পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধিঃ কক্সবাজার পেকুয়া উপজেলার মগনামায় গুলি করে জয়নাল আবেদীন (৪০) নামে এক যুবককে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
সোমবার (৩ মে) নিহতের ছোটভাই আমিরুজ্জামান বাদী হয়ে পেকুয়া থানায় (০২/২১) মামলাটি দায়ের করেন।
পেকুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কানন সরকার বলেন, “মগনামায় জয়নাল হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার ছোট ভাই আমিরুজ্জামান বাদী হয়ে একটি এজাহার দিয়েছেন। তাতে ৩২ জনের নামসহ ও অজ্ঞাতনামা আরো ১০ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫ আসামিকে আটক করা হয়েছে। বাকীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জানা গেছে, এ ঘটনায় ৫ সন্দেহভাজন আসামিকে আটক করে থানা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে স্থানীয় জনতা।
গত রবিবার (২ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার মগানামা ইউনিয়নের ফুলতলা ষ্টেশনে ১০-১৫ জনের বোরকা পরিহিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী প্রকাশ্যে গুলি করে ও কুপিয়ে জয়নাল আবেদীনকে হত্যা করে। এ সময় আলী আকবর নামে আরো একজন গুলিবিদ্ধ হয়। এ সময় তারা আশু সওদাগরের চায়ের দোকানের সামনে বসা চিল। চট্টগ্রাম মেড়িকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে জয়নাল আবেদীন মারা যান। নিহত জয়নাল আবেদীন মগনামা ইউনিয়নের আফজলিয়া পাড়া এলাকার মৃত নুরুন্নবীর পুত্র এবং স্থানীয় চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিমের লোক হিসেবে এলাকায় পরিচিত।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, ঘটনার রাতে গোপনে পালিয়ে যাওয়ার সময় উজানটিয়ার ভেলুয়ার পাড়া থেকে অভিযুক্ত প্রধান সন্দেহভাজন আবু ছৈয়দের ভাই আহমদ কবির লাদেক, ভাতিজা পারভেজ মোশারফ ও শ্যালক মাহমুদুল করিমকে আটক করে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয় জনতা। আটক তিনজনই নিহত জয়নালের একই গ্রামের বাসিন্দা। অপরদিকে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের বাইম্যাখালী থেকে একই কায়দায় স্থানীয়রা আটক করেন রাসেল ও দেলোওয়ার নামের আরো দুই সন্দেহভাজনকে। পরে পুলিশ এসে তাদের থানায় নিয়ে যায়। নিহত জয়নালের স্বজনরা শুরু থেকেই ঘাতক হিসেবে মগনামার আফজলিয়া পাড়ার আবু ছৈয়দ ও লঞ্চঘাট এলাকার নেজাম উদ্দিন ছোটনকে দায়ী করে আসছিলেন।
মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম জানান, হত্যাকান্ডের কয়েকদিন আগে নিহত জয়নালের ভাই শাহাবউদ্দিনের সাথে নেজাম উদ্দিন ছোটনের মধ্যে
সামান্য ফ্যানের বাতাস খাওয়াকে কেন্দ্র করে কয়েকদফা মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জের ধরে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এদিকে সোমবার নিহত জয়নালের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে তার নিজ গ্রামে দাফন করা হয়।
তার নামাজে জানাজায় কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব জাফর আলম এম এ উপস্থিত হয়ে সন্ত্রাসীদের দ্রুত আটক করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এদিকে পেকুয়ায় পরপর ৩ টি হত্যাকান্ডের ঘটনায় পেকুয়ার আইন-শৃংখলার মারাত্মক অবনতি হয়েছে উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পেকুয়া থানার ওসির প্রত্যাহার দাবি করেছেন অনেকেই।