কক্সবাজার ইন্টারন্যাশাল ইউনিভার্সিটি (সিবিআইইউ) জোরপূর্বক দখল করে,নানা দুর্নীতি ও প্রশাসনিক অনিয়মের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়কে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন আহমেদ’-এমন অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি বোর্ডের সেক্রেটারি লায়ন মো: মুজিবুর রহমান।
সোমবার(২ আগস্ট)দুপুরে চট্টগ্রামস্থ কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ট্রাস্ট অফিসে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন অভিযোগ করেছেন।
সালাহ উদ্দিন আহমদকে সাবেক চেয়ারম্যান হিসেবে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও অভিযোগ করেন, ২০১৩ সালে অনুমোদন নেয়ার পর সুন্দর পরিবেশে কার্যক্রম চালিয়ে গেছে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি (সিবিআইইউ) কর্তৃপক্ষ।কিন্তু হঠাৎ করে ২০২০ সালে ২ জুন নিজেকে প্রতিষ্ঠাতা দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয় দখল করেন ট্রাস্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন।
এরপরই প্রতিষ্ঠাতা ৯ জন সদস্যদের বাদ দিয়ে নিজের মনগড়া একটি ট্রাস্টিবোর্ড গঠন করে ট্রাজারকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। বেতন বন্ধ রাখায়ন অনেক শিক্ষক চাকুরি ছেড়ে চলে গেছেন। আর ব্যক্তিগত খরচকে বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ দেখিয়ে আর্থিক অনিয়ম করে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অভিভাবক মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো অভিযোগ করেন, অনিয়মের বিরুদ্ধে ইউজিসির একটি পরিদর্শক দল বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন ও তদন্ত করে নানা অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে এক বছরের জন্য শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার সুপারিশ করেছেন। একই সাথে মনগড়া ট্রাস্টিবোর্ড গঠন ও শিক্ষক নিয়োগের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম যুগ্ন-জেলা জজ ১ম আদালতে গত ১৮ ফেব্ররুয়ারী দখলদার সালাহউদ্দিন গং এর বিরুদ্ধে স্থিতাবস্থা জারী করে একটি মামলা দায়ের করি। বিজ্ঞ আদালত একই নামে আরেকটি ট্রাস্ট গঠন কেন অবৈধ হবে না তা ৩০ দিনের মধ্যে জানাতে বলেছেন। কিন্তু আদালতের কোন নির্দেশনা তারা মানছেন না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
লায়ন মুজিব বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রাক্কালে ২০১৩ সালে ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদন, প্রপোজাল বুক, ট্রাস্ট ডিড এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির বিভিন্ন নথিপত্রে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে লায়ন মো. মুজিবুর রহমানের নাম সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।
কক্সবাজার জেলার একমাত্র উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি লায়ন মুজিবুর রহমান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সালাহ উদ্দিন আহম্মেদ সিআইপি বলেন, মুজিব সাহেব সংবাদ সম্মেলনে যেসব অভিযোগ করেছেন-তা অনেক আগে থেকেই করে আসছেন। মূলত এসব অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই।
তিনি বলেন, আমাকে না জানিয়ে নিজের ভাই, স্ত্রী ও নিকট আত্মীয়দের নিয়ে মূলত তিনি একটি ভূঁয়া এফডিআর দেখিয়ে একটি ট্রাস্টিবোর্ড গঠন করেছিলেন। যেখানে আমার কোন স্বাক্ষর নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরে আমি একটি ট্রাস্টিবোর্ড গঠন করে আবেদন করি। যে আবেদনটি ডিজিএফআই, এনএসআই’র রিপোর্ট পেয়ে ইউনির্ভাসিটির অনুমোদন দেন সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষ। আগে অনেক কিছুই ছিলনা। এখন ধীরে ধীরে সবকিছু নিয়মের ভেতর নিয়ে আসা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টির সদস্য মাহবুবা সুলতানা, জসিমুল আনোয়ার খান, আবদুস সবুর ও আবদুল মাবুদ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।