নিজস্ব সংবাদদাতা>>
বান্দরবান নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে আবারো মিয়ানমার ও স্বাধীনতাকামী আরাকান রাজ্যের সেনাবাহিনীদের মাঝে গুলির বর্ষণের শুরু হয়েছে। এতে এলাকাবাসীর মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।
৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকাল থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের গুলিবর্ষণের ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন ধুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান একে এম জাহাঙ্গীর আজিজ।
তিনি জানিয়েছেন, কয়েকদিন গোলাগুলির পর গেল দুইদিন কোন গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। এতে কিছুটা স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক কমে জনমনের স্বস্তি আসে । তবে আকাশের যুদ্ধ বিমান দেখা গেছে।
তিনি আরো জানান, পূনরায় আজ সকাল থেকে সীমান্তের ঘেষে মিয়ানমারের গোলাগুলি শুরু হয়েছে। ফলে আবারও স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্কের বিরাজ করছে। ভয়ে কেউ কেউ ওই এলাকার ছেড়ে শহরের আশেপাশে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গতকাল দুইদিন সীমান্ত থেকে কোন গুলিবর্ষণের শব্দ শোনা যায়নি। এতে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হওয়াতেই আতঙ্ক কমেছিল স্থানীয়দের মাঝে। কিন্তু আজ সকাল থেকে সীমান্ত ঘেষে ফের গোলাগুলির শুরু করেছে মিয়ানমাদের দুই সেনাদের। এর ফলে ফের আতঙ্কের বিরাজ করছে স্থানীদের।
এছাড়াও সীমান্তের ঘেষে যারা বসবাস করছেন তারাও গোলাগুলির ভয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি শহরে দিকে ছুটে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয় সীমান্তে থাকার বসবাসকারীরা চাষাকৃত জুম চাষ ও বিভিন্ন ফলজ ফলাদি কাজ করতে যেতে পারছেন নাহ বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে , ধুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু বাজারের কোনারপাড়া এবং মায়ানমারের ‘খা মং সেক’ পাহাড়ের মাঝখানের জায়গাটুকু নো ম্যান্স ল্যান্ড। এখানে (শূন্যরেখা) আশ্রয়শিবির গড়ে তুলে পাঁচ বছর ধরে বাস করছেন রাখাইন রাজ্য থেকে বিতাড়িত ৬২১টি পরিবারের ৪ হাজার ২০০ জনের বেশি রোহিঙ্গা। সেখানে বসবাসরত রোহিঙারা ওপারে বিকট গুলির শব্দ শুনে ভয়ে কাজে যেতে পারছেন নাহ। তাদের পাহাড়ের জুমের ফসল ফলাদী ও বাগান রয়েছে। সেগুলো কাটার দুরের কথা গুলির ভয়ে দিনরাত পার করছেন ওই এলাকার বসবাসকারীরা।
এ বিষয়ে বান্দরবানের পুলিশ সুপার (এসপি) তারিকুল ইসলাম তারিকুল বলেন, ‘সীমান্তে আবারও গোলাগুলির খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে ভয়ভীতির কোনও কারণ নেই। আমরা সীমান্তে সর্তক অবস্থানে রয়েছি।’
এর আগে গত ২৮ আগস্ট দুপুরে মায়ানমারের দিক থেকে ছোড়া দুটি মর্টার শেল বাংলাদেশ অংশে এসে পড়েছিল। তবে সেগুলো অবিস্ফোরিত হওয়ায় এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা শেলগুলো নিষ্ক্রিয় করেন। ৩ সেপ্টেম্বর রেজু আমতলী বিজিবি বিওপি আওতাধীন সীমান্ত পিলার ৪০-৪১ এর মাঝামাঝি মায়ানমার সেনাবাহিনী ২টি যুদ্ধ বিমান এবং ২টি ফাইটিং হেলিকপ্টার আগমন করে। এই সময় যুদ্ধ বিমান থেকে আনুমানিক ৮ থেকে ১০ টি গোলা ফায়ার করেন এবং হেলিকপ্টার থেকেও আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫ টি ফায়ার করতে দেখা যায়।