পেকুয়া(কক্সবাজার)প্রতিনিধিঃ গত প্রায় পাঁচ বছর আগে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা জেটিঘাটে অবস্থিত জেলা পরিষদের মালিকানাধীন জায়গায় নির্মিত হয়েছে চার কক্ষ বিশিষ্ট মার্কেট। তিনটি কক্ষ জেলা পরিষদ ইজারা দেয়। একটি কক্ষ এবাদতের জন্য মুসল্লিদের জন্য উম্মুক্ত রাখে। মার্কেটটি এবাদতখানা মার্কেট নামে পরিচিত। ওই এবাদতখানায় প্রতিদিন মুসল্লিরা এবাদতবন্দেগীতে রত থাকে।
অভিযোগ ওঠেছে,এবাদত খানার একটি কক্ষ জেলা পরিষদ গোপনে এক প্রভাবশালী ব্যক্তিকে মাসিক ৪ শত টাকার বিনিময়ে ৫ বছরের জন্য ভাড়া দেয়া হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় মুসল্লিরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এবাদত খানার কক্ষ ভাড়ার চুক্তিপত্র বাতিলপূর্বক মুসল্লিদের এবাদতের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার জন্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন সচেতনমহল।
জানাগেছে,কক্সবাজার জেলা পরিষদ বিগত ৪/৫ বছর পূর্বে পেকুয়া উপজেলার মগনামা জেটিঘাটে সানলাইন বাস কাউন্টারের পাশে তাদের জায়গায় এবাদত খানা মার্কেট নামকরণ করে ৪ কক্ষ বিশিষ্ট একটি একতলা বানিজ্যিক মার্কেট নির্মাণ করে। মার্কেটে ওযুখানাসহ একটি কক্ষ পথচারী ও যাত্রীদের এবাদতের জন্য সংরক্ষিত করে রাখা হয়। মার্কেটে আরো তিনটি দোকান রয়েছে। এসব দোকান স্থানীয় তিন ব্যক্তির কাছে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। মুসল্লিদের ওযুর পানির সুবিধার্তে জেলা পরিষদ সেখানে একটি গভীর নলকূপও স্থাপন করেছিল। মার্কেট নির্মাণের পর থেকে এবাদত খানায় পথচারী ও যাত্রীরা নামাজের ওয়াক্ত হলে সালাত আদায় করতো। এবাদত খানা নির্মাণের কয়েক মাসের মধ্যে ওযুখানার পানির মোটরসহ নলকূপের সরঞ্জামাদি চুরি হয়। এরপর এবাদত খানায় সালাত আদায়ে সমস্যার সম্মুখীন হন মুসল্লিরা।
এবাদত খানার নলকুপ ও পানির মোটর চুরি হলেও জেলা পরিষদ কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। কিন্তু গত ০১/০২/২০১৮ ইংরেজী তারিখ কক্সবাজার জেলা পরিষদ এবাদত খানার ওই কক্ষটি পত্রিকায় ইজারা/ভাড়া দেওয়ার জন্য জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় কোন ধরনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করেই গোপনে মগনামা জেটিঘাটের এক ব্যক্তিকে ৫ হাজার টাকা সেলামীতে ৫ বছরের জন্য মাসিক ৪ শত ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়ে একটি চুক্তিপত্র করে ভাড়া দিয়ে দেয়। চুক্তিপত্রে জেলা পরিষদের পক্ষে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,কক্সবাজার জেলা পরিষদের কাছ থেকে এবাদত খানাটি ভাড়া নিয়ে ওই প্রভাবশালী ব্যক্তি সিহাব উদ্দিন নামের অপর এক ব্যক্তিকে মাসিক ২ হাজার টাকার বিনিময়ে ২০ হাজার টাকা সেলামীতে ভাড়া দিয়েছে। আর এবাদত খানাটি ভাড়া নিয়ে তার উপর আল মদিনা ফিশিং নামের মাছ ক্রয় বিক্রয়ের একটি প্রতিষ্টানের সাইনবোর্ড ঝুলানো অবস্থায় দেখা গেছে। সাইনবোর্ডে থাকা মোবাইল নাম্বারে জনৈক সিহাব উদ্দিন (ছোট) কে ফোন করা হলে তিনি এবাদত খানাটি ঘাট এলাকার এক ব্যক্তির কাছ থেকে উপ-ভাড়া নিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন।
মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম বলেন, এবাদত খানা ভাড়া দেওয়ার ঘটনা নিন্দনীয় ঘটনা। যেখানে পথচারী ও বাসের যাত্রীরা নামাজ আদায় করতো সেটি ভাড়া দেওয়ার ঘটনা বেমানান। তিনি এবাদত খানার কক্ষটি ভাড়ার চুক্তিপত্র বাতিলের জন্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নিকট দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।