বান্দরবানে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় রয়েছে একটি অবৈধ কাঠ পাচারকারী চক্র।
স্হানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন,মহিউদ্দিন ৫ আগস্ট আওয়ামিলীগ সরকারের পতন এর পর নিজেকে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেন। পরে নিজেকে ছাত্রদল নেতা পরিচয় দিয়ে চোরাইকাঠ প্রচারকারী চক্রের নেতৃত্বের দায়িত্ব নেন মাইনউদ্দিন।
জেলার সদর উপজেলার রেইছা ইউনিয়নের রোয়াজাপাড়া এলাকাবাসী জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে জোতপারমিট ছাড়াই অবৈধভাবে পাহাড়ের গাছ কেটে পাচারের সঙ্গে জড়িত।
কাঠব্যবসায়ী সমিতির সুত্রের তথ্যমতে,মাইনউদ্দিন বান্দরবান সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অবৈধ কাঠ পাচারকারী চক্রের সাথে সরাসরি জুড়িত, তিনি কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য নন।অবৈধভাবে পাহাড়ি অঞ্চলের বাগান ও বন কেটে কাঠ সংগ্রহ করে জেলার ভেতরে-বাইরে তার চক্রের মাধ্যমে পাচার করে যাচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানান, মাইনউদ্দিন চোরাই কাঠ পাচারকার চক্রকে কিছু প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় এইসকল অবৈধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। রাতের আঁধারে নির্দিষ্ট রুট ব্যবহার করে রেইচা রোয়াজাপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে অবৈধভাবে কাঠ সংগ্রহ করে ট্রাকে করে পাচার করছে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার প্রতিবেশী বলেন,আমরা দেখেছি পাহাড়ি এলাকার বিভিন্ন বাগান থেকে কাঠ কেটে রাতের আঁধারে ট্রাকভর্তি নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা শুনেছি এগুলোর কোন বৈধ কাগজ নাই।
মাঈনউদ্দিন তার ঘনিষ্ঠদের বলে বেড়ান, বান্দরবানে কর্মরত সাংবাদিকদের তার অবৈধ কর্মকান্ডের খবর প্রকাশ না করার শর্তে মোটা অংকের চাঁদা দিয়ে থাকেন। সে তার এলাকায় ও পরিচিতদের মাঝেমধ্যে নিজেকে একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি হিসেবেও পরিচয় দেন।
এমনকি তিনি দাবি করেন,জেলা কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য মোহাম্মদ আলীকে টাকা দিয়ে সাংবাদিকদের ‘ম্যানেজ’ করেন।ভাষ্যমতে আমার নামে নিউজ করে কোনো লাভ নাই সাংবাদিক আমার পকেটে থাকে।
তবে কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য মোহাম্মদ আলী এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,মাইনউদ্দিনের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। ওকে শুধু এলাকার ছেলে হিসেবে চিনি।আসলে ছেলেটা প্রতারক ও বাটপার। আমার নাম ব্যবহার করে বাঁচার চেষ্টা করছে এবং মিথ্যা অপবাদ চড়াচ্ছে।
অভিযুক্ত মাইনউদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উচ্চস্বরে মুঠোফোন বলেন, সকল অভিযোগ একশো শতাংশ সত্য। এ বলেই তিনি ফোন কেটে দেন।
বাংলাদেশের বন আইন ১৯২৭ এবং পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ অনুযায়ী কাঠ ব্যবসার জন্য সমিতির অনুমোদন ও বন বিভাগের ট্রানজিট পাস বাধ্যতামূলক। এসব ছাড়া কাঠ সংগ্রহ,পরিবহন বা বিক্রি সম্পূর্ণ অবৈধ। এ ধরনের অপরাধে কাঠ জব্দ, জরিমানা ও কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
পরিবেশকর্মী ও সচেতন মহলের দাবি,এভাবে অবৈধ কাঠ পাচার চলতে থাকলে পাহাড়ি অরণ্য ধ্বংস হয়ে যাবে।এতে জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়বে, পাশাপাশি মাটিক্ষয়, বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যাবে।
সার্বিক বিষয়ে এলাকাবাসী জানিয়েছেন,মাইনউদ্দিনের কর্মকাণ্ডে মানুষজন অতিষ্ঠ এবং আতংকিত।এভাবে বনাঞ্চলের গাছ অবৈধভাবে কেটে নিয়ে যাচ্ছে তাতে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব আমাদের দাবি এই বহুরূপী মহিউদ্দিনের অপরাধের সঠিক তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি যেন অবিলম্বে অবৈধ কাঠ পাচার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
আরো পড়ুন→নাইক্ষ্যংছড়িতে জামায়াতের ভোটকেন্দ্র দায়িত্বশীল কর্মীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত