শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ০৩:৫১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
জিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা: রাজনীতিতে সক্রিয় প্রত্যাবর্তনের ঘোষণা দিলেন ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন রুমায় কৃষকের বসত বাড়িতে আগুন, সব পুড়ে ছাই বান্দরবানে পৃথক অভিযানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৬ নেতা আটক দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবকদল সদস্যসচিব আশরাফুল ফরহাদ-কে অব্যহতি সেনাবাহিনীর সহায়তায় ২ বছর পর ঘরে ফিরল বম পরিবার নারীদের জন্য নিরাপদ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে: ড. হামিদুর রহমান আজাদ থানচিতে খেয়াং নারীর মৃত্যুকে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ চিংমা খেয়াং হত্যাকান্ডের সঠিক বিচারের দাবীতে বান্দরবানে বিক্ষোভ বান্দরবানে পাহাড় থেকে খেয়াং নারীর লাশ উদ্ধার নাইক্ষ্যংছড়ি’র ঘুমধুম সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে এক যুবক আহত।
বিজ্ঞপ্তি
paharkantho.com আপনাকে স্বাগতম 🤗...

হারিকেনের ইতি কথা

এস এম নাসিম
  • প্রকাশিতঃ শুক্রবার, ২৬ জুন, ২০২০
  • ৩১৫৮৩ জন নিউজটি পড়েছেন

বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা আর নিত্য নতুন আবিষ্কারের ফলে মানুষের জীবনের সাথে যেমন অতি-গুরুত্বপূর্ণ জিনিস যুক্ত হয়েছে তেমনি হারিয়েছে অনেক ঐতিহ্য। অল্প কিছুদিন আগেই গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য থেকে বিদায় নিয়েছে ঢেঁকি, পালকি, ঘোড়া গাড়ী । ধীরে ধীরে নীরবে-নিঃশব্দে বিদায় নেওয়ার পথে লাঙ্গল, জোয়াল, মই গরুর গাড়িসহ পায়ে চাপা পানির কল। সে গুলোর স্থানে দুর্দান্ত দাপটের সাথে রাজত্ব করছে আজকের আধুনিক বিজ্ঞানের আবিষ্কার।

আগামী প্রজন্মের কাছে হারিয়ে যাওয়া সেই ঐতিহ্য নিছক কিচ্ছা-কাহিনী মতো শুনতে হবে। অথবা বার্ষিক ক্যালেন্ডারের ছবিতে সেই হারানো গৌরবময় ইতিহাস জাতির কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করবে।

আমার দেখা, আমাদের অস্তিত্ব ও সংস্কৃতির সাথে ওতপ্রোতভাবে মিশে থাকা চিরচেনা এ গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রীর মধ্যে অন্যতম হলো হারিকেন,কুপিবাতি। যা আজ হারানোর পথে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চালে এর ভিন্ন নাম আছে। আমাদের এলাকায় কুপিবাতিকে ‘ল্যাম্প’ বলা হতো।

প্রথমে কুপিবাতি বা ‘ল্যাম্প’ কথা বলি,‘ল্যাম্প’ হলো একটা টিনের কৌটা। আকার অনেকটা গোলাকার ছোট ও চ্যাপ্টা। পিতল ও সিলভারের তৈরি কুপিবাতি দেখতে ছিলো খুবই সুন্দর ও শৈল্পিক। পিতল ও সিলভারের তৈরি ভিন্ন ডিজাইনের এসব কুপিবাতি হাটবাজারে পাওয়া যেত অহরহ।

এবার আসি হারিকেনের কাছে। হারিকেন কবে থেকে প্রচলন হয়েছিল তা সঠিক বলা যায় না । মোগল শাসনের বহু আগে থেকে এর প্রচলন শুরু হয়। তবে ডাক বিভাগের মনোগ্রামে রানার হাতে হারিকেন দেখে সহজে অনুমান করা যায় প্রাচীন কাল থেকেই এর ব্যবহার শুরু।

আধুনিক বৈদ্যুতিক বাতির যুগে হারিকেন নিজেকে বড় বেমানান মনে করে। এখন থেকে মাত্র ১০-১৫ বছর আগে গ্রাম বাংলার প্রায় ঘরে জ্বলতো হারিকেনের আলো। সন্ধ্যা আসার আগেই সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়তো আলো জ্বালানোর জন্য। ছোট বেলায় পড়ার জন্য হারিকেনই ছিলো একমাত্র আলোর উৎস। অ, আ, ক, খ বণর্মালার সুর ছন্দে আলো আঁধারির এক মজার দৃশ্য ফুটে উঠতো আমাদের উঠানে।

রাতের বেলা এ বাড়ি ও বাড়ি কোথাও বেড়াতে গেলে তাদের আলোয় পথ দেখাতো হারিকেন। এ ছাড়াও গ্রামের প্রতিটি দোকানে সন্ধ্যা-রাতের প্রদীপ হিসেবে হারিকেনের কদর ছিলো অনন্য। এক কথায় হারিকেন আর কুপিবাতি-ই ছিলো আমাদের আঁধার রাতের সঙ্গী।

হারিকেনের একচেটিয়া দাপট আজ আর নেই তবুও আজো নৌকা কিংবা জাহাজে হারিকেনের ব্যবহার উল্লেখ করার মতো। উত্তাল সাগর কিংবা নদীতে মিটিমিটি আলোর ঝলকানি চোখে পড়ার মতো। ডিঙির খুঁটির আগায় কিংবা ঘোমটি নায়ের ভেতর হারিকেনের সমাদর এতটুকুও কমেনি। এখনো রাতের বেলা নদীর দিকে তাকালে দেখা যায় হারিকেনের মিটিমিটি আলো জ্বলছে। তা ছাড়া রিকশার পেছনে আজও হারিকেনের ব্যবহার সবার দৃষ্টি কাড়ে।

আজ গোটা বিশ্ব মানুষ তার হাতের মুঠোয় নিয়েছে। হাজার মাইল পথ তারা এখন সেকেন্ডেই পাড়ি দিতে শিখেছে। বিজ্ঞানের এ যুগে বাংলার ঐতিহ্য হারিকেন আর কুপিবাতি যে হারিয়ে যাবে এটাই যৌক্তিক বাস্তবতা। তারপরও আমাদের ঐতিহ্য হেলায় ফেলে দেবো না, যত্ন সহকারে লালন করবো। সংরক্ষণ করবো। যাতে করে নতুন প্রজন্ম আমাদের কাছ থেকে আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য জানবে, শুনবে এবং দেখবে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আর নিউজ
© All rights reserved ©paharkantho.com-২০১৭-২০২১
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: JPHOSTBD
themesba-lates1749691102
error: Content is protected !!