১৭৯৩ থেকে ২০১৯ সাল দির্ঘ ২২৬ বছরের ইতিহাস গ্রাম পুলিশের। বেতন বিহীন সরকারের কাজ করলেও বেতন পেতেন না সরকারি কর্মচারীদের নিয়মে।
রাতদিন কর্তব্য পালনে নিয়োজিত থেকে ৬ হাজার টাকা সম্মানী পেতেন,যার অর্ধেক বহন করতো ইউনিয়ন পরিষদ। সামাজিক কোনো অবস্থান ছিল না তাদের,একরকম দাসত্বের শৃঙ্খলে জড়িয়ে ছিলেন এই গ্রাম পুলিশ পেশা।
অবশেষে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে মর্যাদা পেলেন গ্রাম পুলিশ তথা ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার ও মহল্লাদার’রা সর্বশেষ সরকারি বেতন কাঠামো অনুযায়ী বেতন পাবেন তারা ২০ হাজার টাকার বেশি,থাকছে পেনশন সুবিধা।
প্রতিটি ইউনিয়নে মোট নয়জন করে দেশে মোট দফাদার ও মহল্লাদার রয়েছেন ৪৭ হাজার। হাইকোর্টের এক রায়ে তাদের দাসত্ব ঘুচল। তাদের হয়ে আইনি লড়াই করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব। ঢাকা টাইমসের সঙ্গে একান্ত আলাপে তিনি তুলে ধরেছেন গ্রামপুলিশের ২২৬ বছরের বঞ্চনার ইতি টানার লড়াইয়ের গল্প।
১৭ ডিসেম্বর বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আদালত বলেছেন, ২০২০ সালের ১৭ মার্চ মুজিববর্ষ শুরু হওয়ার আগেই নির্দেশ অনুসারে গ্রামপুলিশের বেতন-ভাতা পরিশোধ করে আদালতে হলফনামা দিতে হবে। স্থানীয় সরকার সচিবের প্রতি এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, গ্রামপুলিশ সদষ্যদের অবসর ভাতা দেয়ার ক্ষেত্রে নিজ নিজ যোগদানের তারিখ থেকে এই ভাতা গণনা শুরু করতে হবে।
২০০৮ সালে গ্রামপুলিশের সদস্যদের জাতীয় বেতন স্কেলের চতুর্থ শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়ার প্রেক্ষাপটে ২০১৭ সালে লাল মিয়াসহ ৩৫৫ জন গ্রামপুলিশ সদস্য হাইকোর্টে একটি রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ৩ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। এতে ২০০৮ সালের সিদ্ধান্ত অনুসারে গ্রামপুলিশ সদস্যদের চতুর্থ শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্তির নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রায় ঘোষণা করে আদালত।
রায়ের বিষয়টি জানিয়ে আইনজীবী হুমায়ূন কবির সাংবাদিকদের বলেন, ৩৫৫ জন রিট করলেও সারা দেশে ৪৭ হাজার গ্রামপুলিশ সদস্য রয়েছেন। রিট আবেদনকারীসহ সবাই এসব সুবিধা পাবেন। ১৯তম গ্রেডে দফাদাররা পাবেন সর্বসাকুল্যে ২০ হাজার ৫৭০ টাকা। আর ২০তম গ্রেডে মহল্লাদারদের সব মিলে বেতন হবে ২০ হাজার ১০ টাকা।