পেকুয়া প্রতিনিধিঃএখনো নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেননি নির্বাচন কমিশন। কয়েকদিন পরে হয়তো দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা আসতে পারে। তফসিল ঘোষণার গুনজনে নড়েছড়ে বসেছে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান, মেম্বর ও সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার পদপ্রার্থীরা। নির্বাচনী আগাম হাওয়া বইছে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে। সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে গত ২০ সেপ্টেম্বর টইটং ইউপিতে নির্বাচন শেষ হয়েছে।
এবারের নির্বাচনে প্রচার প্রচারনায় তরুনদের নজরকাড়ার মতো। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার প্রচারনায় ঝড় ওঠেছে। বলতে গেলে এক প্রকার সোশ্যাল মিডিয়ায় জায়গা করে নিয়েছে তরুনরা। পোস্টার, ব্যানার,ফেষ্টুনে ছেয়ে গেছে ছয় ইউনিয়নের অলিগলি। তরুনদের পদচারনায় নির্বাচনী হাওয়া শুরু হয়েছে পেকুয়ায়।
দোয়া ও সমর্থন চাই, অমুক ভাইকে চেয়ারম্যান, মেম্বার হিসেবে দেখতে চাই এ ধরনের লেখায় নানান রংবেরঙ্গের পোস্টার ও ব্যানারে সাজিয়ে তুলেছে অলিগলি,পাড়া মহল্লা। এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই নারী সম্ভাব্য প্রার্থীরাও। সমান তালে এগিয়ে চলছে তারা।
দস্থানীয়রা জানিয়েছেন,এবারের নির্বাচনকে সামনে রেখে তরুনদের প্রচার প্রচারনায় মুখরিত পেকুয়াজুড়ে। মোবাইল হাতে নিলে চোখে পড়ে তরুনদের প্রচারনার ছবি। ছাত্র, রাজনৈতিক ব্যক্তি, উদয়মান শিক্ষিত যুবক, ব্যবসায়ীরা এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হতে ইচ্ছাপোষণ করে প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে সাবেক চেয়ারম্যান, সদস্যরাও ভোট করতে আগ্রহ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
ভোটাররা জানান,আমরা শিক্ষিত ও ক্লিন ইমেজের প্রার্থী চাই। এবারের আগাম নির্বাচনী প্রচারনায় শিক্ষিত,তরুন, যুবকরাই এগিয়ে আছে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কারাই মাঠে থাকে।
দেখাগেছে,পেকুয়া সদরের চেয়ারম্যান প্রার্থী এডভোকেট রাশেদুল কবির পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে অগ্রিম ভোট প্রার্থনা করছেন। ওঠান বৈঠক, কর্মী সভা করে কুশল বিনিময় করছেন। ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষনে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
একইভাবে চেয়ারম্যান প্রার্থী সাংবাদিক জহিরুল ইসলামও সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। তার বেশিরভাগ সময় সদরের নিচু এলাকায় বৃহত্তর মেহেরনামায় পদচারনা। তিনি নৌকা প্রতীক প্রত্যাশী। তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
নৌকা মার্কা প্রত্যাশী উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আবুল কাসেম দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে মতবিনিময় করতে দেখা গেছে। নেতাকর্মীদের কাছ থেকে মতামত চাওয়া হচ্ছে। ভিতরে ভিতরে তিনি নেতাকর্মী গোঁছানোর প্রানপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কোমর বেঁধে নির্বাচন করার মনোবল নিয়ে নেতাকর্মীদের সক্রিয় করার চেষ্টা করছেন। তিনিও একজন হেভিওয়েট প্রার্থী। ভোটের মাঠে প্রচারনায় থেমে নেই উপজেলা যুবলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ওমর রিয়াজ চৌধুরী। তারুণ্যের অহংকার রিয়াজ নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী। সদর থেকে ভোট করার আগ্রহ প্রকাশ করছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন মুকুলও। বিএনপি সমর্থিত যুবদল নেতা ইউসুফ রুবেল নির্বাচনী প্রচারনায় শুরু থেকে মাঠে ময়দানে রয়েছে। সুযোগ পেলে তিনিও নির্বাচনে অংশ নিবেন।
বারবাকিয়া ইউপিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মো.বারেক আগে থেকে ব্যস্ত। তার রয়েছে একঝাঁক যুবক। প্রতি মহল্লায় পা পড়েছে তার। নৌকা মার্কা নিয়ে ভোট করতে ইচ্ছে তার। আগে থেকে ইউনিয়নকে গুঁছিয়ে রেখেছেন তার কর্মীবাহিনী দিয়ে। এখন গ্রামে গ্রামে দিয়ে একটু একটু নাড়া দিচ্ছেন। এখানে নৌকা প্রত্যাশী জেলা আওয়ামীগীগ সদস্য জিএম কাসেম ও শিলখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ওয়াহিদুর রহমান ওয়ারেচীও হেভিওয়েট প্রার্থী। পুনরায় ভোট করবেন বর্তমান চেয়ারম্যান বদিউল আলম জিহাদী। তিনি জামায়েত সমর্থিত প্রার্থী। এলাকাবাসি বলেন,মুল প্রতিদ্বন্ধিতা হবে বদিউল আলম জিহাদির সাথে। এলাকায় তার আলাদা ইমেজ রয়েছে।
রাজাখালী ইউপিতে এবারের নতুন মুখ তারুণ্যের অহংকার তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী সুজন। তিনিও ইদানিং সোচ্চার হতে দেখা গেছে। তিনি জনগনের কাছে কুশলাদি বিনিময় করে ভোট করার আগ্রহ প্রকাশ করছেন। বংশগতভাবে তার ঐতিহ্য রয়েছে। এছাড়া সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল ও বর্তমান চেয়ারম্যান ছৈয়দনুর, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন সম্পাদক এম,আকতার হোছাইন নৌকায় ওঠতে চান। এছাড়া বিএনপি সমর্থিত আরেক তরুন যুবনেতা জিয়াউল হক জিয়ারও চেয়ারম্যান পদে ভোট করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
উজানটিয়া ইউপিতে নৌকায় পা রাখতে চান তিনজন। নৌকা প্রতীক নিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরী, উজানটিয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি তোফাজ্জল করিম ও তারুণ্যে ভরপুর সাংবাদিক এম এম একরাম হোছাইন।
একঝাঁক তরুনে ভরপুর মগনামা ইউনিয়ন। সবচেয়ে বেশি তরুন চেয়ারম্যান প্রার্থী এ ইউনিয়নে। পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক সাংবাদিক ফরহাদ ইকবাল, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মমতাজুল ইসলাম, মগনামা ইউনিয়ন আ’লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদুল আলম, মগনামা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি সোলতান মুহাম্মদ রিপন চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মোজাম্মেল হক ও মগনামা ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি খায়রুল এনাম বিএ ও তরুন উদ্যেক্ততা নুরুল আমিন ভোট করার আগ্রহ পোষন করে। এরা সবাই নৌকায় হাত দিতে চান।
এছাড়া বর্তমান চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিমও একজন তরুন। নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানাগেছে তিনিও নৌকায় চড়তে আগ্রহী। সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুস চৌধুরীও ভোট করার কথা ছিল এ ইউনিয়নে। বর্তমানে একটি হত্যা মামলায় তিনি কক্সবাজার কারাগারে আছেন। এছাড়া বিএনপি সমর্থিত তৌহিদুল আলমও ভোট করবেন বলে জানান দিচ্ছেন।