞ্চলে ভ্রমনকালে এইসব দুষ্ট আত্মাকে শাস্তিস্বরূপ কাছিমে পরিণত করেন এবং আজীবন পুকুরে বসবাসের দণ্ডাদেশ প্রদান করেন।

তবে বিস্ময়কর এই কাছিমে বৈজ্ঞানিক নাম অ্যাসপিডেরিটিস নাইগ্রিক্যান্স।প্রাণিবিজ্ঞানী অ্যান্ডারসন ১৮৭৫ সালে সর্বপ্রথম ভারতের জাদুঘরে রক্ষিত দুটি নমুনা থেকে বোস্তামীর কচ্ছপের প্রজাতিটির সন্ধান পান। রক্ষিত নমুনা দুটি ছিল চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী পুকুর থেকে সংগৃহীত। ১৯১২ সালে প্রাণিবিজ্ঞানী এন এনানডেলের মতে বোস্তামীর কচ্ছপ একসময় ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকা থেকে মিয়ানমার পর্যন্ত বিশাল এলাকাজুড়ে বিচরণ করত।এই প্রজাতির কচ্ছপ এতই দূর্লভ ১৯১৪ সালে প্রাণিবিজ্ঞানী এন এনানডেলের ও অন্য প্রাণিবিজ্ঞানী এম শাস্ত্রী এক গবেষণায় উল্লেখ করেন বোস্তামীর কচ্ছপ বর্তমানে শুধু চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী মাজার সংলগ্ন পুকুরেই টিকে আছে। ১৯৩১ সালে প্রাণিবিজ্ঞানী ম্যালকম স্মিথ তার ফনা অব ব্রিটিশ ইন্ডিয়া গ্রন্থে উল্লেখ করেন, ভারতবর্ষে ‘নিলসোনিয়া নিগরিকেন টার্টেল’ বা বোস্তামি কাছিম একমাত্র বায়েজিদ বোস্তামির মাজারে পাওয়া যায়।

২০০২ সালে পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণে আন্তর্জাতিক সংস্থা, আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (IUCN) কর্তৃক বোস্তামী কচ্ছপ কে চরমভাবে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয়। তাই এই কচ্ছপেরর ওপর ২০০৭ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফি চ্যানেল এক ডকুমেন্টারি তৈরি করে নিয়ে যায়। এগুলোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য- আকারে এই কচ্ছপ অনেক বড় হয় এবং ওজনও নাকি বেশি হয়।দেড়শো থেকে সাড়ে তিনশো কচ্ছপের আবাস রয়েছে বলে ধারণা করা হয় এই দীঘিতে। প্রজনন মৌসুমে সংরক্ষিত স্থানে এদের ডিম পাড়ার ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে ১২৫ টি বাচ্চা সংরক্ষিত এলাকায় আছে যা বড় হলে পুকুরে আনা হবে, বলা হয় এই কচ্ছপগুলোর অনেকেই বয়স প্রায় ২০০-২৫০ বছর। ওজনেও এক-একটি কয়েক মণ। এদের প্রধান খাবার মাজারে আসা দর্শনার্থীদের দেওয়া বনরুটি কলা। বর্তমানে করোনা কালে দর্শনার্থীর সংখ্যা কম হওয়ায় খাদ্য সংকটে ভুগছে বলে জানান এখানকার স্থানীয়রা।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আর নিউজ
© All rights reserved ©paharkantho.com-২০১৭-২০২৫
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD
jp-354c8c03daee477a362a