পেকুয়া প্রতিনিধিঃপেকুয়ায় ফজলুল করিম সাঈদীর হুমকি ধমকি উত্তাল হয়েছে উজানটিয়া। সুন্ঠু ভোট নিয়ে দেখা দিয়েছে শংকা। হুমকির জের ধরে উপকুলবর্তী উজানটিয়া ইউনিয়নে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকসহ সর্র্বত্রে নিন্দার ঝড় উঠেছে। হুমকির ওই ঘটনায় একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে হুমকি দাতা চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। উজানটিয়া ইউপির স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী রবিউল করিম রুবেল বাদী হয়েছেন। ২৪ নভেম্বর(বুধবার)সন্ধ্যা ৭ টার দিকে পূর্ব উজানটিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী সমাবেশ অনুষ্টিত হয়। ওই সমাবেশ থেকে হুমকির এ ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা ওই দিন সন্ধ্যায় আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা মার্কার মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী এম, শহিদুল ইসলামের সমর্থনে নির্বাচনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় বক্তব্য দেন চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী। বক্তব্যে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে ভোট দেয়ার আহবান জানান। এ সময় সাঈদী হুংকার দিয়ে বলেন, নৌকার বিপক্ষে যারা প্রার্থী হয়েছেন এদেরকে এখান থেকে পিটিয়ে তাড়াতে হবে। ছাত্রলীগ,যুবলীগের নেতা-কর্মীরা মাঠে থাকবে।জেলা আ’লীগ এসেছে। আমিও এসেছি। একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে দাড়িয়েছেন। ঘাড় ভেঙ্গে দেব। কত বড় সাহস শেখ হাসিনার নৌকার সাথে বিয়াদবী করছিস। নৌকার বাইরে ভোট করার সাহস তোকে কে দিয়েছে। স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী তোফাজ্জল করিমকে উদ্দেশ্য করে ফজলুল করিম সাঈদী বলেছেন, আরএস,বিএস নেই তোফাজ্জলের। বাড়ি ঘর ঠিক নেই এমন ব্যক্তিকে কেন আপনারা ভোট দিয়ে চেয়ারম্যান বানাবেন।
আরেক প্রার্থী আনোয়ার হোসেন এমজারুলকে উদ্দেশ্য করে জনসভা থেকে হুমকি দেন ফজলুল করিম সাঈদী। এমজারুল চাষার ছেলে। চেয়ারে বসে চেয়ারম্যানী করা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ওই বক্তা। চেয়ারম্যানী করা দেখিয়ে দেব। এ দিকে নির্বাচনী সমাবেশ থেকে এ ধরনের হুমকি ধমকি নিয়ে উজানটিয়া ইউনিয়নে উত্তপ্ত হয়েছে নির্বাচনী মাঠ। ফজলুল করিম সাঈদীর ওই আচরণের তীব্র সমালোচনা চলছে উজানটিয়ায়। জনগন এ ধরনের হুমকিতে উদ্বিগ্ন হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকেও উঠেছে নিন্দার ঝড়। ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মহিউদ্দিন হৃদয় ওই হুমকির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
তার ফেইসবুক আইডি থেকে মহিউদ্দিন লিখেছেন, বহিরাগতরা এসে উজানটিয়ায় বিশৃংখলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শংকায় আছি। আ’লীগ নেতা নাছির উদ্দিনও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। সাঈদীসহ বিশৃংখলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে যুবলীগ নেতা এটিএম মিজবাহ উদ্দিন, আ’লীগ নেতা আবু তৈয়ব, এম,ডি সলিম লিখেছেন, ফজলুল করিম সাঈদী বহিরাগত।উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হওয়া স্বত্তেও তিনি এ ধরনের বক্তব্য দিতে পারেননা। উস্কানীমূলক বক্তব্য হচ্ছে নির্বাচনী পরিবেশকে নষ্ট করা।
এ দিকে ২৪ নভেম্বর(বুধবার)চেয়ারম্যান প্রার্থী এম, তোফাজ্জল করিমের গণমিছিল ও পথসভা অনুষ্টিত হয়। বিকেলে সোনালী বাজারে নির্বাচনী সমাবেশে হাজার হাজার কর্মী-সমর্থকের উপস্থিতিতে প্রার্থী তোফাজ্জল করিম ২৮ নভেম্বর চশমা মার্কায় ভোট দিয়ে উজানটিয়ার জনগনকে জিম্মী দশা থেকে মুক্ত হওয়ার আহবান জানান। জনগনকে উদ্দেশ্য করে চশমা প্রতীকের প্রার্থী তোফাজ্জল করিম বলেন, মানুষ ভোট বিপ্লব ঘটাবে। চশমা প্রতীকের জয় সুনিশ্চিত। কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষ আজকে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। যে প্রার্থী গরীবদের হিংসা করে তাচ্ছিল্য করেন এবার তাকে বয়কট করতে হবে। আমি গরীবের সন্তান। ধনী ও দরিদ্রের বৈষম্যের অবসান দেখতে চাই। ২৮ নভেম্বর আপনারা উন্নয়নের জন্য আমাকে চশমা প্রতীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। দু’একটি ভোট কেন্দ্র নিয়ে জনগন শংকা প্রকাশ করছেন।
৭ নং ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্রটি অধিক ঝুঁকিপূর্ন দাবী করে চেয়ারম্যান প্রার্থী তোফাজ্জল করিম বলেছেন, ১৯৭৩ সালের পর থেকে ওই কেন্দ্রে মানুষ অবাধ ভোট দিতে পারেননি। প্রায় সময় ওই কেন্দ্রে পেশী শক্তির প্রভাব বিস্তার হয়। প্রত্যেক নির্বাচনে শহীদ চেয়ারম্যানের পরিবার কেন্দ্রটিতে প্রভাব বিস্তার করতে থাকে। জনগনের ভোটাধিকার হরণ করা হয় ওই কেন্দ্রে। আমি ওই কেন্দ্রে সুষ্ঠু ভোট গ্রহণের জন্য প্রশাসনের কঠোর নজরদারী বাড়ানোর পক্ষে।