নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে ২নং তারাছা ইউনিয়নের বেতছড়া স্কুল এন্ড কলেজের পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে অভিভাবকদের নিয়ে বেতছড়া বাজার এলাকায় ছাত্রাবাস প্রাঙ্গণে সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) আয়োজিত আলোচনা সভার অনুষ্ঠানে বেতছড়া স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য মেওফা পাড়া কারবারী মংছো মারমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান কারবারী-হেডম্যান কল্যাণ পরিষদের সভাপতি ও ৩১৬নং বেতছাড়া মৌজা হেডম্যান হ্লাথোয়াইহ্রী মারমা।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেতছড়া স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য ও ইউপি সদস্য উমংসিং মারমা, বেতছড়া পাড়া কারবারী ফোসিংঅং মারমা, উক্যচিং মারমা, বেতছড়া স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক উশৈনু মারমা,সহকারী শিক্ষক এসাইনু মারমা।
উন্মুক্ত আলোচনা সভায় অভিভাবকগণ বক্তব্যে বলেন, বেতছড়া স্কুল এন্ড কলেজ স্থাপিত হওয়ার পর থেকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে না পারাই স্কুলে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সমস্যা পোহাতে হয়েছে। প্রায় দীর্ঘ দিন যাবত স্কুল এন্ড কলেজটি বন্ধ ছিল। তাই আগামীতে যেন এধরণে সমস্যা পোহাতে না হয় অভিভাবকগণসহ পরিচালনা কমিটির সকল সদস্যাগণ যার যার দায়িত্ব পালন করা ও সার্বিক সহযোগিতা করা উচিত। পুনরায় পাঠদানে কার্যক্রম ব্যাহত হলে শুধু শিক্ষার্থীর নয়, শিক্ষার্থীদের মা ও বাবাসহ সবাই এসব ঝামেলা মধ্যে পড়তে পারে। এর পাশাপাশি অভিভাবকগণ কর্মরত শিক্ষকদের বেতন ভাতাদি ঠিক সময়ে যেন দিতে পারে নিজেদের স্ব-উদ্যোগে প্রতিশ্রুতি প্রদানকৃত মাসিক চাউল ও নগদ অর্থে কমিটি সিদ্ধান্ত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জমাদানে উপস্থিত সকলকে অনুরোধ করেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হ্লাথোয়াইহ্রী মারমা বলেন, বেতছড়া স্কুল এন্ড কলেজ ১৯৯২ সাল থেকে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় বেতছড়া স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা করলেও আর্থিক সমস্যার কারণে মাঝখানের অনেক বছর বন্ধ ছিল। এলাকার ঝরেপড়া শিক্ষর্থীদের শিক্ষা আলোর সুবিধা পেতে আমরা পুনরায় উদ্যোগ নিয়ে নতুন কমিটি গঠন করে গত বছর থেকে পাঠদান কার্যক্রম চালু করা চেষ্টা করেছি। এখন ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৭৫জন আছে। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় পুরাতন স্কুল ভবনকে ছাত্রাবাস হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। সেখানে ছাত্র ও ছাত্রী সংখ্যা প্রায় ৫৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। সে ছাত্রবাস থেকে পড়ালেখা করতে সুযোগ পাচ্ছে। তাছাড়া কর্মরত শিক্ষকরা ও শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সেখানে অবস্থান করে আছে। নির্দিষ্টভাবে পাঠদানে উপযুক্ত স্কুল না থাকায় অস্থায়ী হিসেবে ২নং তারাছা ইউনিয়ন পরিষদে পাঠদান কার্যক্রম চলছে।
তিনি আরো বলেন, এলাকারবাসীদের সহযোগিতায় আমার প্রাপ্ত পিতৃত্ব সম্পদ জায়গা বর্তমানে আমার নামীয় নামজারীভুক্ত জমি থেকে ১.০০ (এক একর) বেতছড়া স্কুল এন্ড কলেজের নামে দান করে দিয়েছি। সে দানকৃত জমিতে বাঁশের বেড়া দিয়ে বেতছড়া স্কুল এন্ড কলেজের অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। বেতছড়া স্কুল এন্ড কলেজ অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পরো সেখানে এলাকার স্থানীয় কয়েকজন নিজেদের জায়গা দাবি করে নতুন নির্মিত স্কুলটিকে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। তাই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালাতে জটিলতার মধ্যে পড়ে গেছে। শুধু তাই নয়, এসব বিষয় নিয়ে আমার নামে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম অনলঅইন পোর্টাল ও প্রিন্ট পত্রিকায় স্কুল ভবন দখল করেছে বলে মিথ্যাচার সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু সে সব খবর সত্য নয়। মূলত বর্তমানে ছাত্রাবাসে জমিটি আমার কেনা জায়গা। যারা মিডিয়াতে কাজ করেন, তারা যদি একটু সরেজমিনে এসে সংবাদ প্রচার করলে ভাল হতো। জমি সংক্রান্ত ব্যাপারে সমাধান না হওয়ার পর্যন্ত পাঠদান কার্যক্রম একটু সমস্যা মধ্যে হতে পারে। তবে ব্যাপারে সুষ্ঠু সমাধান পেতে রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে দরখাস্ত করা হয়েছে। আশানুরূপ ফলাফল পেতে পারি বলে অভিভাবকদের আলোচনা সভায় এসব আশ্বাস ব্যক্ত করেন তিনি। এসময় আলোচনা সভায় অর্ধশতাধিক অভিভাবকগণ উপস্থিত ছিলেন।