স্টাফ রিপোর্টারঃ সুজন ইব্রাহিম। সৌদি প্রবাসী হয়েও নিজ এলাকায় পরিচিত দানবীর হিসাবে, পেয়েছেন সিআইপি পুরস্কারও। এই সবের আড়ালে রয়েছে তার রয়েছে আদালা মুখোশ, যা যে কোন মানুষ শিহরিত করে। সূত্র জানিয়েছে, এই দানশীলতার আড়ালে রয়েছে ভয়ংকর নির্যাতন আর প্রতারণার চিত্র। কয়েকজন সৌদি প্রবাসীদের মন্তব্যে বেরিয়ে এসেছে এমন তথ্য।
সূত্র মতে, সুজন ইব্রাহিমের বাড়ি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে। সুজন ইব্রাহিমের সঙ্গে ব্যাবসায়িক যোগসূত্র ও গভীর সখ্যতা রয়েছে আলোচিত স্বর্ণ চোরাচালনকারী আরাব খান ও ফ্যাসিস্ট্য আওয়ামীলীগ সরকারের ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদের। আর এই সব অপরাধমুলক কাজে একচ্ছত্র সহযোগিতা করে গেছেন স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকারের ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ। ডিবি প্রধানের সঙ্গে যোগসূত্র থাকায় কাউকে তোয়াক্কা না করে নির্যাতন ও প্রতারণার ফাঁদ বিস্তার হতে থাকে সুজন ইব্রাহিমের।
এরপর সুযোগ মতো সৌদি আরবে প্রতিষ্ঠা করেন টাইমস লিঃ নামে একটি সাপ্লাই কোম্পানি। এই কোম্পানির মাধ্যমে ভিসা দিয়ে বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানো হয় সৌদি আরবে। তবে যে শর্ত বা কাজের কথা বলে শ্রমিক নেওয়া হয় সেই শর্ত বা কাজ তাদের দেওয়া হয় না। আর বাংলাদেশি শ্রমিকরা শর্ত ভাঙ্গার অভিযোগ তুললে তাদের উপর নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন আর নিপিড়ন। ক্ষেত্র বিশেষে তাদের সঙ্গে করা হয় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, লাঠি দিয়ে শারীরিক নির্যাতন। ইতোমধ্যে, তাদের রিয়াদ অফিসের একটি অমানবিক নির্যাতনের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
যে ভিডিওতে দেখা যায়, তার অফিসের ম্যানেজার আকরাম শেখ ও একজন অফিস সহকারী কয়েকজন প্রবাসীকে বেধড়ক মারপিট ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছেন। আর এই সব কিছুর একচ্ছত্র সহযোগিতা করে গেছেন সাবেক ডিবি প্রধান। এক পর্যায়ে সুজন ইব্রাহিম এই কর্মকাণ্ডের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষমা চাওয়ার নাটক সাজিয়ে মানুষের মন জয় করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বন্ধ হয় না সুজন ইব্রাহিমের অত্যাচারের মাত্রা। যার প্রমাণ মেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা কয়েকটি পোস্টে। সেখানে রয়েছে হাজার হাজার সৌদি প্রবাসীদের করা বিভিন্ন নির্যাতন ও প্রতারণার অভিযোগ ও বর্ণানা।
সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্যাতিতদের কমেন্টস এড়াতে সুজন ইব্রাহিম তার দীর্ঘদিনের ফেসবুক আইডিটি ডিএকটিভ করে দেন। প্রবাসী নিরীহ শ্রমিকদের রক্ত চুষে অর্থবিত্তের মালিক হওয়া সুজন ইব্রাহিম ফ্যাসিবাদ আওয়ামী সরকারের বিশেষ সহযোগী ছিলেন বলেও সূত্র মতে জানা যায়।
জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা পেতে গোপালগঞ্জের মানুষের প্রতি ছিল তার বিশেষ আস্তা। যে কারণেই তার অফিসের ম্যানেজার আকরাম শেখ ও অফিসের কর্মকর্তা হাদিউজ্জামান হাদী উভয়েই গোপালগঞ্জের উলিপুরের বাসিন্দা। আরাব খানের সাথে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় সুজন ইব্রাহিম হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। সুজন ইব্রাহিম এর দুবাই কেন্দ্রিক রিয়েল এস্টেট ব্যবসার অন্যতম বিনিয়োগকারী ছিল সাবেক ডিবি প্রধান হারুন। সাবেক ডিবি প্রধানসহ দেশের বেশ কিছু এমপি মন্ত্রীদের কালো টাকা সাদা করার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে সুজন ইব্রাহিম।তার সিআইপি পুরস্কার পাওয়ার ক্ষেত্রেও হারুনের বিশেষ অবদান ছিল বলে জানা যায়।
করিমগঞ্জে একাধিক লোকজন বলছে, টিকটকে আরাব খানের সাথে বিশেষ বিশেষ মুহূর্তের ভিডিও ছেড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে আলাদাভাবে পরিচিত করে তোলার ক্ষেত্রে তিনি সবসময় সরব ছিলেন। একজন মাজার পূজারী ও প্রবাসী শ্রমিকদের রক্ত চুষে সম্পদের পাহাড় গড়ে কিভাবে সিআইপির মর্যাদা পেতে পারে সে বিষয়ে সঠিক তদন্তের দাবি তুলেছেন স্থানীয় লোকজন।