নিজস্ব প্রতিবেদক: এনআরবিসি ব্যাংকের ইসলামী ব্যাংকিং উইংয়ের নাম হলো আল আমিন। কমার্শিয়াল ব্যাংকিং সেক্টরের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ইসলামী ব্যাংকিং উইং হিসেবে সাধারণ আমানতকারীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। করোনার সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেও বিগত বছরগুলোতে প্রত্যাশার চেয়েও অধিক হারে সাফল্য অর্জন করেছে।
একটি বিশাস্ত সুত্রে জানায়, আল-আমিন উইং নিয়ে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল এর সমর্থনপুষ্ট কতিপয় উর্ধ্বতন কর্মকতা ও তাদের সঙ্গী সাথিরা চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। এই চক্রের উদ্দেশ্যই হচ্ছে যে কোন উপায়ে ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রমের অধীনে একটি বিশেষ এনজিও নির্ভর মাইক্রো ক্রেডিট সার্ভিস পরিচালনা করা।
সেই বিশেষ এনজিও’র বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে, যা চলমান রয়েছে। তাছাড়া শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকিং কার্যক্রমের সাথে এনআরবিসি ব্যাংকে চলমান মাইক্রো ক্রেডিটের ধারণা সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। কিন্তু তা সত্ত্বেও আল আমিন উইংয়ের তহবিল বিশেষ সেই এনজিও’র মাধ্যমে প্রদানের নামে তছরুপ করার সুচিন্তিত ছকে ষড়যন্ত্র করে বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে বলে ব্যাংক সূত্রে জানা যায়।
এই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় প্রথমে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড থেকে সদ্য অবসরে যাওয়া একজন বিতর্কিত কর্মকর্তাকে আল- আমিন উইংয়ের প্রধান হিসেবে চুক্তিতে নিয়োগের চেষ্টা চালানো হয় এবং শরিয়াহ ব্যাংকিং কার্যক্রমের সাথে যুক্ত কর্মকর্তাদের মনোবল ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য তাদের বর্তমান অফিস হাদী ম্যানশন থেকে সরিয়ে অন্যত্র নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করলেও পরবর্তীতে তা বাস্তবায়ন হয়নি।
তারই ধারাবাহিকতায় আল-আমিন উইংয়ের হেড মো: মাহফুজুল হ কে ব্যাংক থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য মনগড়া ও ভিত্তিহীন কাহিনি সৃষ্টি করে তার উপর ভয়ানক চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে জানা যায়। তার উপর আনিত অভিযোগে বলা হয়, মো: মাহফুজুল হক আল- আমিন উইংয়ের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ব্যাংকের একাউন্টস হেড জাফর ইকবাল হাওলাদারের নামে দুনীতি দমন কমিশনে অভিযোগ জমা দিয়েছেন এবং একই উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টের স্টেটমেন্ট প্রিন্ট করেছেন।
এনআরবিসি ব্যাংক সূত্রে জানা যায়,মো: মাহফুজুল হক কে মানসিক ভাবে চাপ প্রদান করার জন্য ও জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করার লক্ষ্যে এসইভিপি সাফায়েত কবির কাননের নেতৃত্বে তদন্তের নামে টর্চার করা হচ্ছে। এই ঘটনায় ব্যাংকটির এসভিপি মেজর (অব:) পারভেজ হোসেন, এসভিপি ল্যাফটেনেন্ট কমান্ডার (অব:) ফরহাদ সরকার, আইটি হেড এসভিপি দিদারুল ইসলাম মিঞা মূখ্য ভূমিকা পালন করছেন বলে জানা যায়।
আরও জানা যায়,গত ১৯ শে ফেব্রুয়ারী ভুক্তভোগী মাহফুজুল হকের নিকট থেকে তার ব্যবহিত ব্যক্তিগত মোবাইল কেড়ে নেন ফরহাদ সরকার ও দিদারুল ইসলাম মিঞা এবং উদ্ধারে আইটি শাখার ডিভাইস এন্যালাইসিস টিমকে নিয়োজিত করেন।
মজার বিষয় হলো পরবর্তীতে জানা যায়, ব্যাংক স্টেটমেন্ট গুলো ডাউনলোড ও প্রিন্ট করা হয়েছে মাইক্রো ক্রেডিট শাখা থেকে, যা বর্তমানে ব্যাংকির চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসারের নিয়ন্ত্রণাধীন এবং সেই ডিভিশনে বা সেই কর্মকর্তার সাথে মাহফুজুল হকের কোন সংপৃক্ততা নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, পরিকল্পিত ভাবে গত ২০ ফেব্রুয়ারী মাহফুজুল হক ও অন্য দুই কর্মকর্তার উপর অমানবিক চাপ সৃষ্টি করা হয় এবং সেদিন এক পর্যায়ে ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল নিজে জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নেন ও শারীরিক নির্যাতনে উদ্যত হন। আরও জানা যায়, বারবার হুমকি প্রদানের মাধ্যমে ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তাদের কাল্পনিক সম্পৃক্ততার বিষয়ে স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করেন।
টর্চারিং স্থলে উপস্থিত থেকে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও গোলাম আউলিয়া মাহফুজুল হক সহ আরও দুই কর্মকর্তাকে সাসপেন্ড করেন।
এনআরবিসি ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ব্যাংকটির হিসাব রক্ষণ বিভাগের প্রধান জাফর ইকবাল হাওলাদারের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ০০.০১.০০০০.৪১১.০১.০০৬.২০২২.৩৫৫৪২ দুদক দুনীতি আমলে নিলেও এনআরবিসি ব্যাংক তাকে কোনরূপ জিজ্ঞাসাবাদ না করে তার অনিয়মকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। এনআরবি ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সময়োচিত পদক্ষেপ কামনা করেন। ইসলামী উইংয়ের বিষয়ে কথা বলতে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমালের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি কোন সারা দেন নাই।