সুফল চাকমা, বিশেষ প্রতিনিধি>>
লামা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে জনবহুল ইউনিয়ন শিল্পনগরী আজিজ নগর ইউনিয়ন। প্রায় ১৯হাজার মানুষের বসবাস। আজিজ নগর বাসীকে প্রয়োজনীয় অফিসিয়ালসহ বিভিন্ন কাজে লামা উপজেলায় যেতে হয় কক্সবাজার জেলা চকরিয়া উপজেলা হয়ে।
যার দুরত্ব প্রায় ৪৬কিলোমিটার অথচ গজালিয়া ইউনিয়ন হয়ে লামা উপজেলার দুরত্ব মাত্র ২৯কিলোমিটার। আজিজ নগর থেকে গজালিয়া হয়ে লামায় যে সংযোগ সড়কটি আছে সেটি ইতিমধ্যে ১০কিলোমিটার পিচঢালা চলাচল যোগ্য, বাকি নাজিরাম ত্রিপুরা পাড়া থেকে ডিসি রোড পর্যন্ত ব্রিক সলিন কিছু, কাচা রাস্তা, বড় বড় গর্ত হয় গাড়ী চলাচলের অনুপযোগী ৮কিলোমিটার সড়ক।
সরেজমিনে দেখা যায়, দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকার কারনে পুরো রাস্তাজুড়ে বড় বড় গর্ত, খানাখন্দে ভরা গাড়ী চলাচলের অনুপযোগী। জনগণের ভোগান্তি শেষ নেই। কেউই জানেন না সড়কটি কবে চালু হবে!ফলে অনেক কৃষক শুষ্ক মৌসুমে ধান মাড়াই-ধান শুকানো কাজেও ব্রিজগুলো ব্যবহার করছেন। শুষ্ক মৌসুমে কিছু মটরসাইকেল, তিন চাকার মহিন্দ্র গাড়ী ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী বহন করে থাকে ।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, গজালিয়া ইউনিয়নের অংশ নাজিরাম ত্রিপুরা পাড়া থেকে ডিসি রোড পর্যন্ত মারমা-ত্রিপুরা-বাঙালী মিলে ১০টি গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবারের প্রায় দুই হাজারের অধিক মানুষের বসবাস। তারা সবাই কৃষিজীবি, কলা,পেঁপেঁ, সবজী, ধানসহ বিভিন্ন কৃষি পণ্য উৎপাদন করে থাকেন।
গজালিয়া ইউনিয়নের রেমং মেম্বার পাড়ার বাসিন্দা আসাইং মং মারমা বলেন, সড়কটি নির্মান হলে অল্প টাকায় গাড়ীতে যাতায়াত করতে পারতেন এবং অনেক সময় বেঁচে যেতো লেখাপড়ায় আরো মনযোগী হতে পারতেন। তিনি আজিজ নগর হতে গজালিয়া সড়কটি দ্রুত নির্মান কাজ শুরু করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।
রেমং মেম্বার পাড়ার গ্রাম প্রধান (কার্বারী) মং মং মারমা বলেন, আজিজ নগর হইতে গজালিয়া ডিসি রোড পর্যন্ত সড়কটি ১৯৮৬-৮৭ সালে সড়ক নির্মানের কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্ত ৩৬ বছরেও সড়কটি চলাচলের যোগ্য হয়নি। সড়কটি পুনঃ নির্মান করা হলে কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত পণ্য সহজেই পরিবহন করে বাজারজাত করতে পারতেন।
ইসলামপুর গ্রামের গ্রাম সর্দার মোঃ সোহেল সর্দার বলেন, অনেকদিন ধরেই শুনে আসছেন আজিজ নগর –গজালিয়া রোডটি চালু হবে। পুনঃ নির্মাণ হবে কিন্তু কবে সড়কটি কখন নির্মান হবে কেউ জানেন না। সড়কটি নির্মাণ না হওয়ার কারনে ১০টি গ্রামের কৃষক তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে পরিবহনের জন্য খুবই সমস্যায় পড়তে হয়।
গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াইচিং মারমা জানান, দীর্ঘদিন ভুমি অধিগ্রহন ও ক্ষতিপূরণ প্রদান সংক্রান্ত জটিলতা নিরসণ হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি গজালিয়া হতে আজিজনগর ৮কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু করার জন্য বান্দরবান সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, গজালিয়া ইউনিয়নের অধিকাংশই লোকজন কৃষির উপর নির্ভরশীল। নাজিরাম ত্রিপুরা পাড়া হতে ডিসি রোড পর্যন্ত ১০টি পাড়াবাসী সবাই কৃষিজীবি, সড়কটি চালু হলে কৃষক কৃষি পণ্য বাজারজাত করনে পণ্যের ন্যায্যমূল্য পেতো, স্কুল-কলেজে যাতায়াতে ছাত্র/ছাত্রীরাও সবাই উপকৃত হবেন বলে জানান তিনি।
বান্দরবান সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোসলেহ্ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ১৯৮৬-৮৭ সালে শুরু হওয়া আজিজ নগর হতে গজালিয়া ১৮কিলোমিটার সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম দশ কিলোমিটার সড়কটি প্রশস্ত করা হবে।
তিনি বলেন, সড়কের ৮কিলোমিটার পূর্ণ নির্মানের জন্য মন্ত্রণালয়ে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে এটি অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন আছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।