নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও রামুর ত্রাস বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত মাফিয়া ডাকাত শাহীন গ্রুপের চোরাচালান শাখার প্রধান ও একাধিক মামলার আসামি নুরুল আবছারকে ৫টি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারের পর ১১ বিজিবির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে চোরাকারবারীরা।
আটককৃত নুরুল আবছার (শাহীন ডাকাতের বিশ্বস্ত সহযোগী) এর বিরুদ্ধে পূর্বের একাধিক মামলা রয়েছে। ইয়াবা মামলায় পলাতক (মামলা নম্বর-১৩, তারিখঃ ২১ জুলাই ২০২৫), ২০২৩ সালে চেক জালিয়াতি (মামলা নম্বর-৩২৬/২৩, তারিখঃ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩) এবং ২০২২ সালে মারামারির মামলায় অভিযুক্ত (মামলা নম্বর-৩৪, তারিখঃ ২০ অক্টোবর ২০২২) এবং ২০২৪ সালে আবু তালেব হত্যাকাণ্ডে জড়িত। রামু থানার মামলা নং ২০/২৫৫, তারিখ ১১/০৫/২০২৪, ধারা-৪৪৭/৪৪৮/৩৬৪/৩০২/৪২৭/৩৪। সে ডাকাত শাহীনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং তার ব্যবস্থাপক হিসেবে মাদক, অস্ত্র ও গরু চোরাচালানে সক্রিয় ছিল বলে জানাযায়।
গেল ৫ জুন ২০২৫ তারিখে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও র্যাব এর যৌথ অভিযানে কুখ্যাত চোরাকারবারি, সন্ত্রাসী শাহীন ডাকাতকে অস্ত্রসহ এবং একই সাথে ৩১ টি গরু ও একটি ছাগল আটক করা হয়। শাহিন ডাকাত ও সহযোগীদের থানায় মামলা করতঃ কারাগারে প্রেরণ করা হয় এবং আটককৃত গবাদি পশু বিজিবির তত্ত্বাবধানে কাস্টমস কর্তৃক নিলাম করে সরকারি কোষাগরে টাকা জমা করে।
বিজিবি, র্যাব এবং সেনাবাহিনী শাহিন ডাকাতের সহযোগীদের নিকট রক্ষিত অস্ত্রসমূহ উদ্ধারে শক্তিশালী চোরাকারবারি চক্রের উপর অধিকতর গোয়েন্দা নজরদারি, বিশ্লেষণ ও জিজ্ঞাসাবাদে নুরুল আবছার, রুবেল, ইকবালসহ কয়েকজনের নাম জানা যায়। ইতিমধ্যে রুবেল, ইকবালসহ বেশ কয়েকজন সেনাবাহিনী ও র্যাবের বিশেষ অপারেশনের মাধ্যমে গ্রেপ্তার হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক শাহীন ডাকাতের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের মধ্যে নুরুল আবসারের কার্যক্রম নজরদারি আওতায় ছিল। বিজিবির মাদকবিরোধী তৎপরতায় সীমান্ত এলাকায় উদ্ধারকৃত ইয়াবা চোরাচালানে জড়িত থাকায় উক্ত চোরাকারবারি নুরুল আবছারসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে গত ২১ জুলাই ২০২৫ তারিখে থানায় মামলা করা হয়।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে, বিজিবি গত ২৯ জুলাই ভোরে ১১ বিজিবি’র বিশেষ টহল দল গর্জনিয়া ইউনিয়নের বোমাংখিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে ফরিদুল আলমের ছেলে নুরুল আবছার (৩৮) কে আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদসহ আটক করে। এসময় ৫টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৮ রাউন্ড গুলি, ৬টি খালি খোসা এবং ১টি মোবাইল পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে রামু থানায় মামলা দায়ের করা হয় (মামলা নম্বর-৭৪, তারিখঃ ২৯ জুলাই ২০২৫)।
ডাকাত শাহিনের শক্তিশালী চক্রের পরামর্শে চোরাচালান তৎপরতা চালু ও সক্রিয় রাখতে সীমান্তে বিজিবির চোরাচালান বিরোধী কার্যক্রমকে দমাতে অপতৎপরতার পরিকল্পনা করছে একটি গোষ্ঠী। বিজিবি কর্তৃক চোরাচালানবিরোধী কার্যক্রম চলমান থাকবে বিধায় নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকায় শক্তিশালী চোরাচালান নেটওয়ার্ক সংঘবদ্ধভাবে বিজিবির কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য গণমাধ্যমে মিথ্যে খবর ছড়িয়ে তৎপরতা শুরু করেছে। শাহীন ডাকাত গ্রেফতারের পর সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান ও সন্ত্রাসী তৎপরতা বহুলাংশে কমেছে। বর্তমানে নিরুপম শর্মা মিতু ও নুরুল আবছার সম্মিলিতভাবে শাহিন ডাকাতকে জামিনে মুক্তি, তাদের যৌথ অবৈধ ব্যবসায়িক কার্যক্রম, বালু মহাল, চোরাচালান এবং অন্যান্য অবৈধ ব্যবসা চলমান রাখতে, বিজিবির আভিযানিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করে নিজেদের সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য বিজিবির বিরুদ্ধে গুজব ও অপপ্রচারের পরিকল্পনা করছে।
বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার মাধ্যমে আইন প্রয়োগ ও বিচারকে বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে বিজিবির বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা করে চোরাচালান নেটওয়ার্ককে পুনরায় সক্রিয় এবং চোরাচালান বিরোধী কার্যক্রমের উৎসাহকে বিভ্রান্ত ও প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে বলে জানা যায়।
শাহীন ডাকাত ও তার সহযোগী নুরুল আবছারের গ্রেফতারের ফলে সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে স্থানীয় জনগণের মধ্যে স্বস্তি ও নিরাপত্তা ফিরে এসেছে। সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে এই চক্রের কারণে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছিল। এখন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে জনমনে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
শাহীন ডাকাত চক্রের অবশিষ্ট সদস্যরা বিভ্রান্তিমূলক প্রচার ও গুজব ছড়িয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটানোর অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় সচেতন মহল সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান করেছে।
সীমান্তে বিজিবি নিরাপত্তা ও চোরাচালান দমনে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
আরো পড়ুন→বান্দরবানের ঘুমধুম ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান কারাগারে