অংবাচিং মারমা রুমা>>
বান্দরবানে রুমা উপজেলার জিএফএস পানি লাইনের স্থাপনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান থোয়াইনুচিং মারমা এর বিরুদ্ধে ।
প্রকল্পের সঠিক নিয়মনুযায়ী কাজ না করে মনগরা মতন কাজ করে চলে গেছেন বলে অভিযোগ তুলেছে রুমা সদর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের রুমাচর পাড়া গ্রামের বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ সঠিক কাজ করার জন্য বারবার বলা শর্তেও সেটি করেননি ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড অর্থায়নের ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রকল্পের ১৯ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ব্যায়ের জিএফএস পানি পাইপ লাইন স্থাপনের বরাদ্ধ দেওয়া হয়। এবং সে প্রকল্পের ওই গ্রামের ২ হাজার লিটার ৩টি গাজী ট্যাঙ্ক ও ২৭ হাজার ১০০ ফুট পাইপ লাইন স্থাপনের কথা বলা রয়েছে নকঁশাতে। কিন্তু সেটি করেছে সব বিপরীত।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, জিএফএস পানি পাইপ লাইনের নকশানুসারে দেওয়া কথা থাকলেও সেটি করেছে বিপরীত। ৯ হাজার ৮শত ২৬ ফুটের মাধ্যমে কাজ সম্পন্ন করেছে ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও ৩ টি গাজি ট্যাঙ্ক দেওয়ার কথা থাকলেও সেটি দিয়েছেন ২টি। ওই এলাকার বৌদ্ধ বিহারে নতুন রিংওয়েল স্থাপন ও জেনেরেটর দেওয়া কথা থাকলেও সেগুলো না দিয়ে কাজ শেষ করে চলে গেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
আরো জানান, ঠিকাদার শ্রমিক দিয়ে কাজ না করিয়ে ২০ হাজার দেয়ার কথা বলে এলাকাবাসী মাধ্যমে কাজ করিয়েছেন। এবং সেই পরিশ্রমের টাকা ঠিকাদার দেননি। অন্যদিকে পানি আসার সঠিক স্থানে ওয়াল দেওয়ার কথা বললেও সেটি ক্ষুদ্র পরিসরের দিয়েছেন। বর্তমানের পানি আসার দুরের কথা পাইপ গুলো একই স্থানের অকেজো ভাবে পড়ে আছে।এবং রুমাচর বৌদ্ধ বিহার সামনে নতুন রিংওয়েল স্হাপন করার কথা থাকলে ও পাড়াবাসি মেরামত ছবি তুলে বিল উত্তোলন করা হয়েছে বলে জানান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা মিলে , রুমা শহর থেকে ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রুমাচর পাড়া গ্রাম। ওই গ্রামের ৪২টি পরিবারের বসবাস। আশেপাশে পাহাড় ছাড়া নাই কোন পানি উৎস। শুধু তাদের খাওয়ার একমাত্র উপযোগী জঙ্গলের ঝিড়ির পানি। সে পানি খেয়ে জীবন যাপন করছেন ওই এলাকার গ্রামের বাসিন্দারা। পাড়া থেকে ওই ঝিরি দুরত্ব প্রায় ৩ কিলো। কষ্টের সাধ্য নিয়ে পানি কষ্ট করে নিয়ে আসেন এলাকাবাসিন্দারা। সেই দুরত্বকে কমাতে উন্নয়ন বোর্ড থেকে জিএফএস পাইপ স্থাপনের প্রকল্পের বরাদ্ধ দিলেও সেটি অনিয়মভাবে কাজ করে গেছেন ঠিকাদার। এছাড়াও পানি মজুদ রাখার হাউস ও কাজ করে গেছে নিম্নমানের। সে ট্যাংঙ্কের ভিতরে ময়লা ও আবর্জনা ভরপুর। সে পানি খেয়ে পরে হতে পারে এলাকাবাসীর দুর্দশা। নইতো ডায়রিয়া, কলেরাসহ দেখা দিতে ভয়াবহ রোগ। স্থানীয়দের প্রশ্ন প্রকল্পের কাজের মান নিশ্চিত না করে কিভাবে সমাপ্তি দেখিয়ে অর্থ উত্তোলন করেছে ঠিকাদার?
এদিকে পাহাড়ের বসবাসরত পাহাড়ি জনগোষ্ঠিদের প্রধান সমস্যা কারণ খাবারের পানি। সে পানির এর ফলে জীর্ণজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পাহাড়ি আদিবাসী পাড়াগুলোতেই বেশিরভাগ বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভোগান্তিতে পড়েছে। বান্দরবান জেলারটি দুর্গম এলাকার খালে গর্ত খুঁড়ে, নদীর দূষিত ঘোলা পানি ব্যবহার করছেন স্থানীয়রা। এতে ডায়রিয়াসহ নানা ধরনের পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে ঐসব গ্রাম গুলোতে। বিশুদ্ধ পানি না পাওয়াতেই ক্ষোভ ও অভিযোগ জানিয়েছেন ওই গ্রামের বাসিন্দারা।
৬নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য শৈক্যচিং মারমা বলেন, প্রকল্পের অনুযায়ী কাজ করেননি ঠিকাদার। রিং ওয়েল, জেনেরেটর ও পানি পাম্প দেওয়ার কথা থাকলেও সেগুলো কিছুই দেয়নি।
রুমাচর পাড়া গ্রামে বাসিন্দা চাইশৈপ্রু মারমা বলেন, পানি পাইপ লাইনে ২৭ হাজার ১০০ ফুট করা কথা রয়েছে। কিন্তু পাইপ লাইন করা হয়েছে ৯ হাজার ৮ শত ২৬ ফুটের কাজ সম্পন্ন ঐ ঠিকাদার।
একই এলাকার বাসিন্দা থুইনুমং মারমা জানান,পানি পাইপ লাইন করার ক্ষেত্রে মিস্ট্রিদের কাজ করা থাকলে ও পাড়াবাসি মাধ্যমে কাজ করা হয়েছে। ২০ হাজার টাকা দেওয়া কথা থাকলেও ১ টাকাও পাইনি বলে জানান।
এব্যাপারে ঠিকাদার থোয়াইনুচিং মারমা বলেন, প্রকল্পটি ২ নং রুমা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শৈমং মারমা কাজ থেকে ৭ লক্ষ টাকা দিয়ে কিনেছি । সে কাজ কিনে আমার অনেকটা লস হয়েছে । তাই আমি পাড়াবাসীর চাহিদা অনুযায়ী কাজ করতে পারবো না বলে জানান।
বান্দরবান পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. এরশাদ মিয়া বলেন, আমাদের কাজ এখনো শেষ করা হয়নি । আগামী সপ্তাহে নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সরেজমিনে গিয়ে সমস্যার সমাধানে আনা চেষ্টা করব।