পেকুয়া(কক্সবাজার)প্রতিনিধিঃসৌন্দর্যবর্ধন ও বসতবাড়ি সুরক্ষার জন্য ভিটেবাড়িতে সকালে ঘেরাবেড়া দিয়েছিলেন ব্যবসায়ী। কিন্ত তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। মাত্র ৭ঘন্টার ব্যবধানে দুপুরে একদল ভাড়াটে লোকজন নিয়ে একজন শিক্ষক তান্ডব চালিয়ে তা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের পেকুয়ায় সোমবার (২৬ এপ্রিল) সদর ইউনিয়নের শেখেরকিল্লাঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শিক্ষক ও ব্যবসায়ীর লোকজনের মধ্যে দুদফা ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া হয়েছে।
খবর পেয়ে পেকুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন মুহুর্তে দুপক্ষের মধ্যে বড় ধরনের সংঘাতের শংকা করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানায়,পেকুয়ায় ডিসি সড়কে জায়গা নিয়ে পেকুয়া আদর্শ মহিলা দাখিল মাদরাসা পরিচালনা কমিটি ও পেকুয়া বাজারের পপুলার ফার্মেসীর মালিক বারবাকিয়া ইউনিয়নের ফাঁসিয়াখালীর বাসিন্দা মোস্তাক আহমদের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘ দিনের। কয়েকদফা বৈঠকও হয়েছে তাদের মধ্যে। কিন্তু সুরাহ হয়নি। বর্তমানে জায়গার আধিপত্য নিতে উভয়পক্ষ এখন মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ১০/১২ জনের মুখোশধারী লোকজন সিনেমা ষ্টাইলে এসে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ব্যবসায়ী মোস্তাক আহমদের বসতভিটার ঘেরাবেড়া ভাংচুর করে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এ সময় তারা ব্যাপক তান্ডব চালায়। এটি সিনেমার কাহিনীকেও হার মানিয়েছে। এ সময় সামনে থেকে নেতৃত্বে দিয়েছেন মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মৌলানা কামাল হোসেন। তারা জানায় সকালে বসতভিটার ঘেরাবেড়া দিয়েছিল মোস্তাক আহমদ।
মোস্তাক আহমদের ছেলে কায়েস জানায়,খরিদ সুত্রে বসতবাড়ির জায়গায় স্থাপনা নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করি। টিনের ঘেরা দিয়েছি। দুপুরের মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মৌলানা কামাল হোসেনের নেতৃত্বে লোকজন ঘিরা বেড়া ভাংচুর ও তান্ডব চালায়। তবে এ নিয়ে পরষ্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।
মাদ্রাসার প্রতিষ্টাতা সাবেক পরিচালক ও বর্তমান সভাপতি মৌলানা কামাল হোসেন জানায়, একদল দুবৃর্ত্তরা ভোরে মাদরাসার জায়গায় অনুপ্রবেশ করে জায়গা জবর দখল করে সেখানেই টিনের ঘিরা দিয়ে স্থাপনা নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করার চেষ্টা চালায়। মাদরাসার পক্ষে প্রতিবেশীরা এসে এ কাজে বাধা দিয়েছে। মাদরাসার যাতায়াতের প্রস্তাবিত সড়ক বন্ধ করে দেয়ার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। অপরদিকে মোস্তাক আহমদ জানায়,ডিসি সড়কের পাশে বাইশ বছর আগে ষোল শতক জমি খরিদ করি। জায়গায় সংষ্কার কাজ চলমান রয়েছে। মাটি ভরাট করে সেখানে তারা বসতবাড়ি নির্মাণকাজ আরম্ভ করবেন। মাদরাসার উত্তর পাশে আমাদের দক্ষিণ সীমানায় সৌন্দর্যবর্ধন ও সুরক্ষার জন্য টিনের ঘেরাবেড়া দিই। কামাল হোসেন ভাড়াটে লোকজন নিয়ে দিন দুপুরে আমাদের ঘিরা বেড়া ভাংচুরসহ ব্যাপক লুটপাট চালায়।
তিনি আরো জানায়, পেকুয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদ গ্রাম আদালতে কামাল হোসেনের দায়ের করা মামলার রায় আমার পক্ষে প্রচার করে। ষোল শতক জায়গার মধ্যে ভোগ দখলে আছে এগার শতক। এক শতক জায়গা সড়ক নির্মাণে গেছে। আরো পাঁচ শতক জায়গা এখনো পাইনি। আমার জায়গার উপর লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে কামালের। মাদরাসার জন্য যারা জমি দিয়েছে ওই জমি কামাল হোসেন স্ত্রী ও মেয়ের নামে পরবর্তীতে কবলা নিয়ে ফেলেছে। এটি মাদরাসার স্বার্থ নয়। ব্যক্তি স্বার্থের জন্য আমাকে হয়রানি করছে।
পেকুয়া থানার ওসি (তদন্ত) কানন সরকার জানান, বিষয়টি আমাদেরকে জানানো হয়েছে। পুলিশ গিয়েছিল। তারা সমাধান করতে চাইলে পারবেন। না হয় কোর্টে গিয়ে নিস্পত্তি করার জন্য বলা হয়েছে।