কক্সবাজার শহরের সাহিত্যিকা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিনা আকতারের মানসিক নির্যাতনে সহকারী শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনায় শোক প্রকাশ ও নিন্দা জানিয়েছেন লামা উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দরা।
নিহত সহকারী শিক্ষিকা শাকিলা মনছুর এর মৃত্যুর বিষয়টি সঠিক তদন্ত পূর্বক দোষীদের আইনের আওতায় আনার অনুরোধ করেছেন লামা উপজেলা সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি জসিম উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল ইসলাম খোকা।
জানা যায়, ঘটনার দিন ২২ আগস্ট (সোমবার) শাকিলা মনছুর সকাল ১০টার দিকে স্কুলে হাজিরা দিয়ে প্রধান শিক্ষক সেলিনা আক্তারের কাছ থেকে ভোটার কার্যক্রমের শেষ দিনের কাজ বুঝিয়ে দিতে বাইরে যাওয়ার অনুমতি চান। সেলিনা তার আবেদন গ্রাহ্য না করে ক্লাস নেওয়ার নির্দেশ দেন। তাঁর কথার প্রেক্ষিতে ভোটার ফরম জমা দেয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরেন শাকিলা।
এমতাবস্থায় প্রধান শিক্ষক শাকিলাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল দিতে থাকেন। ঘটনার এক পর্যায়ে শাকিলা এরুপ আচরণ সহ্য করতে না পেরে স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির ঘরে বিচার চাইতে যান। সভাপতির ঘরে ঢোকার আগে গেইটে মাটিতে পড়ে যান তিনি। সভাপতির স্ত্রী এসে শাকিলাকে ধরাধরি করে ঘরে নিয়ে সেবা শশ্রুষা দেন।
তখন শাকিলা জানান, প্রধান শিক্ষক তাকে খুব খারাপ ভাবে গালাগাল দিয়েছে, তার সহ্য করতে না পেরে স্কুল থেকে বেরিয়ে এসেছেন তিনি। কথা বলার একপর্যায়ে শাকিলা আবারও জ্ঞান হারান। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শাকিলার ছোট বোন তানজিলা মনছুর মিলকী সাংবাদিকদের বলেন, ভোটার হালনাগাদ কাজে নিযুক্ত হওয়ার পর স্কুলে পূর্ণ ক্লাস করাতে পারছেনা বলে প্রধান শিক্ষিকা সেলিনা আকতার আমার বোনকে মানসিকভাবে হয়রানি করে আসছিল। প্রধান শিক্ষিকা একই স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের সামনে অনেক বার আমার বোন শাকিলাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে। আমার বোন মানসিক নির্যাতনের শিকার। আমার বোনের উপর অনৈতিক ও অমানবিক আচরন করা হয়েছে।
এ মৃত্যুর ঘটনায় মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. সাইফুর রহমানকে প্রধান করে দুই সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. বেলাল হোছাইন এবং মো. হানিফ মিয়াকে নিয়ে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাইফুর রহমান বলেন, আসলে একজন শিক্ষকের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছে তা তদন্ত করার জন্য ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমি নিজে ওই কমিটির প্রধান। বুধবার (২৪ আগস্ট) সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকা সেলিনা আকতারের বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, তদন্তে প্রমাণিত হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।