পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধিঃ যৌতুকের টাকার জন্য সারা রাত স্ত্রীকে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে রাখে খাটের সাথে। নির্দয় ভাবে পিটিয়ে শরীর থেঁতলে দিয়েছে। একটু পানির জন্য ছটফট করেছে কিন্তু পানি দেয়নি। সেহেরী খেতে কাকুতি মিনতি করে। কিন্তু খেতে দেয়নি। রোজাও রাখা হয়নি তার। কত নিষ্টুর হলে এমনটি করতে পারে। এটা এক পাষন্ড স্বামীর কান্ড তার স্ত্রীর প্রতি। স্থানীয়রা উদ্ধার করে নব বিবাহিতা ওই গৃহবধূকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
২৫ এপ্রিল ও ২৪ এপ্রিল বারবাকিয়া ইউনিয়নের আন্নরআলী পাড়ায় দুদফা এ ঘটনা ঘটে। জখমীর একটি ছবি বুধবার সোস্যাল মিডিয়ায় আপলোড হলে নজরে আসে। তোলপাড় শুরু সর্বত্রে। গৃহবধূর নাম কাউছার জন্নাত (২১)। তিনি আন্নর আলী পাড়া এলাকার মো.জয়নাল মিয়ার স্ত্রী।
স্থানীয় সুত্র জানায়, যৌতুক চাওয়া নিয়ে কাউছার জন্নাত ও স্বামী জয়নাল মিয়ার মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এর জেরে স্বামী জয়নাল মিয়া স্ত্রী কাউছার জন্নাতকে দুদিন ধরে কয়েক দফা মারধর করে।
মারধর করে ক্ষান্ত হননি,তাকে বাড়ির একটি কক্ষে খাটের সাথে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে আটকিয়ে রাখে। রমজান মাসে সেহেরীর সময়ে রোজা রাখতে খাবার খোঁজছিলেন। কিন্তু স্বামীসহ শাশুড়বাড়ীর লোকজন তাকে রোজাও রাখতে দেননি।
গৃহবধূ কাউছার জান্নাত জানান, চার মাস আগে আমার বিবাহ হয়েছে। আমার পিতা রাহমত উল্লাহ বিয়ের সময় প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা খরচ করেন। দুই লক্ষ টাকা যৌতুক দিয়েছিলেন। এরপর পিতার টাকা থেকে স্বর্ণালংকার, আসবাবপত্র ও কাপড় চোপড়সহ বিয়ের আনুসাঙ্গিক ব্যয়ভার বহন করে। এক মাসের ব্যবধানে আমার স্বামী মো.জয়নাল মিয়া যৌতুকের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। যৌতুক না পেয়ে আমাকে বার বার মারধর করা হয়েছে। আমি কয়েকবার পিতার বাড়িতে থেকে গিয়েছিলাম। সংসার রক্ষার জন্য বার বার এসেছি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কয়েকবার বিষয়টি সমাধান করেন। সম্প্রতি একই দাবীতে আমাকে বার বার মারধর করা হচ্ছে। দুদফা নিষ্টুরভাবে পিটিয়ে মারাত্বক জখম করে। পিপাসায় ছটফট করেছি,পানি দেয়নি। রোজা রাখার জন্য সেহেরী খেতে দেয়নি।
শিলখালী ইউপির সদস্য শাহাব উদ্দিন জানান, মেয়েটির সর্বশরীরে জখম করা হয়েছে। একজন মেয়ে অপরাধ করলেও এ ভাবে মারতে হবে সেটি দেখে অবাক হয়েছি। শিলখালীর স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা আ’লীগ নেতা বশির আহমদ জানান, ওরা কি মানুষ নাকি জানোয়ার?। নিষ্টুরভাবে পেটানো হয়েছে। থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
ওসি সাইফুর রহমান মজুমদার জানায়, লিখিত অভিযোগ পেয়ছি। একজন এসআইকে এর দায়িত্বভার ন্যস্ত করা হয়েছে। উল্লেখ্য কাউছার জন্নাতের বাপের বাড়ি শিলখালী ইউনিয়নের মুন্সীমুরা এলাকায়।