শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০৭:৫৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
জিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা: রাজনীতিতে সক্রিয় প্রত্যাবর্তনের ঘোষণা দিলেন ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন রুমায় কৃষকের বসত বাড়িতে আগুন, সব পুড়ে ছাই বান্দরবানে পৃথক অভিযানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৬ নেতা আটক দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবকদল সদস্যসচিব আশরাফুল ফরহাদ-কে অব্যহতি সেনাবাহিনীর সহায়তায় ২ বছর পর ঘরে ফিরল বম পরিবার নারীদের জন্য নিরাপদ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে: ড. হামিদুর রহমান আজাদ থানচিতে খেয়াং নারীর মৃত্যুকে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ চিংমা খেয়াং হত্যাকান্ডের সঠিক বিচারের দাবীতে বান্দরবানে বিক্ষোভ বান্দরবানে পাহাড় থেকে খেয়াং নারীর লাশ উদ্ধার নাইক্ষ্যংছড়ি’র ঘুমধুম সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে এক যুবক আহত।
বিজ্ঞপ্তি
paharkantho.com আপনাকে স্বাগতম 🤗...

অস্তিত্ব সংকটে কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও কোচিং সেন্টারগুলো

এস এম নাসিম
  • প্রকাশিতঃ বুধবার, ২২ জুলাই, ২০২০
  • ৩১৪৯৮ জন নিউজটি পড়েছেন

করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্ব অর্থনীতি যেমন থমকে গেছে, তেমনি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে শিশুদের মানসিক বিকাশ। সেই সাথে অস্তিত্ব সংকটে কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও কোচিং সেন্টারগুলো। গত এপ্রিলে ব্যাপক হারে ভাইরাস সংক্রমণের মুখে স্কুল বন্ধ করে দেয়ায় গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। বেকার হয়ে পড়েছে এই সব প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীরা।

স্কুল-কলেজের টিউশন ফিসহ অন্যান্য ফি আদায়ের জন্য অভিভাবকদের ক্রমাগত চাপে রাখছে স্কুলের শিক্ষকরা। করোনায় কর্মহীন বা আয় কমে যাওয়ায় অভিভাবকদের অনেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি পরিশোধ করতে পারছেন না। এমন অবস্থায় শিক্ষক-অভিভাবকরা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছেন।

শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতা পরিশোধের লক্ষ্যে, প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ টিউশন ফি আদায়ের নোটিশ দিয়েছে। তবে এই দুর্যোগকালীন মুহূর্তে বেশির ভাগ অভিভাবকই টিউশন ফি দিতে নারাজ। তারা বলছেন, টিউশন ফি ৫০ শতাংশ কমাতে কারণ বেশিরভাগ অভিভাবকের আয় কমে গেছে। অনেকে বেকার হয়েছেন। এই মুহূর্তে কোনোভাবেই টিউশন ফি দেওয়া যাবে না।

আবার সব শিক্ষার্থীর অভিভাবক বেতন দিচ্ছেন না উল্লেখ করে টিউশন ফি কমানোর ব্যাপারে ভাবছে না স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টিউশন ফি আদায় নিয়ে জটিলতা বাড়ছে। এ নিয়ে আন্দোলন-কর্মসূচি দিতে যাচ্ছেন অভিভাবকরা।

গত (৮ জুলাই) সকাল ১১টায় সারাদেশে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল এন্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে কিন্ডারগার্টেনের জন্য আলাদা বোর্ড বা মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৬ দফা দাবি করে। শিক্ষকরা করোনা মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য সরকারী প্রণোদনা দাবী করেন।

এবার দেখি শিক্ষক ও অভিভাবকদের অর্থনৈতিক চিত্র, রাজধানীর আদাবর এর নিকট কিন্ডারগার্টেন পপুলার ইন্টারন্যাশনাল স্কুল প্রধান শিক্ষক আমিনা বেগম বাড়ি ভাড়া দিতে না পেরে বাসা ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি জানালেন, প্রায় চার মাস হলও স্কুল বন্ধ, শিক্ষার্থীদের বেতন আদায়ও বন্ধ। স্কুলে শিক্ষক আছেন ১২ জন। তাঁরা বেতনের সঙ্গে টিউশনির আয় জোড়াতালি দিয়ে চলতেন। এখন সবই বন্ধ।

ওই স্কুল শিক্ষক, খরচ কমানোর জন্য বাসা ছেড়ে দিয়ে স্বামী আর দুই মেয়েসহ স্কুলে উঠেছেন।দুজন কর্মচারী নিয়ে রাস্তার ধারে শামিয়ানা খাটিয়ে টেবিল পেতে ফল বিক্রি করছেন।

ধানমন্ডির কলেজ স্ট্রিট গলিতে গড়ে উঠেছে একাধিক একাডেমিক কোচিং সেন্টার। সেখানের শিক্ষকরা বাসা ছেড়ে দিয়ে চলে গেছে গ্রামের বাড়িতে। অর্থের অভাবে অনেকেই পেশা বদলানোর চেষ্টা করছে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা গেছে, হবিগঞ্জের একজন শিক্ষক চা-কফি বিক্রি করছেন। দিনাজপুরের একজন শিক্ষক রাজমিস্ত্রির জোগালির কাজ করছেন। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের একজন শিক্ষক নৌকা চালাচ্ছেন।

আমার এক বন্ধু তার ফেসবুক পেইজে লিখেছে, আজ অফিস থেকে যে রিক্সায় বাসায় আসলাম সেই রিক্সাচালক একজন মাদ্রাসা শিক্ষক। গত চার মাসে জীবনের সব হিসাব চুকিয়ে বাস্তবতা তাকে আজ এ পরিস্থিতিতে নিয়ে আসছে।

শিক্ষা অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে কিন্ডারগার্টেনের নিবন্ধন শুরু হওয়ার পর দীর্ঘ প্রক্রিয়া পেরিয়ে এ পর্যন্ত ৩৩০টি স্কুল নিবন্ধিত হয়েছে। আরও ১৪ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। তাদের ধারণা, দেশে কিন্ডারগার্টেন আছে হাজার বিশেক।

কিন্ডারগার্টেনগুলোর দুটি সমিতির হিসাবে, স্কুলের সংখ্যা ৪০ হাজারের কিছু বেশি। মোট শিক্ষার্থী ৫০ লাখের বেশি। আর শিক্ষক আছেন প্রায় ছয় লাখ।

অভিবাবকদের অর্থনৈতিক অবস্থা আরো করুণ, চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী উজান আহমেদের বাবা হামিদুর রহমান ১৫ হাজার টাকা বেতনে একজন এনজিওকর্মীর ব্যক্তিগত গাড়ি চালান। গাড়ি বেরোচ্ছে না, মালিক বেতন দিচ্ছেন অর্ধেক। তিনি জানালেন সংসার চলছেনা, স্কুলের বেতন দেব কিভাবে?

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেছেন, করোনাকে নিয়েই আমাদের চলতে হবে। এই করোনার কারণে শুধু যে স্বাস্থ্যখাতে আঘাত হেনেছে তা নয়, শিক্ষা, রাজনীতি, অর্থনীতিতে আঘাত হেনেছে।জাতির জনকের সোনার বাংলা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে আমাদের এটা মাথায় রাখতে হবে। এছাড়া আমি আরো বলতে চাই, বেসরকারি স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রণোদনা দিতে হবে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আর নিউজ
© All rights reserved ©paharkantho.com-২০১৭-২০২১
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD
themesba-lates1749691102
error: Content is protected !!