নিজস্ব প্রতিবেদকঃ এই সরকার বানের জলে ভেসে আসা সরকার না, বহু ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত সরকার। তাই এই সরকার জন প্রত্যাশা পূরণে কাজ করবে। মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়ায় অবস্থিত ৩৫ মেগাওয়াট সোলার পাওয়ার প্লান্ট পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
শনিবার (২৪ আগস্ট) সকাল ১০টায় মানিকগঞ্জ পৌঁছে বেউথা মিফতাহুল হাফিজিয়া কওমিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা পরিদর্শন করে ছাত্রদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
প্লান্ট পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, এখন থেকে তিনি নবায়নযোগ্য জ্বালানির উপর জোর দিবেন, আমদানিনির্ভর জ্বালানিভিত্তিক প্রকল্পের পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করব কিন্তু বেসরকারি খাতকে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে কাজ পেতে হবে।
আমাদের কথায় উন্নয়ন না করে প্রকৃত উন্নয়ন করতে হবে। কত মাইল রাস্তা করেছেন তা বিবেচ্য নয়, কত কম খরচে কত টেকসইভাবে কাজটা করেছেন তা বিবেচনা করা হবে। অতীত নিয়ন্ত্রণ করা যায় না, কিন্তু ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
প্রকৃত উন্নয়ন ও সেবা নিশ্চিত করতে হবে। গত ১৬ বছর মানুষ কথা বলতে পারেনি এখন তারা সেটা বলতে পারবে। আগে সরকার কোনো প্রতিযোগিতা ছাড়া প্রকল্প নিয়েছিল। ফলে কোনো যাচাই না করেই বেশি মূল্যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
বিদ্যুতের দাম কমানো হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, এখন আমাদের এই খাতে বছরে ৪২ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এখন থেকে কম দামে বিদ্যুৎ কেনার ব্যবস্থা করা হবে তাহলে ভবিষ্যতে বিদ্যুতের দাম কমে যাবে।
এতদিন উন্নয়ন হয়েছে ঢাকাকেন্দ্রিক। এখন থেকে ঢাকার বাইরে মানুষের জন্য উন্নয়ন হবে। আঞ্চলিক উন্নয়নের ফলে জনগণ উন্নয়নের সুফল পাবে। এটা কোনো ঢাকার সরকার না, এটা কোনো দলের সরকার না। সব বৈষম্য দূর করা এই সরকারের মূল লক্ষ্য।
বন্যাকবলিত এলাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যুৎ সংযোগ সাময়িক বন্ধ রয়েছে। বন্যা-পরবর্তী সময়ে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। বর্তমান সরকারের কাছে আলাদিনের চেরাগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ১৬ বছরের অনিয়ম-দুর্নীতি ১৬ দিনেই অপসারণ করা সম্ভব নয়। তবে তারা সব সেক্টরের বৈষম্য নিরসনের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাবেন। পরে মাদ্রাসার পাশে কবরস্থানে তার শ্বশুরের কবর জিয়ারত করেন। কবর জিয়ারত শেষে বেলা ১১টায় শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়ায় অবস্থিত সোলার পাওয়ার প্লান্ট পরিদর্শন করেন তিনি। এরপর উপদেষ্টা মানিকগঞ্জ সার্কিট হাউসে উপস্থিত হলে জেলা পুলিশের একটি দল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। এরপর তিনি সার্কিট হাউসে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি তাদের দাবি-দাওয়া শোনেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তা দ্রুত সমাধানের নির্দেশনা প্রদান করেন।
এরপর তিনি ধামরাইয়ের ‘শৈলান প্রবীণ নিবাস’ পরিদর্শন করেন। এ সময় তার সফরসঙ্গী হিসেবে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর রিজওয়ান খান, বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান, টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মনিরা সুলতানা, মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক রেহেনা আক্তার, সহকারী পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।