পাহাড়ের অপার সৌন্দর্য আর বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির সাথে এখানে বসবাস করে বহু জাতি-গোষ্ঠীর মানুষ। পার্বত্য জনপদে খেলাধুলা শুধু বিনোদনের উপকরণ নয়, বরং ভ্রাতৃত্ব,শান্তি ও সম্প্রীতির সেতুবন্ধন। তরুণ প্রজন্মের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা যেমন অপরিহার্য, তেমনি পার্বত্য অঞ্চলের মতো অনন্য পরিবেশে এটি সামাজিক ঐক্য ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়।
এই প্রেক্ষাপটে সোমবার ২০ আগস্ট বিকেলে বান্দরবান জেলা স্টেডিয়ামে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হলো “সেনা রিজিয়ন কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা–২০২৫”-এর সদর উপজেলার ফাইনাল খেলা।
দ্বিতীয় স্থান অধিকারী বালাঘাটা একাদশের সাথে উপস্থিত অথিতি
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেঃ কর্নেল এ এস এম মাহমুদুল হাসান, পিএসসি, জোন কমান্ডার, বান্দরবান জোন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জনাব মোঃ আব্দুল করিম,অতিরিক্ত পুলিশ সুপারও(প্রশাসন) বান্দরবান।
সভাপতিত্ব করেন মেজর এম এম ইয়াসিন আজিজ,সাব-জোন কমান্ডার, রোয়াংছড়ি উপজেলা ও টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিটির সভাপতি। যিনি শুধু একজন সেনা কর্মকর্তা নন,বরং বেসামরিক পরিমণ্ডলেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। শিক্ষা, সম্প্রীতি ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে তাঁর ভূমিকা সর্বত্র প্রশংসিত।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন—আমিনুল ইসলাম বাচ্চু,সভাপতি,বান্দরবান প্রেস ক্লাব। আজহারুল ইসলাম বাবুল, সভাপতি, বান্দরবান সম্মিলিত ক্রীড়া পরিষদ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি লেঃ কর্নেল এ এস এম মাহমুদুল হাসান,পিএসসি বলেন, “খেলাধুলা জাতীয় জীবনে অনন্য ভূমিকা পালন করে। এটি যুবসমাজকে মাদক, সন্ত্রাস ও অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে দূরে রেখে শৃঙ্খলাবদ্ধ ও সুস্থ জীবনযাপনে অনুপ্রাণিত করে। পাহাড়ের এই মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে ফুটবল শুধু একটি খেলা নয়—এটি পারস্পরিক সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ব এবং ঐক্যের প্রতীক। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো প্রত্যন্ত দুর্গম পাড়া-গাঁ থেকে মেধাবী ও দক্ষ খেলোয়াড় তৈরি করে জাতীয় পর্যায়ে উপস্থাপন করা।
তিনি আরও বলেন,“জাতি,বর্ণ,ধর্ম নির্বিশেষে আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের জন্য কাজ করব—এটাই হওয়া উচিত আমাদের অঙ্গীকার। খেলাধুলার এই মিলনমেলা তরুণ প্রজন্মকে শুধু ক্রীড়াবিদ হিসেবেই নয়, দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবেও গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।
আয়োজক কমিটির সদস্যরা বলেন, সেনাবাহিনীর সহায়তা ও স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় এই টুর্নামেন্ট সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তাদের আশা, আগামীতে আরও বৃহত্তর পরিসরে প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হবে যাতে পাহাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা সুযোগ পায়।
চরইপাড়া একাদশ ও বালাঘাটা একাদশ এর মধ্যকার ফাইনাল খেলায় টান টান উত্তেজনায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোন গোল না হওয়ায় ট্রাইবেকার অনুষ্ঠিত হয় ট্রাইবেকারে ৩-১ গোলে চড়ুই পাড়া একাদশ বিজয়ী হয়। খেলা শেষে বিজয়ী ও রানার আপ দলের হাতে ট্রফি ও পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় ও উচ্ছ্বাসে ফাইনাল ম্যাচটি পরিণত হয় এক মিলনমেলায়,যা পাহাড়ি জনপদের খেলাধুলার ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
কুকিচিনের অত্যাচারে পালিয়ে যাওয়া পুনর্বাসিত বম পরিবারের পাশে সেনাবাহিনী