অনলাইন ডেস্ক>>>>
সাড়ে তিন মাস পর করোনাভাইরাসে এক দিনে তিন জনের মৃত্যুর তথ্য দিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত কয়েক দিনে এক দিনে সর্বোচ্চ এক জনের মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়েছিল।
গত দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে শনাক্তের সংখ্যা ও পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার প্রতিদিনই আগের দিনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মধ্যে মৃত্যুর এই সংখ্যাটি জানানো হলো শনিবার।
শুক্রবার সকাল থেকে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর এই সংখ্যা গত ১১ মার্চের পর সর্বোচ্চ। সেদিন ২৪ ঘণ্টায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আগের দিনের চেয়ে ৫ হাজার নমুনা কম পরীক্ষা করা হয়েছে। যে কারণে নতুন রোগীর সংখ্যা আগের দিনের তুলনায় কিছটা কমে এসেছে। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮ হাজার ৪৯২টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে ১ হাজার ২৮০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষার বিবেচনায় রোগী শনাক্তের ১৫ দশমিক ০৭। গত দিন এই হার ছিল ১২ দশমিক ১৮ শতাংশ। বৃহস্পতিবার এই হার ছিল ১৪ দশমিক ৩২ শতাংশ। আগের দিন বুধবার ছিল ১৩ দশমিক ৩০ শতাংশ।
করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার পর গত ১৬ জুন প্রথমবারের মতো পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৫ শতাংশ ছাড়ায়। এ নিয়ে টানা ১০ দিন শনাক্তের হার ৫ শতাংশের ওপরে থাকল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকা অবস্থায় শনাক্তের হার পরপর দুই সপ্তাহ ৫ শতাংশের বেশি হলে পরবর্তী ঢেউ ছড়িয়েছে বলে ধরা হবে।
এই হিসাবে আর চার দিন শনাক্তের হার ৫ শতাংশের বেশি হলে দেশে করোনার চতুর্থ ঢেউ ছড়িয়েছে বলে ধরা যাবে।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর ধীরে ধীরে সংক্রমণ বাড়তে থাকে। প্রথম ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে। একই বছরের মার্চে ডেল্টা ধরনের করোনায় আসে দ্বিতীয় ঢেউ। এ পর্যায়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয় গত জুলাইয়ে। একপর্যায়ে শনাক্তের হার ৩৩ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়।
দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার পর দেশে তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আসে করোনার আরেক ধরন ওমিক্রন। তৃতীয় ঢেউয়ের সময় ২৮ জানুয়ারি করোনা শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ দাঁড়ায়, যা দেশে করোনা সংক্রমণ ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি। তবে তৃতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত বেশি হলেও মৃত্যু ছিল তুলনামূলক কম। এই ঢেউ দ্রুত নিয়ন্ত্রণেও আসে। গত ১১ মার্চ তৃতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার বিষয়টি নিশ্চিত হয়।
তৃতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর মাস্ক পরা ছাড়া করোনাসংক্রান্ত সব বিধিনিষেধ তুলে দেয়া হয়। তবে জনগণের মধ্যে মাস্ক পরা নিয়ে অনীহার বিষয়টি আবার দেখা যায়। করোনা সংক্রমণ ক্রমেই বাড়তে থাকলেও এ বিষয়ে সচেতনতার অভাবের বিষয়টি এখনও স্পষ্ট।
করোনা পরিস্থিতির অবনতিতে সব সরকারি চাকরিজীবীর মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে নির্দেশ জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।