শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ০৭:০১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
জিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা: রাজনীতিতে সক্রিয় প্রত্যাবর্তনের ঘোষণা দিলেন ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন রুমায় কৃষকের বসত বাড়িতে আগুন, সব পুড়ে ছাই বান্দরবানে পৃথক অভিযানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৬ নেতা আটক দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবকদল সদস্যসচিব আশরাফুল ফরহাদ-কে অব্যহতি সেনাবাহিনীর সহায়তায় ২ বছর পর ঘরে ফিরল বম পরিবার নারীদের জন্য নিরাপদ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে: ড. হামিদুর রহমান আজাদ থানচিতে খেয়াং নারীর মৃত্যুকে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ চিংমা খেয়াং হত্যাকান্ডের সঠিক বিচারের দাবীতে বান্দরবানে বিক্ষোভ বান্দরবানে পাহাড় থেকে খেয়াং নারীর লাশ উদ্ধার নাইক্ষ্যংছড়ি’র ঘুমধুম সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে এক যুবক আহত।
বিজ্ঞপ্তি
paharkantho.com আপনাকে স্বাগতম 🤗...

নির্ঘুম এক বধূর ২০ রাত

এস এম নাসিম
  • প্রকাশিতঃ সোমবার, ২৯ জুন, ২০২০
  • ৩১৮০৮ জন নিউজটি পড়েছেন

স্বামী করোনায় আক্রান্ত তাই চোখে ঘুম নেই বধূর। স্বামীর সেবাই নির্ঘুম রাত কাটিয়ে সে। কখনো কাছে বসে, কখনো জায়-নামাজে কেটেছে সময়। প্রভুর দরবারে হাত উঠেছে বার বার, চাওয়া শুধু একটায় সুস্থ করে দাও প্রভু আমার জীবন সঙ্গীকে।

বলছিলাম ডেল্টা টাইমস পত্রিকার চিফ রিপোর্টার মো.শফিকুল ইসলাম ভাই এর স্ত্রী জবেদা খাতুনের কথা।

বিশ্বের সব খবর পত্রে একই সংবাদ শোনায় চারিদিকে মৃত্যুর মিছিল। এ মিছিল যেন থামবার নয়। দিনে দিনে মৃত্যুর মিছিল যে ভাবে বড় হচ্ছে তেমনি নিষ্ঠুর হচ্ছে মানুষের মন। এ এক আজব অসুখ, কেউ সহযোগিতায় এগিয়ে আসে না, সবাই মুখ ফিরিয়ে নেয়। সমাজের মানুষের আচরণ খুব নিষ্ঠুর হয়ে উঠেছে, আক্রান্ত পরিবারের লোকেরা যেন মহাপাপী। তাদের কাছে যাওয়া যাবে না, ছোঁয়া যাবে না। সব পথই বন্ধ, বিশাল পৃথিবী সংকীর্ণ হয়ে আসে তার কাছে। পরিবারের সদস্যদের অবস্থা তো ব্যাখ্যা করা কঠিন। চোখের সামনে প্রিয় মানুষটি ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি এই বধূ।

সে ভাবছে-বেচে থেকে লাভ কি যদি হয় সঙ্গীহারা, এখন তো শুধু সিধান্তের পালা। তিনি সিধান্ত নিলেনও বটে তবে কঠিন সিধান্ত। বাঁচলে এক সাথে আর মরলেও এক সাথে মরবো।

জবেদা খাতুন আমার দেখা কয়েক জন ভাল মানুষের মধ্য অন্যতম। আল্লাহ প্রতি যেমন তার বিশ্বাস, রাসুলের প্রেমও তিনি অবিচল। একজন বিচক্ষণ মানুষ তিনি । স্বামী করোনায় আক্রান্তের খবর শুনলে প্রতিবেশীরা ভয় পাবে সে কারণে কাউ কে কিছু জানান নি তিনি। পাশের ফ্লাটের সামিয়া খুব কাছের মানুষ, সে সন্তান সম্ভব্য। এই খবর শুনলে সে কাঁদবে, কষ্ট পাবে তাই তাকে জানান নি।

মাঝে মাঝে জবেদা খাতুন অনুভব করেছে- কেউ যেন তার হাত মুখ বেধে রেখেছে। কখনো কখনো নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসতো। নিজেকে অনেক অসহয় মনে হতো । কিন্তু হাল ছাড়েন নি জবেদা। তিনি মানুষিক ভাবে কখনো কোনভাবেই দুর্বল হননি, আত্মবিশ্বাস তাকে অনেক শক্তি যুগিয়েছে। যে ভাবেই হোক স্বামীকে সুস্থ করে তুলতেই হবে। হেরে গেলে চলবে না, তাকে জিততেই হবে।

২৪ ঘণ্টা স্বামীর পাশে থেকে স্বামী সেবা করেছেন। কোন অবহেলা করেননি। ভয়ও পাননি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সে সেবা করেছে। সাহস দিয়েছে। করোনা-কালীন সময়ে গোসলের পানি গরম করা, গরম পানির ভাপ নেওয়াতে সহযোগিতা করা, মালটা আর লেবুর শরবত খাওয়ানো। আদা, এলাচ, হলুদ, তেজপাতা আর দারুচিনি গরম পানিতে জ্বাল দিয়ে ভাপ নেওয়া পরে চা তৈরি করা । সকাল-বিকেল রুমের মধ্যে হালকা ব্যায়ামের সময় পাশে থাকা কোনটি কমতি করেন নি তিনি। টানা ২০ দিন নিঘুম রাত জেগে স্বামীর সেবা করেছে।

অবশেষে, জিতে গেছে জাবেদা খাতুন,পেয়েছে খোদার রহমত, সুস্থ হয়েছে স্বামী, হেরে গেছে করোনা। জীবনের এই কঠিন সময়ে যারা তার পাশে ছিলেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম বলেছেন, এখানে বিশেষ করে বলা উচিত আমার স্ত্রী ২৪ ঘণ্টা আমার পাশে থেকে আমার সেবা করেছেন। কোন অবহেলা করেননি। ভয়ও পাননি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সে আমার সেবা করেছে। আমাকে সাহস দিয়েছে। আমার এত পাশে থেকেও করোনায় আক্রান্ত হননি ।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আর নিউজ
© All rights reserved ©paharkantho.com-২০১৭-২০২১
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD
themesba-lates1749691102
error: Content is protected !!