নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পার্বত্য চট্টগ্রামের রাষ্ট্রবিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নির্মূলে যৌথবাহিনীর অভিযান অব্যাহত রাখা ও মৃত আইন হিলট্র্যাক্স রেগুলেশন-১৯০০ শাসনবিধি বাতিল ও লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি’র) নেতাদের প্রাণনাশের হুমকি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে- সংবাদ সম্মেলন করেন পিসিএনপি
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সদরে গ্র্যান্ড ভ্যালী রেস্তোঁরা এই সংবাদ সম্মেলন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মোঃ মজিবর রহমান লিখিত বক্তব্যে বলেন,স্বাধীন সার্বভৌম ও অখন্ড বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পার্বত্য চট্টগ্রামে এতোদিন ইউপিডিএফ ও জেএসএস এর চাঁদাবাজি,গুম,খুন, অপহরণসহ বিভিন্ন নির্যাতনের স্বীকার হয়ে আসছিল পার্বত্যবাসী। নতুন কেএনএফ (কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট) এর অভয়ারণ্য সৃষ্টি হয়েছে পার্বত্য অঞ্চল। এই নিয়ে জনমনে অস্থিরতা বিরাজমান এবং আতঙ্কে রয়েছে সমস্ত পার্বত্য অঞ্চল।
কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রায় অর্ধেক ভূমি নিয়ে পূর্ণ স্বায়ত্ত্বশাসন ক্ষমতাসহ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কুকি-চিন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করার পায়তারা করছে। তারই ধারাবাহিকতায় বান্দরবানে একের পর এক খুন, গুম, চাঁদাবাজি, হত্যা,রাহাজানি এবং নিরাপত্তাবাহিনী ও সাধারণ মানুষের লাশ ঝরতে দেখা গিয়েছে। মূলত পার্বত্য অঞ্চলকে দ্বিখন্ডিত করার নীল নকশা আঁকছে এই বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কেএনএফ।
দেশমাতৃকার স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে পার্বত্য চট্টগ্রামে যৌথবাহিনীর সাড়াশি অভিযান অব্যাহত রেখে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ও অন্যান্য বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী নির্মূল করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট জোর দাবী জানান।
এসময় তিনি আরো বলেন,পার্বত্য শাসনবিধি-১৯০০ এমন একটি ‘মৃত আইন’ যেটি এ অঞ্চলের সরকার ও বাঙ্গালিদের ভূমি অধিকার খর্ব করে এবং এ অঞ্চলের সেনাবাহিনী তথা আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কার্যক্রমের উপর প্রভাব ফেলে। তথাকথিত শাসনবিধির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের সবধরনের ভূমির মালিক উপজাতিরা। এই মৃত আইনের ক্ষমতাবলে হেডম্যান-কার্বারী ও সার্কেল চীফ সৃষ্টি। প্রথাগত ভূমি অধিকার উপজাতীয়দের এ অঞ্চলের সব ভূমির উপর অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে। এই শাসনবিধিকে আইন হিসেবে রায় বলবৎ করলে অচিরেই পার্বত্য চট্টগ্রামের সবধরনের ভূমির নিয়ন্ত্রণ হারাবে রাষ্ট্র। সুতরাং ব্রিটিশদের তৈরি করা প্রহসনের মৃত আইন পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি-১৯০০ অবিলম্বে বাতিলের দাবী জানান।
তিনি বলেন, বান্দরবান পার্বত্য জেলার লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি)’র নেতা কর্মীদের মারধর, প্রাননাশের হুমকি ও মিথ্যা মামলা করা হয়। আলীকদম ও লামা উপজেলায় নির্বাচনের ২/১ দিন আগে থেকেই আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর কর্মীগণ অন্যান্য স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদেরকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি ও মারধর করে আসছে। নির্বাচনের পরে আলীকদমের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালামের কর্মীদের মারধর করা হয় এমনকি তার ভাইয়ের ছেলেকে ছুরি মেরে গুরুত্বর আহত করা হয় এবং সে এখন কক্সবাজার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। তারা শুধু ছুড়ি মেরেই ক্ষ্যান্ত হয়নি উল্টো তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। লামা উপজেলাতেও স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকের হোসেন মজুমদারের নিজ এলাকা ফাঁসিয়াখালীতে মোস্তফা জামালের কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মী নিজেদের পোস্টার নিজেরা ছিড়ে উল্টো প্রার্থী জাকের হোসেন মজুমদারকে ১নং আসামী করে প্রায় ৪০জনকে আসামী করা হয় এবং আরো বহু অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে মামলা করা হয়।
গত ২১ মে অর্থাৎ নির্বাচনের দিন প্রার্থী মোস্তফা জামাল নির্বাচনী মাঠ ছেড়ে বিকাল ৩ ঘটিকার সময় প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ এনে তার নিশ্চিত ভরাডুবি জেনে জনসম্মুখে ও সোস্যাল মিডিয়ায় প্রশাসনকে বিষোদগার করেন এবং আমাদের নাগরিক পরিষদ এর কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, লামা প্রেসক্লাবের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান ও প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এম. রুহুল আমিনকে প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকি দেন। তিনি কুলাঙ্গারের মত অত্যন্ত নিম্নমানের ভাষা ব্যবহার করেন।
হঠাৎ করে নির্বাচনের ফলাফল তার পক্ষে গেলে তাৎক্ষনিকভাবে নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নির্বাচনোত্তর সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন এবং আমাদেরকে প্রতিহত করার প্রকাশ্যে হুমকি প্রদান করেন।এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সকলের নিকট সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করছি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে আমাদের সহযোগিতা করার জন্য সকল সাংবাদিক ভাইদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নাগরিক পরিষদ চেয়ারম্যান,কাজী মোঃ মজিবর রহমান,সহ সাধারণ সম্পাদক,এম রুহুল আমিন,জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক,মোঃ নাছির উদ্দিন,কেন্দ্রীয় নাগরিক পরিষদের দপ্তর সম্পাদক মোঃ শাহজালাল,লামা উপজেলা নাগরিক পরিষদ সাধারণ সম্পাদক,কামরুজ্জামান ও বান্দরবান জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ