প্রতিনিধি আলীকদম >>
সনাতন ধর্মের অন্যতম যুগাবতার পরমেশ্বর ভগবান শ্রী কৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উদযাপন উপলক্ষে বান্দরবানের আলীকদমে বর্ণাঢ্য আয়োজনে উৎসব মুখর পরিবেশে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপিত হয়েছে।
যুগাবতার পরমেশ্বর ভগবান শ্রী কৃষ্ণের জন্মাষ্টমী বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর ) সকাল থেকেই আলীকদমে ভক্তদের ঢল নেমেছিল। শিশু- কিশোর থেকে শুরু করে নানান বয়সী ভক্তবৃন্দ যেন কৃষ্ণ প্রেমের এক অদৃশ্য টানে ছুটে এসেছিলেন জন্মাষ্টমী উৎসবের মহা শোভাযাত্রায়। সব বয়সের মানুষের সরব অংশগ্রহণে এক নবরূপ ধারণ করে শ্রীকৃঞ্চের জন্মাষ্টমী উৎসবের মাঙ্গলিক মহাশোভাযাত্রা। ব্যানার-ফেস্টুন আর বাদ্যেযন্ত্রের তালে তালে নেচে গেয়ে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উদযাপন করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
হিন্দু পঞ্জিকা মতে, ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে যখন রোহিণী নক্ষত্রের প্রাধান্য হয়, তখন জন্মাষ্টমী পালিত হয়। প্রতি বছরের মতো এবারও শ্রী কৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উদযাপন উপলক্ষে আলীকদম কেন্দ্রীয় হরি মন্দির পরিচালনা কমিটির আয়োজন জন্মাষ্টমীর বর্ণিল মহাশোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত শোভাযাত্রাটি হাজারো ভক্তের অংশগ্রহণে পরিণত হয় মিলন মেলায়। শোভাযাত্রাটি উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে হরি মন্দির প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। পরে আলীকদম উপজেলার কেন্দ্রীয় হরি মন্দির প্রাঙ্গণে সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত আলোচনা সভায় উপজেলা কেন্দ্রীয় হরি মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি সন্তুোষ কান্তি দাশ এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাবের মোঃ সোয়াইব।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জামাল উদ্দীন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অংশৈ থোয়াই মার্মা,আলীকদম থানার অফিসার ইনর্চাজ ওসি খন্দকার তবিদুর রহমান,আলীকদম সদর ইউপি চেয়ারম্যান নাছির উদ্দীন,৩নং নয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস আর্শীষ কুমার ধর,প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিপ্লব চৌধুরী,উপজেলা কেন্দ্রীয় হরি মন্দির পরিচালনা কমিটির উপদেষ্টা শ্যামল চৌধুরী, উপজেলা কেন্দ্রীয় হরি মন্দির পরিচালনা কমিটির উপদেষ্টা নারায়ণ মজুমদার,উপদেষ্টা সুজিত কুমার দে,নয়াপাড়া বনিক পাড়া হরি মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি লিটন ধরসহ প্রমূখ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, অত্যাচারীর বিরুদ্ধে দূর্বলের অধিকার ও পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতেই পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এই পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়ে ছিলেন। শান্তি ও সম্প্রীতির মেলবন্ধনের মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চল থেকে অশুভ শক্তি বিনাশে সকল সম্প্রদায়কে এক হয়ে কাজ করার আহবান জানান বক্তারা।
বক্তারা আরও বলেন,ভগবান শ্রী কৃষ্ণ দুষ্টের দমন ও সৃষ্টের পালন নীতি অবলম্বন করে ছিলেন, ঠিক তেমনি করে পার্বত্যাঞ্চলের পাহাড়ী-বাঙ্গালী সকল সম্প্রদায়কে এক হয়ে পার্বত্যাঞ্চল থেকে অশুভ শক্তিকে দুর করে শুভ শক্তির আর্বিভাব ঘটাতে হবে। তাই অশুভ শক্তি বিনাশে সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে এক হয়ে কাজ করার আহবান জানান।
উপজেলার বিভিন্ন মন্দির থেকে ঢাঁক-ঢোলসহ শত শত নারী-পুরুষ শোভাযাত্রার র্যালীতে অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা সভা ছাড়াও মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জলন এবং পূজা আর্চনার আয়োজন করা হয়।